সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: কয়েক মাস আগে মারা গিয়েছেন মা। বাবা জেলে। অনুব্রতকন্যা সুকন্যা এখন পুরোপুরি বিপর্যস্ত এবং অসহায়। এতটাই যে, এক বান্ধবী ছাড়া তাঁর পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই। বুধবার গ্রেপ্তার করার পর রাতেই দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে (RML Hospital) সুকন্যার স্বাস্থ্যপরীক্ষা করিয়েছে ইডি। বৃহস্পতিবার তাঁকে পেশ করা হবে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে।
গ্রেপ্তারির পর সুকন্যার সেই বান্ধবী সুতপা পাল (Sutapa Pal) ইডি অফিসে গিয়ে তাঁর প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। জামা-কাপড়, ওষুধপত্র নিজের হাতে দিয়ে এসেছেন তিনি। সুকন্যার ‘অসহায়তা’ নিয়ে আক্ষেপের সুর শোনা গিয়েছে তাঁর গলাতেও। “মেয়েটার পাশে দাঁড়ানোর আর কেউ নেই। মা মারা গিয়েছে, বাবা জেলে। আমিই বা কী করে সাহায্য করব? নিজেরই চিকিৎসা করাতে পারি না।” বলতে বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন অনুব্রতর বান্ধবী। এই সুতপা আসলে সুকন্যার ছায়াসঙ্গী। ইডি হেফাজতেও তিনি পাশে থাকতে চান বান্ধবীর। বলছিলেন, ‘আমি শুধু ওঁর পাশে থাকতে চাই।’
আসলে মায়ের মৃত্যু, এবং বাবার জেল যাত্রা মানসিকভাবে বিরাট ধাক্কা দিয়েছে সুকন্যাকে (Sukanya Mandal)। বীরভূমের বাড়িতে থাকাকালীনও তাঁর মানসিক সমস্যার কথা শোনা গিয়েছিল। বাড়ির জিনিসপত্র ভাঙচুর থেকে শুরু করে নিজেকে সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন করে নেওয়া, এসবই করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। এমনকী গ্রেপ্তারির দিন তিনেক আগে থেকে আইনজীবীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেননি অনুব্রতকন্যা। এতেই বোঝা যায়, মানসিকভাবে তিনি কতটা বিপর্যস্ত।
এই বিপর্যস্ত এবং অসহায় অবস্থায় সুকন্যার গ্রেপ্তারি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূলও (TMC)। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলছিলেন, “কয়েক মাস আগে মা মারা গিয়েছেন। বাবা জেলে। অসহায় মেয়েটাকে গ্রেপ্তার করাটা কী মানবিক হল? আমরা তদন্ত নিয়ে কোনও মন্তব্য করছি না। কিন্তু হেফাজতে না নিয়ে কি তদন্ত করা যেত না?” ইডি সূত্র বলছে, সুকন্যার বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ তাঁদের হাতে রয়েছে। গরু পাচার মামলার পয়লা নম্বর সুবিধাভোগী তিনিই। অনুব্রতর ঘনিষ্ঠদের বয়ানে তার প্রমাণ মিলেছে। শুধু তাই নয়, জেরায় তাঁর বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি মিলেছে বলেও দাবি ইডির। আজ রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে এগুলিই ইডির হাতিয়ার হতে চলেছে অনুব্রতকন্যার বিরুদ্ধে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.