সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কংগ্রেসের বিড়ম্বনা বাড়াতে মনমোহন সিংকে নিয়ে সিনেমা হচ্ছে বড় পর্দায়। ২০০৪ সালে আচমকা এই অর্থনীতিবিদকে কেন কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বেছে নিয়েছিল সে কথা সিনেমায় বলা হবে। আগামী বছর শীতে প্রেক্ষাগৃহে আসছে ‘দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’। সিনেমার কাজ সবে শুরু হয়েছে। তার আগে শুরু হয়ছে রাজনৈতিক তরজা। কংগ্রেসের অভিযোগ, এই ছবি তৈরিতে অশুভ হাত রয়েছে। ৩২৮ কোটি টাকার চিনি কেলেঙ্কারির অর্থে সিনেমা বানানো হচ্ছে। মহারাষ্ট্রের বিজেপির এক শরিক নেতার ছেলে ছবিটির পরিচালক। কংগ্রেসের দাবি, বাবার কালো টাকা সিনেমায় ব্যবহার হচ্ছে। যা নিয়ে পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে। এই ইস্যুতে এনসিপিকেও পাশে পেয়েছে কংগ্রেস। অভিযুক্ত বিজেপি শরিক নেতার দাবি রাজনৈতিক স্বার্থেই তাঁকে নিশানা করা হয়েছে।
চিনি কেলেঙ্কারির টাকায় সিনেমা। বিভিন্ন ব্যাঙ্ককে ঠকিয়ে ৩২৮ কোটি টাকা পকেটে পুরেছিলেন রত্নাকর গুট্টে। সেই অর্থেই তৈরি হচ্ছে- দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার। অভিযুক্তর ছেলে ছবিটির পরিচালক। শুক্রবার এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করল মহারাষ্ট্র প্রদেশ কংগ্রেস এবং এনসিপি। দুই দলের দাবি দুর্নীতির অর্থই মনমোহন সিংকে নিয়ে সিনেমায় লগ্নি করা হচ্ছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, গাংখেড় সুগার অ্যান্ড এনার্জি প্রাইভেট লিমিটিডের মালিক ছিলেন রত্নাকর গুট্টে এবং কয়েকজন। এরা ২২৯৮ জন কৃষকের নামে ঋণ নেন। আবেদনকারীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ছিলেন মৃত। তাদের নাম করে ৬টি ব্যাঙ্ক থেকে প্রায় ৩২৮ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন রত্নাকর। বম্বে হাই কোর্টের নির্দেশে ইতিমধ্যে যার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। কংগ্রেস মুখপাত্র শচীন সাওয়ান্তের অভিযোগ, নিজেকে বাঁচাতে ছেলেকে দিয়ে সিনেমা তৈরি করছেন রত্নাকর। এভাবে তিনি বিজেপির সুনজরে আসতে চাইছেন। সিনেমা বানানোর নেপথ্যে কী মতলব রয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি জানিয়েছেন মহারাষ্ট্র কংগ্রেস। এই ইস্যুতে শরদ পাওয়ারের এনসিপিকে পাশে পেয়েছে তারা। এনসিপির সন্দেহ, পিছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে বিজেপি। এনসিপি নেতা নবাব মালিকের অভিযোগ, ক্ষমতাসীন বিজেপির কয়েকজন নেতা এই কেলেঙ্কারিতে জড়িত। পুলিশ নয়, ইডি তদন্তভার হাত নিলে অভিযুক্তরা ধরা পড়বে বলে মনে করে এনসিপি।
রত্নাকর গুট্টে বিজেপির সহযোগী দল রাষ্ট্রীয় সমাজ পক্ষর নেতা। সিনেমায় তাঁর নাম ক্রমশ জড়িয়ে যাওয়ায় পালটা আক্রমণের রাস্তায় নেমেছেন এই রাজনীতিক। রত্নাকরের দাবি, সিনেমার বিষয়ে ছেলের সঙ্গে তাঁর কথাই হয়নি। বিরোধীরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য এই অভিযোগ তুলেছে বলে দাবি রত্নাকরের। বিজেপি এই ইস্যুতে নিজেদের দূরত্ব রাখতে মরিয়া। মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতা মাধব ভাণ্ডারীর বক্তব্য, রত্নাকরের সঙ্গে তাদের দলের কোনও যোগ নেই। তিনি এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। কয়লা কেলেঙ্কারিতেও গুট্টের নাম জড়িয়েছিল বলে দাবি গেরুয়া শিবিরের। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা সঞ্জয় বারুর লেখা বই নিয়ে তৈরি হচ্ছে এই সিনেমা। মনমোহন সিং যখন প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন, সেই দফার কাহিনি উঠে আসবে পর্দায়। ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের মুখে বইটি প্রকাশ করেছিলেন সঞ্জয় বারু। যা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছিল। কংগ্রেসের সাম্প্রতিক অভিযোগে স্পষ্ট জল আরও অনেক দূর গড়াবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.