সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পণের দাবিতে বধূনির্যাতন, কিংবা গার্হস্থ্য হিংসার বলি গৃহবধূ। পণের দাবিতে অত্যাচারের হাজারো কাহিনির সবই কি সত্যি? এ প্রশ্ন উঠেছে বারবার? মহিলা তথা গৃহবধূদের জন্য বিশেষ আইন ৪৯৮A ধারার অপব্যবহার হচ্ছে না তো? এ প্রশ্নের সম্মুখীন এবার খোদ সুপ্রিম কোর্ট। আর এই প্রশ্ন যে বৈধ তা মেনে নিল শীর্ষ আদালত। শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে যে পণের দাবিতে অত্যাচারের অভিযোগ উঠলেই আর জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা করা যাবে না। মামলা দায়ের হওয়ার পর গ্রেপ্তারির আগেই আবেদন করতে পারবেন অভিযুক্তরা।
আসলে পণপ্রথা বিরোধী আইনের অপব্যবহারের অভিযোগ ইদানীং আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, নিজের স্বেচ্ছাচারের দায় ঢাকতে অনাবশ্যক কারণে শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ আনেন অনেক মহিলাই। আর এবার সেকথা স্বীকার করে নিল সর্বোচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ এদিন মন্তব্য করে, “৪৯৮(A) ধারা মেয়েদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য তৈরি, কিন্তু এর ভুল ব্যবহারে সমাজের অন্য পক্ষকেও ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে। ” আদালত জানায়, “মেয়েদের বিরুদ্ধে কোনওরকম লিঙ্গ-বৈষম্য হওয়া উচিত নয়, পণপ্রথা বিয়ের মত সম্পর্কের জন্য বিপজ্জনক। তেমনই, একজন পুরুষেরও নিজের মতো বাঁচার এবং ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার আছে।” আদালত এদিন সহায়তা বা সামাজিক সহযোগিতা কেন্দ্র তথা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির ভূমিকাতেও হস্তক্ষেপ করে। অনেক ক্ষেত্রেই স্থানীয় স্তরে এই সংস্থাগুলি পণপ্রথা সংক্রান্ত অভিযোগ মিটিয়ে দেয়। বিচারপতি এদিন জানিয়ে দেন, সমাজে নারী এবং পুরুষের অধিকার বজায় রাখার জন্য আদালত রয়েছে, তারাই সে কাজ করবে।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, এই ধরনের অভিযোগ উঠলেই গ্রেপ্তারি বন্ধ করা এবং আগাম জামিনের আবেদন করা, এই দুই সিদ্ধান্তেই ছাড়পত্র দিয়েছে আদালত। এর আগে গত ২৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টেরই আরেক ডিভিশন বেঞ্চ পণপ্রথা সংক্রান্ত অভিযোগ উঠলেই বিনা তদন্তে গ্রেপ্তারির নিয়ম বাতিলের পরামর্শ দিয়েছিল। এদিন আরও একধাপ এগিয়ে গেল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। মহিলারা পণপ্রথা আইনের অপব্যবহার করছে, এই অভিযোগে মামলাটি আবার মহিলা আইনজীবীদের দ্বারা পরিচালিত একটি সংস্থাই করেছিল। ন্যায়াধার নামে মহারাষ্ট্রের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দাবি ছিল, পুরুষদের বিরুদ্ধে ভুল অভিযোগ এনে আসলে মেয়েরা নিজেদের জন্য তৈরি সুবিধাজনক আইনের এত অপব্যাবহার করছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.