সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বম্বে হাই কোর্টের ‘ত্বকস্পর্শ’ রায় নিয়ে দেশজুড়ে চলছে বিতর্ক। তার মধ্যেই কোনও নাবালিকার হাত ধরা কিংবা প্যান্টের চেন খোলা পকসো আইনে যৌন নির্যাতন নয় বলে রায় দিয়ে আগুনে ঘৃতাহুতি দিয়েছে বিচারপতি পুষ্পা গানেদিওয়ালার সিঙ্গল বেঞ্চ। এহেন পরিস্থিতিতে বিচারপতির হিসেবে গানেদিওয়ালার স্থায়ী নিয়োগ আটকে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট বলে সূত্রের খবর। শীর্ষ আদালত মনে করছে তাঁর আরও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন।
এক আন্তর্জাতিক বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে পুষ্পা গানেদিওয়ালার নিয়োগের সুপারিশ করেছিল সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম। কিন্তু নাবালিকার যৌন হেনস্তার দু’টি মামলায় পরপর বিতর্কিত রায় দিয়ে আপাতত কাঠগড়ায় তিনি। এর ফলে গানেদিওয়ালার স্থায়ী নিয়োগের সুপারিশ ফিরিয়ে নিয়েছে শীর্ষ আদালত। সূত্রের খবর, কলেজিয়াম মনে করছে এহেন মামলা সামলাতে আর প্রশিক্ষণের দরকার রয়েছে বম্বে হাই কোর্টের ওই বিচারপতির। নিয়মমাফিক, আদালতে স্থায়ী বিচারপতি নিয়োগ বা বিচারপতিদের স্থায়ী আসন দিতে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের নাম কেন্দ্রের কাছে পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট। তাতে সিলমোহর দেয় সরকার। অনেক সময় প্রার্থীদের বিষয়ে অতিরিক্ত তথ্য চেয়ে সেই তালিকা কলেজিয়ামের কাছে ফেরত পাঠায় কেন্দ্র।
উল্লেখ্য, বম্বে হাই কোর্টের (Bombay High Court) ‘ত্বকস্পর্শ’ রায় নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই সামনে আসে শিশুদের উপরে হওয়া যৌন নির্যাতন নিয়ে আদালতের আরেক মন্তব্য। নাগপুর বেঞ্চের বিচারপতি পুষ্পা গানেদিওয়ালার সিঙ্গল বেঞ্চ জানায়, কোনও নাবালিকার হাত ধরা কিংবা প্যান্টের চেন খোলা পকসো আইনে যৌন নির্যাতন (Sexual crime) নয়। তবে তা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ধারা অনুযায়ী অবশ্যই যৌন অপরাধ। এক ৫ বছরের শিশুর উপরে হওয়া যৌন অপরাধের মামলায় এই রায় দেয় আদালত। `
এই মামলায় অভিযুক্ত ৫০ বছরের এক ব্যক্তি। নিম্ন আদালতে তার অপরাধকে পকসো আইনের ১০ ধারায় যৌন নির্যাতন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা হয়েছে অভিযুক্তর। নির্যাতিতার মায়ের অভিযোগ, অভিযুক্তর প্যান্টের চেন খোলা ছিল। সে মেয়েটির হাতও ধরেছিল। মামলার শুনানির সময় বম্বে হাই কোর্ট যৌন নিপীড়নের সংজ্ঞায় ‘শারীরিক সম্পর্ক’ শব্দটির ব্যাখ্যা করার সময় জানিয়েছে, প্রত্যক্ষ শারীরিক সম্পর্ক অর্থাৎ যৌনাঙ্গ অনুপ্রবেশ ছাড়াই ‘স্কিন টু স্কিন’ সংস্পর্শ।আদালতের নাগপুর বেঞ্চের বিচারপতি পুষ্পা গানেদিওয়ালা আরও জানিয়েছেন, যেহেতু এই মামলাটি ৩৫৪এ(১) ধারায় পড়ছে, তাই পকসো আইনের ৮, ১০ ও ১২ ধারায় সাজা দান রদ করা হল।
এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি এই বেঞ্চেরই একটি রায় নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছিল। আদালত জানিয়েছিল, পোশাকের উপর দিয়ে নাবালিকার স্তনে হাত দিলে পকসো আইনের আওতায় তা যৌননিগ্রহ হিসেবে গ্রাহ্য হবে না। যৌনতামূলক কার্যকলাপের অভিপ্রায়ে ত্বকের সঙ্গে ত্বকের সংস্পর্শ হলে, তবেই তা যৌন নিগ্রহ হিসেবে গণ্য হবে। পকসো আইনের ৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী এই রায় দেওয়া হয়। বুধবার সেই রায়ে স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.