প্রতীকী ছবি
ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: আগামী ১৫ জুন দেশজুড়ে ডাক্তারির স্নাতকোত্তরস্তরের প্রবেশিকা (নিট পিজি) শুরু হচ্ছে। ঠিক তার আগে ডাক্তারির স্নাতক ও স্নাতকোত্তরস্তরের পড়ুয়াদের নিয়ে মারাত্মক তথ্য প্রকাশ করল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন। যেখানে বলা হয়েছে, তীব্র প্রতিযোগিতা এবং শারীরিক ও মানসিক চাপ অনেকেই নিতে পারছে না। কেউ মাঝপথে পড়া বন্ধ করছে। কেউ আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
টানা ৩৬ থেকে ৪২ ঘন্টা ডিউটি। তার পরে ফের ক্লাস। আবার হাসপাতালে ডিউটি। এই ধকল সামলাতেই পারছে না হবু ডাক্তারদের একটা বড় অংশ। একরকম বাধ্য হয়ে কেউ মাঝপথে পড়া ছাড়ছেন। কেউ আত্মঘাতী হচ্ছে। কোনও বেসরকারি নয়। এই তথ্য প্রকাশ করেছে দেশের মেডিক্যাল শিক্ষার সর্বোচ্চ সংস্থা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন।
ডা. বিবেক পাণ্ডে নামে এক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আরটিআই করে জানতে চান, আগামী দিনে যাঁদের হাতে দেশের চিকিৎসার ভার, তাঁদের মানসিক অবস্থা কতটা ভালো? বিবেকের প্রশ্নের উত্তর এনএমসি তাদের ওয়েবসাইটে তুলে দিয়েছে। জানিয়েছে, ২০১৮-২৩ পর্যন্ত সময়কালে ১ হাজার ১৬৬ জন ডাক্তারি পড়তে-পড়তে ছেড়ে দিয়েছেন। এঁদের মধ্যে ১৬০ জন স্নাতকস্তরেই লেখাপড়া বন্ধ করেছে। বাকি ১ হাজার ৬ জন স্নাতকোত্তর স্তরে। সবচেয়ে বেশি ড্রপ আউট স্নাতকোত্তরের বিভিন্ন শাখায়। যেমন-স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগে ১০৩, জেনারেল সার্জারি ১১৪, ইএনটি বিভাগে পড়া ছেড়েছেন ১০০ জন। ওয়েবসাইটে আরও মারাত্মক তথ্যপ্রকাশ করেছে। ১১৯ জন ডাক্তারি পড়ুয়া আত্মহত্যা করেছে। এনএমসির তথ্য অনুযায়ী এদের মধ্যে ৬৪ জন স্নাতক এবং ৫৫ জন এমডি অথবা এমএস পড়তে পড়তে এমন চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এইসব তথ্য প্রকাশ করে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিল জানিয়েছে দেশের ৫১২টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ডাক্তারি পড়ার মারাত্মক চাপ অনেকেই নিতে পারে না। তাই এমন পরিণতি।
এই প্রসঙ্গে ইনস্টিউট অফ সাইকিয়াট্রির অধিকর্তা অধ্যাপক ডা. অমিত ভট্টাচার্য জানান, “শুধু ডাক্তারি নয়। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের মধ্যেও একই প্রবণতা আছে। কোটায় পড়ার মারাত্মক চাপ সহ্য করতে না পেরে কিছু ছেলেমেয়ে পালিয়ে যায়। এইক্ষেত্রে শিক্ষক হিসেবে মা-বাবাকে বলব, ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার না হলে জীবন নষ্ট, এমন ধারনা থেকে বেরিয়ে আসুন। জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। যে বিষয় ভালো লাগে তাই পড়তে দিন। ওরা ভালো থাকলে আমরাও ভালো থাকব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.