সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একের পর এক রাজ্যে বিক্ষুব্ধ কৃষকরা। ফসলের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া থেকে শুরু করে নানা দাবিতে চলছে বিক্ষোভ-বিদ্রোহ। কৃষকদের শান্ত করতে ঋণ মকুবের পথেই হাঁটতে চাইছে বিভিন্ন রাজ্যগুলি। কিন্তু সহায়তার হাত বাড়াতে নারাজ কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি সাফ জানিয়ে দিলেন, যে সমস্ত রাজ্যগুলি ঋণ মকুব করতে চাইছে, তারা যেন নিজেরাই প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় করে নেয়।
[ নোট বাতিলের জেরেই কমতে পারে আর্থিক বৃদ্ধি, আশঙ্কায় SBI ]
কৃষকরা যে এ বছর সমস্যায় পড়তে পারেন, নোট বাতিলের পরই অর্থনীতিবিদরা তা আঁচ করেছিলেন। প্রত্যাশিতভাবেই সে ঘটনার মাস কয়েক যেতে না যেতেই তা শুরুও হয়েছে। তামিলনাড়ুর কৃষকরা দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। ধরনা দিয়েছেন যন্তর মন্তরে। তার রেশ কাটতে না কাটতেই শস্যের দাম না পাওয়ায় ধর্মঘটের পথে হেঁটেছিলেন মহারাষ্ট্রের কৃষকরা। ফলত সবজির দাম বেড়েছিল মারাত্মক হারে। নাকাল হয়েছিলেন মধ্যবিত্তরা। এর মধ্যেই মধ্যপ্রদেশ উত্তাল হয়ে ওঠে কৃষক বিক্ষোভে। মান্দসৌরে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান ছয় জন কৃষক। যদিও প্রশাসন তা অস্বীকার করে। শেষমেশ নিজে অনশন করে, কৃষকদের দাবি দাওয়া শুনে তবে পরিস্থিতি সামাল দেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। এদিকে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিসও কৃষকদের ঋণ মকুবের সিদ্ধান্ত নিয়েই বিক্ষোভ প্রশমিত করেন। কিন্তু সংকটে থাকা রাজ্যগুলিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে নারাজ কেন্দ্র। একরকম দায় ঝেড়ে ফেলেই অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানালেন, যে রাজ্য এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, অর্থের বন্দোবস্তও তাদেরই করতে হবে। কেন্দ্রের এখানে কিছু করার নেই।
[ যোগীর রাজ্যেই একটি গ্রামের নাম পাল্টে হচ্ছে ‘পাক অধিকৃত কাশ্মীর’! ]
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাতে রাজ্যের খরচ বাড়বে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও কৃষকদের ঋণ মকুবের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাঁর প্রয়োজন প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা। নোট বাতিলের জেরে অনেক ক্ষেত্রেই ফসলের সঠিক দাম পাননি কৃষকরা। অন্যদিকে বীজ কিনতে না পারার দরুন দারুণভাবে মার খেয়েছে চাষবাস, তার উপর আছে ঋণের বোঝা। এর জেরেই ঘটছে একের পর এক কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা। নিজেদের অবস্থা তুলে ধরতে পাল্টা বিক্ষোভের পথে হেঁটেছেন কৃষকরা। তাঁদের পরিস্থিতি বুঝে বিভিন্ন রাজ্য সরকারও নরম অবস্থানই নিয়েছে। কিন্তু ঋণ মকুবের ক্ষেত্রে অনড় কেন্দ্র। মহারাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করেই জেটলি বলেন, যে রাজ্যগুলি এই পথে হাঁটতে চলেছে, তাদের নিজেদেরকেই অর্থের ব্যবস্থা করে নিতে হবে।
States like Maharashtra that are keen on farmer loan waiver should generate funds from their own resources: Finance Minister Arun Jaitley pic.twitter.com/BBml2gmZ0V
— ANI (@ANI_news) June 12, 2017
[ গুজরাটে ওঝাদের সংবর্ধনা বিজেপির, দুই মন্ত্রীর হাজিরাতে বিতর্ক ]
কৃষকবান্ধব হিসেবে এমনিতেও মোদি সরকারের তেমন সুনাম নেই। যদিও বিভিন্ন সময় বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী প্রমাণ করতে চেয়েছেন যে, তাঁর প্রশাসন কৃষকদের পাশেও আছে। এ নিয়ে বিস্তর টুইটও করেছেন। কিন্তু তাঁর কথা ও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর মন্তব্যে যে ব্যাপক বিরোধিতা আছে তা স্পষ্ট। কৃষকদের সম্পর্কে কেন্দ্রে মনোভাব ঠিক কীরকম, তাও উঠে এসেছে প্রকাশ্যেই। বিভিন্ন রাজ্যে কৃষক বিক্ষোভের মাঝে জেটলির এই মন্তব্য, বিদ্রোহের আগুনে ঘি ঢালবে বলেই মত বিশেষজ্ঞমহলের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.