সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আসাদুদ্দিন ওয়েইসির সভায় ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিলেন বেঙ্গালুরুর তরুণী অমূল্যা। তাঁর বক্তব্য ছিল, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যথেষ্ঠ ভাল মানুষ। তিনি মানুষকে ভালবাসেন। শুধু তাঁর অনুগামীরা এবং নির্বোধ আরএসএস কর্মীরা ধর্মের ভিত্তিতে মানুষকে ঘৃণা করে। এখানেই শেষ নয়, অমূল্যার বাবাও জানিয়েছেন, তিনি একজন বিজেপি সমর্থক। এর আগে একাধিকবার তিনি বিজেপিকে ভোটও দিয়েছেন। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসায় কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া শিবির।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে আয়োজিত সভায় ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিয়েছেন বেঙ্গালুরুর এক তরুণী। হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসির উপস্থিতিতেই তিনি মঞ্চ থেকে বলে বসেন ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’। যার জেরে অমূল্যা লেওনা নামে ১৯ বছরের ওই তরুণীকে গ্রেপ্তার করে তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়েছে। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পার (B. S. Yediyurappa) দাবি, তরুণীর সঙ্গে নকশালদের যোগ রয়েছে। তাই তাঁকে জামিন দেওয়া ঠিক হবে না। আপাতত অমূল্যাকে ৩ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। এদিকে, বৃহস্পতিবার রাতেই অমূল্যার চিকমাগালুরুর বাড়ি ভাঙচুর করেছে একদল অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। ওই তরুণীর বাবাও মেয়ের বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন ,“অমূল্যা যা বলেছে তা ভুল। ও আসলে কিছুদিন ধরেই মুসলিমদের সঙ্গে বেশি মেলামেশা করছিল। আমি বারণ করা সত্ত্বেও আমার কথায় কান দেয়নি।”
এদিকে, ওই তরুণীর ফেসবুক পোস্টে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসছে। গত সপ্তাহে ‘লং লিভ ফর অল কান্ট্রিস’ অর্থাৎ সব দেশ জিন্দাবাদ প্রসঙ্গের উল্লেখ আছে। সেখানে লেখা, ‘যে রাষ্ট্রই হোক, সব রাষ্ট্রই জিন্দাবাদ। ভারত জিন্দাবাদ, পাকিস্তান জিন্দাবাদ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, নেপাল জিন্দাবাদ, শ্রীলঙ্কা জিন্দাবাদ, আফগানিস্তান জিন্দাবাদ, চিন জিন্দাবাদ, ভুটান জিন্দাবাদ।’ তা নিয়েও তৈরি হয়েছে বিতর্ক। যদিও ফেসবুকেই অমূল্যা সাফাই দিয়েছে যে, ‘আমি আইন অনুযায়ী ভারতের নাগরিক। আমার দেশকে সম্মান করা, সেখান মানুষের জন্য কাজ করা আমার কর্তব্য। তা আমি করেই যাব।’ এছাড়া আর একটি ফেসবুক পোস্টে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) প্রশংসাও করেছেন তিনি। একটি ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন,”প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুসলিমদের ঘৃণা করেন না। তিনি দেশে সব নাগরিককে ভালবাসেন। কিন্তু, তাঁর অনুগামীরা এবং সংঘীরা ধর্মের ভিত্তিতে দেশের জনগণনকে ঘৃণা করে।” তরুণীর বাবা আবার একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিনি আগে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। এমনকী, স্থানীয় বিধায়কের হয়ে ভোটের প্রচারও করেছেন। এমনকী, লোকসভা নির্বাচনেও আগে তিনি বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। তরুণীর বাবার দাবি, নিশ্চয় কোনও কারণে অমূল্যা ভুলপথে চালিত হয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.