সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) ধাক্কা পতঞ্জলির। বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন তৈরি করা যাবে না। ভুয়ো তথ্য দেওয়া বিজ্ঞাপন তৈরি করলে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা ভুগতে হবে। পতঞ্জলিকে এই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। আধুনিক ওষুধ ও চিকিৎসা পদ্ধতির বিরোধিতা করে বিজ্ঞাপন তৈরির অভিযোগ যোগগুরু রামদেবের মালিকানাধীন সংস্থার বিরুদ্ধে। সেই মামলার শুনানি চলাকালীনই এই নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। উল্লেখ্য, পতঞ্জলির (Patanjali) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন।
আধুনিক ওষুধের বিরোধিতা করে ভুল তথ্য দিয়ে বিজ্ঞাপন তৈরি করছে পতঞ্জলি, এই মর্মে মামলা দায়ের করে আইএমএ। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানি ছিল। সেই সময়েই পতঞ্জলির বিজ্ঞাপনগুলোকে কড়া ভাষায় তিরস্কার করে শীর্ষ আদালত। সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, বিভ্রান্তিকর বা ভুয়ো তথ্য নিয়ে বিজ্ঞাপন তৈরি করা যাবে না। যদি আগামী দিনে এমন বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয় তাহলে বড়সড় জরিমানার মুখে পড়বে পতঞ্জলি। বিজ্ঞাপনপিছু ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যেতে পারে। মেডিক্যাল ক্ষেত্রে ভুয়ো বিজ্ঞাপন বন্ধ করা নিয়ে কেন্দ্রের প্রস্তাবও জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
উল্লেখ্য, রামদেবের (Baba Ramdev) বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা ঝুলছে সুপ্রিম কোর্টে। কোভিড অতিমারীর সময়ে করোনার চিকিৎসায় অ্যালোপ্যাথির ব্যবহার নিয়ে একাধিক নেতিবাচক মন্তব্য করেছিলেন যোগগুরু। চিকিৎসকদেরও তোপ দাগেন তিনি। তার পরেই একাধিক রাজ্যে এফআইআর দায়ের করে আইএমএফ। সমস্ত অভিযোগের তদন্তে স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন যোগগুরু। সেই তদন্ত চলাকালীনই পতঞ্জলির বিজ্ঞাপন নিয়ে অস্বস্তি বাড়ল তাঁর।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের কাছে ধমক খাওয়ার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই এই বিষয়ে মুখ খুলেছে পতঞ্জলি। নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে সংস্থার দুই মুখ যোগগুরু রামদেব এবং আচার্য বালকৃষ্ণ জানিয়েছেন, তাঁরা কখনওই বিজ্ঞান বা চিকিৎসাশাস্ত্রের বিরুদ্ধে নয়। তাঁদের লড়াই ‘ড্রাগ মাফিয়া’, ‘ফার্মা মাফিয়া’-র বিরুদ্ধে। তাঁদের দাবি, নিজেদের স্বার্থেই আয়ুর্বেদ শাস্ত্র, যোগব্যায়ামের মতো দেশের সনাতন পদ্ধতিগুলির ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাইছে ওষুধপ্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি। যাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন এক শ্রেণির ডাক্তার।
মঙ্গলবারের অনুষ্ঠানে কোভিড পরবর্তী সময়ে হৃদরোগ-সহ অন্যান্য রোগের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন পতঞ্জলির দুই ‘মুখ’। যোগগুরু রামদেব প্রশ্ন তোলেন, কেন টিকাকরণের বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক তথ্য প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে না তা নিয়ে। আচার্য বালকৃষ্ণ দাবি করেন, কোভিড পরবর্তী সময়ে অন্যান্য বিভিন্ন রোগের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে সুনির্দিষ্ট গবেষণা করা প্রয়োজন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.