সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দাগী অপরাধীরাও এবার থেকে ভোটে দাঁড়াতে পারবে। রাজনীতিতে অপরাধীদের আগমনে আর কোনও বাধা রইল না। এক্ষেত্রে কোনওরকম হস্তক্ষেপে নারাজ দেশের শীর্ষ আদালত। উলটে অপরাধীদের রাজনীতিতে প্রবেশে আটকাতে সংসদকেই আইন তৈরির পরামর্শ দিয়েছে প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ। সুতরাং দেশের নির্বাচনী কার্যক্রমে অপরাধীদের আটকাতে সংসদকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
মঙ্গলবারই অপরাধীদের রাজনীতিতে প্রবেশ সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। রায় দানের সময় সাংবিধানিক বেঞ্চের তরফে জানানো হয়, অপরাধীদের ভোটে দাঁড়ানোর বিষয়টিতে সুপ্রিম কোর্ট কোনওরকমের হস্তক্ষেপ করবে না। এটি দেখার দায়ভার সংসদের। এমনিতেই রাজনীতিতে অপরাধীদের প্রবেশ দুর্ভাগ্যজনক। অপরাধীরা যদি ভোটে জিতে বিধায়ক, সাংসদ হয়ে যায়, তাহলে সমূহ বিপদ। কেননা সাংবিধানিক ক্ষমতার বলে সেই অপরাধীরাই আইন প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। এর জেরে দেশের সাংবিধানিক স্বার্থ বিপর্যস্ত হতে পারে। সাংবিধানিক স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হলে দেশবাসীও নিরাপদে থাকবে না। তাই রাজনীতিতে অপরাধীদের প্রবেশ আটকাতে সংসদের উচিত যথাযথ আইন প্রণয়ন করা। সেই আইনই একমাত্র অপরাধীদের রুখতে পারে। তাছাড়া অপরাধীরা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নিলেই কেউ না কেউ জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার বিচার চলে দীর্ঘদিন ধরে। এমনিতেই শীর্ষ আদালতের বকেয়া মামলার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তারসঙ্গে যদি এই অপরাধীদের রাজনীতির অঙ্গনে প্রবেশ সংক্রান্ত মামলা জুড়ে যায়, তাহলে আদালতের সময় নষ্ট হবে। যেটা এতদিন হয়ে এসেছে। তাই এই ধরনের বিড়ম্বনা এবার সংসদকেই মেটাতে হবে।
উল্লেখ্য, আইন প্রণয়নের পাশাপাশি সংসদকে আরও কিছু পরামর্শ দিয়েছে বিচারপতিদের ডিভিশন বেঞ্চ। বলা হয়েছে, অপরাধীদের রাজনীতিতে প্রবেশ দুর্ভাগ্যজনক। তবে তারপরেও যদি দাগী অপরাধীকে কোন রাজনৈতিক দল প্রার্থী করে তাহলে সংশ্লিষ্টে রাজনৈতিক দলের ওয়েবসাইটে সেই ব্যক্তির অপরাধনামার যাবতীয় তথ্য দিতে হবে। জনগণকে জানাতে হবে, ঠিক কী কী অভিযোগ রয়েছে ওই অপরাধীর বিরুদ্ধে। কোন কোন অপরাধের সাজা ভোগ করে ফেলেছে, তার তালিকা দিতে হবে। এমনকী, ভোটের আগেভাগে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে অপরাধীকে প্রার্থী করার বিষয়টি জানাতে বাধ্য থাকবে ওই রাজনৈতিক দল। শুধু তাই নয়, মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় ওই অপরাধী নিজে তার সম্পর্কে যাবতীয় লিখিত তথ্যের মধ্যে অপরাধের প্রসঙ্গ অবশ্যই লিখবে। অপরাধ ও সাজার বিষয়গুলি মোটা হরফে লিখতে হবে। যাতে জুরি মেম্বাররা মনোনয়নপত্র হাতে নিতেই অপরাধের তালিকা, কারণ ও সাজার প্রসঙ্গ দেখতে পান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.