দীপঙ্কর মণ্ডল: কেউ মায়ের কোলে৷ কেউ বাবার কাঁধে৷ আবার কেউ বা তিনচাকার সাইকেল চালিয়ে হাজির৷ সবাই বিকলাঙ্গ শিশু৷ শুক্রবার ঝাড়খণ্ডের জাদুগোড়ায় বেলা যত গড়িয়েছে তত ভিড় বেড়েছে৷ কিন্তু কেন? প্রেসিডেন্সি এবং যাদবপুর-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা সেখানে গিয়েছেন৷ সঙ্গে কলকাতার কিছু চিকিৎসক৷ ওই এলাকার অসুস্থ শিশুদের চিকিৎসার উদ্দেশ্যে এই শহর থেকে গিয়েছেন তাঁরা৷ ‘জল জঙ্গল জমিন’ নামে মঞ্চ তৈরি হয়েছে৷ সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি কলকাতা মেডিক্যাল, এসএসকেএম-এর চিকিৎসকরাও আছেন৷
জাদুগোড়ায় ৫০ বছর ধরে ইউরেনিয়াম খনি চলছে৷ এলাকায় আছেন কয়েক হাজার আদিবাসী৷ কয়েক বছর ধরে ওই এলাকায় বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম হচ্ছে৷ প্রেসিডেন্সি ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন গবেষক বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন৷ মাস খানেক আগে মঞ্চটি তৈরি হয়৷ প্রথমে কয়েকজন জুনিয়র ডাক্তার এই মঞ্চে আসেন৷ ধীরে ধীরে অভিজ্ঞ চিকিৎসকরাও আগ্রহী হন৷ এদিন সকালে জাদুগোড়ার একটি প্রাথমিক স্কুলের মাঠে হাজির হন মঞ্চের প্রায় ২৫ জন সদস্য৷ টেবিল পেতে চিকিৎসার সামগ্রী রাখেন৷ তা দেখে কৌতূহল হয় স্থানীয়দের৷ তাঁদের জানানো হয় বিনামূল্যে চিকিৎসা করার উদ্দেশ্যেই এই শিবির৷
খবর ছড়িয়ে যায় বিভিন্ন গ্রামে৷ বিকলাঙ্গ শিশুদের নিয়ে হাজির হন বাবা-মায়েরা৷ ‘জল জঙ্গল জমিন’-এর সদস্য প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী ছন্দক চট্টোপাধ্যায়৷ মোবাইলে তিনি জানালেন, “আমাদের শিবির এলাকায় সেখানে ৩৫০ টি পরিবার আছে৷ প্রায় একশো শিশু বিকলাঙ্গ৷ ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তা থেকে এই অসুস্থতা৷ যতটা সম্ভব ওষুধ দেওয়া হয়েছে পরিবারগুলিকে৷” ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলায় এই এলাকার অবস্থান৷ সরকারিভাবে শিশুদের চিকিৎসার উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ৷ কলকাতা থেকে যাওয়া চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, “রেডিও অ্যাকটিভ দূষণের ফলে এই অবস্থা৷”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.