সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বেচ্ছামৃত্যু সংক্রান্ত মামলায় ঐতিহাসিক রায়। শর্তসাপেক্ষে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তির স্বেচ্ছায় প্রাণত্যাগের অধিকারকে স্বীকৃতি দিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চের বক্তব্য, সম্মানজনক মৃত্যু প্রতিটি মানুষের অধিকার। ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনও ব্যক্তিকে কৃত্রিমভাবে বাঁচিয়ে রেখে সেই অধিকার খর্ব করা যাবে না। শুধু তাই নয়, স্বেচ্ছামৃত্যু নিয়ে আইন প্রণয়ণ না হওয়া পর্যন্ত গাইডলাইনও তৈরি করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
[মধ্যরাতে রাসায়নিক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, আহত ১৪]
সেরে ওঠার আর কোনও সম্ভাবনা নেই। মৃত্যু শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু, যতক্ষণ রোগীর হৃদপিণ্ডটি সচল থাকে, ততক্ষণে চিকিৎসা বন্ধ করা যায় না। রীতিই বলুন কিংবা আইন, এদেশের এটাই দস্তুর। কিন্তু, এমন তো হতেই পারে, যে রোগী নিজে এভাবে জীবন্মৃত অবস্থায় বেঁচে থাকতে চাইছেন না কিংবা প্রিয় মানুষটিকে ‘জোর করে’ বাঁচিয়ে রাখায় সায় নেই পরিবারের লোকেদেরও। সেক্ষেত্রে রোগী নিজেই যদি সুস্থ অবস্থায় ইচ্ছের কথা জানিয়ে দেন, তাহলে ভাল। অন্যথায় পরিবারের লোকের ইচ্ছাতেও কী মৃত্যুপথযাত্রীকে লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম থেকে বের করে আনা যায়? সোজা কথায় মৃত্যুযন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে কাউকে কি জেনেবুঝে মেরে ফেলা যায়? এই প্রশ্ন ঘিরেই যত বিতর্ক। কারও মতে, জীবন দেওয়ার ক্ষমতায় যখন মানুষের নেই, তাহলে নিজের ইচ্ছায় কীভাবে কেউ জীবনকে শেষ করতে দিতে পারে? অপর পক্ষের যুক্তি, জীবন যখন মানুষেরই, তখন স্বেচ্ছায় সেই জীবন থেকে মুক্তির অধিকারই বা থাকবে না কেন? কিন্তু, ঘটনা হল, পশ্চিমী দুনিয়ার বহু দেশেই স্বেচ্ছামৃত্যুর অধিকার আইনের স্বীকৃতি পেয়েছে।
[দেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী মহিলা রাজনীতিবিদ সুষমা, অনেক পিছনে সোনিয়া]
এদেশে স্বেচ্ছামৃত্যু নিয়ে বিতর্ক সূত্রপাত বছর সাতেক আগে। মুম্বইয়ে একটি হাসপাতালের নার্স ছিলেন অরুণা শানবাগ। ১৯৭৩ সালে সেই হাসপাতালেরই এক কর্মীর হাতে ধর্ষিত হন তিনি। ৪২ বছর ধরে হাসপাতালে কোমায় ছিলেন তিনি। ২০১১ সালে অরুণা শানবাগের হয়ে সুপ্রিম কোর্ট স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করেছিলেন সাংবাদিক পিংকি ভিরানি। তখন অবশ্য সেই আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছিল। ২০১৫ সালে মারা যান অরুণা শানবাগ। তখনের মতো স্বেচ্ছামৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়। সম্প্রতি মানুষের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার অধিকারের স্বীকৃতি দাবি জানিয়ে ফের সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। মামলাটি শুনানি চলছিল প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চে। শুক্রবার এক ঐতিহাসিক রায়ে শর্তসাপেক্ষে স্বেচ্ছামৃত্যুর অধিকারকে স্বীকৃতি দিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছে, সম্মানজনক মৃত্যু প্রতিটি মানুষের অধিকার। ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনও ব্যক্তিকে কৃত্রিমভাবে বাঁচিয়ে রেখে সেই অধিকার খর্ব করা যাবে না। স্বেচ্ছামৃত্যু নিয়ে একটি গাইডলাইন দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সাংবিধানিক বেঞ্চের নির্দেশ, আইন প্রণয়ণ না হওয়া পর্যন্ত জারি থাকবে এই গাইডলাইন।
[‘ছেলেরা পরনের জিনসই সামলাতে পারে না, বোনকে কী করে রক্ষা করবে?’]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.