সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লালকৃষ্ণ আডবানীর পর এবার বোমা ফাটালেন সুমিত্রা মহাজন। আরও এক প্রবীণ বিজেপি নেত্রী আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন। শুক্রবার লোকসভার বিদায়ী স্পিকার সুমিত্রা মহাজন জানিয়ে দিয়েছেন তিনি এবার লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। এদিন, মধ্যপ্রদেশের এই বর্ষীয়ান সাংসদের দপ্তর থেকে একটি চিঠি প্রকাশ করে তাঁর এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, তিনি ‘কঠিন সিদ্ধান্ত’ থেকে তাঁর দলকে মুক্তি দিলেন।
এবার লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির অনেক প্রবীণ সাংসদই আর প্রার্থী হচ্ছেন না। তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য লালকৃষ্ণ আডবানী, মুরলী মনোহর যোশী, উমা ভারতী, যশবন্ত সিনহা। সেই তালিকায় যুক্ত হল সুমিত্রা মহাজনের নামও। প্রবীণ নেতা-সাংসদদের লোকসভা নির্বাচনে ব্রাত্য করা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ঘরে-বাইরে বিজেপিকে যথেষ্ট সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। তবে দলীয় সূত্রের খবর, ওই নেতা-নেত্রীরা নিজেরাই নির্বাচনে প্রার্থী না হতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। অবশ্য, বিজেপির ‘লৌহপুরুষ’ আডবানী জানিয়েছেন অন্য কথা। তিনি বলেছেন, দল তাঁর কাছে কোনও মতামত চায়নি, একটি নোটে দলের সিদ্ধান্ত তাঁকে জানানো হয়েছিল। তবে আগেই বিজেপি প্রবীণ নেতাদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছিল, তাঁরা নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কি না, সে ব্যাপারে তাঁরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিন।
[ আরও পড়ুন: ‘ফ্যান্সি’ ট্রাক্টরে সওয়ার হেমা, সোশ্যাল মিডিয়ায় খোঁচা ওমর আবদুল্লার ]
বিজেপি মধ্যপ্রদেশের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সময় ইন্দোর কেন্দ্রের জন্য কারও নাম ঘোষণা করেনি। এই আসন থেকেই দীর্ঘ সময় প্রতিনিধিত্ব করছেন বিজেপি নেত্রী সুমিত্রা মহাজন। ফলে তিনি নিজেই খুব উদ্বেগে ছিলেন বিষয়টি নিয়ে। তিনি চিঠিতে লিখেছেন, “বিজেপি ইন্দোরের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। এই সিদ্ধান্তহীনতা কেন? দল বোধহয় দ্বিধাগ্রস্ত। যদিও আমি এই ব্যাপারে দলের নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে তাদের উপরই সিদ্ধান্ত ছেড়েছিলাম। মনে হচ্ছে, এখনও তাঁদের মধ্যে বাধ্যবাধকতা আছে, তাই নিজেই ঘোষণা করছি যে আমি আর লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে না যাতে দল নির্দ্বিধায় নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
ইন্দোরের আট বারের সাংসদ আগামী সপ্তাহেই ৭৬ বছরে পড়বেন, যা বিজেপির প্রার্থী হওয়ার জন্য বয়সসীমা হিসাবে নির্ধারণ করেছে দল। বৃস্পতিবারই বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলেন, দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৭৫ বছর বয়স হয়ে গেলে তাঁদের আর প্রার্থী করা হবে না। যদিও তিনি সেখানে সুমিত্রা মহাজনের নাম করেননি। ইন্দোরের প্রার্থী ঘোষণা না হওয়া নিয়ে তিনি দলের কাছে কিছু জানতে চেয়েছিলেন কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরে সুমিত্রা মহাজন বলেন, ১৯৮৯ সালে যখন তিনি প্রথম লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হন তিনি নিজে থেকে টিকিট চাননি। পুরোটাই দলের সিদ্ধান্ত ছিল। তিনি কখনও মনোনয়ন চাননি। মহাজন আরও বলেন, “হতে পারে বিজেপির সাংগঠনিক নেতারা অন্য কিছু ভেবে রেখেছেন। আমাদের দলে এই ধরনের প্রশ্ন করা যায় না। কারণ সংগঠনই প্রার্থীদের মনোনীত করে। ইন্দোর নিয়ে দল সঠিক সময়ে যথাযথ সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।” এদিন, এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, “দলের সিদ্ধান্ত খুব স্পষ্ট। দলের অবস্থান ইঙ্গিত করে ৭৫ বছরের বেশি কাউকে টিকিট দেওয়া হবে না।”
[ আরও পড়ুন: ‘সবেতেই নেহেরুকে দোষ দিচ্ছেন, নিজে কী করলেন?’ মোদিকে কটাক্ষ প্রিয়াঙ্কার ]
সুমিত্রা মহাজন লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে লালকৃষ্ণ আডবানী (৯১), মুরলী মনোহর যোশী (৮৫), কলরাজ মিশ্র (৭৭) এবং বি সি খান্ডুরির (৮৪) দলে যোগ দিলেন। আদবানির গান্ধীনগর কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। যোশী ও অন্যদের দলের সাধারণ সম্পাদক রাম লাল জানিয়ে দেন তাঁদের প্রার্থী করা হচ্ছে না। গতমাসে যোশী তাঁর কানপুর কেন্দ্রের ভোটারদের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠিতে জানান, দল তাঁকে কানপুর বা অন্য কোনও কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করবে না বলে জানিয়েছে।
ইন্দোর কেন্দ্রে কে হতে পারেন বিজেপি প্রার্থী? অনেকগুলি নাম নিয়ে জল্পনা চলছে। তাঁদের মধ্যে আছেন ইন্দোরের মেয়র ও বিধায়ক মালিনী গৌড়, আরেক বিধায়ক উষা ঠাকুর, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, প্রাক্তন সাংসদ ভানওয়ার সিং শেখাওয়াত এবং ইন্দোর উন্নয়ন পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর লালওয়ানি। ইন্দোরে ভোট ১৯ মে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.