বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড ও মহারাষ্ট্র-কর্নাটক সীমান্তে মাওবাদীদের নিকেশ করার ক্ষেত্রে কেন্দ্র সাফল্যের দিকে কয়েক কদম এগিয়ে গেলেও কাশ্মীরে জঙ্গিদের দমনে ব্যর্থ কেন অমিত শাহের মন্ত্রক? পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর কেন্দ্রের সাফল্য ও ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ছত্তিশগড়ে মাওবাদী বিরোধী অভিযান নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বুক বাজিয়ে বলে বেড়াচ্ছেন, এদেশ থেকে নকশালপন্থীদের নির্মূল করে ছাড়বেন। সেই মতো একের পর এক অভিযানে বহু মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে। আরও বহু নকশালপন্থী অস্ত্র সমর্পণ করতে বাধ্য হচ্ছে। জঙ্গল সংঘর্ষে বিশেষ প্রশিক্ষিত কোবরা বাহিনীর একের পর এক অভিযানে মাওবাদীরা ছন্নছাড়া হয়ে পড়েছে। কিন্তু, সেই একই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাশ্মীরে জঙ্গি উপদ্রব কমানোর কাজে ছাতি চুপসে যাচ্ছে কেন?
কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপের মতো ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত এবং তার পরবর্তীতে শান্তিপূর্ণভাবে বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত দীর্ঘদিন ধরে কাশ্মীর মোটের উপর শান্তই ছিল বলা যায়। যদিও এর মধ্যেও বেশ কয়েকবার জঙ্গিরা ছোটবড় হামলা চালানোয় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু, মঙ্গলবারের জঙ্গি হামলার পর ফের নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি কাশ্মীরে শান্তি ফেরানোর ক্ষেত্রে কেন্দ্র ব্যর্থই হচ্ছে?
আসলে মাওবাদীদের মতো কাশ্মীরী জঙ্গিরা পৃথক সমাজ ব্যবস্থার দাবিতে লড়াই করছে না। তাদের লড়াই কাশ্মীর দখলের। আর এতে প্রত্যক্ষ মদতদাতা পড়শি দেশের গোটা সেনাবাহিনী ও তাদের প্রশিক্ষিত চর বাহিনী। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর একের পর এক জঙ্গি শিবিরে নিয়মিত প্রশিক্ষণ চলছে। সেই সব জঙ্গি গড়ার কারখানায় ভুয়ো জেহাদের নামে ভারত বিরোধী একটি ঘৃণা ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ চলছে। এর কোনও কিছুই গোয়েন্দাদের অজানা নয়। অজানা নয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও তাঁর উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের। তার পরেও পাহেলগাঁওয়ের ঘটনা অমিত শাহর ব্যর্থতা আরও একাবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।
রাজনৈতিক মহলের মতে, আসলে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর ফলাও করে ভূস্বর্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে বলে প্রচার করেন অমিত শাহ। কিন্তু এই ঘটনা প্রমাণ করে শান্তিপ্রতিষ্ঠার কথা আসলে ফাঁকা বুলি ছাড়া আর কিছুই নয়। এখন ব্যর্থতা ঢাকতে আরও বড়সড় কিছু পদক্ষেপ করার কথা ভাবতে পারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভার বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.