ছবি:প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লাভ জেহাদ নিয়ে সরগরম ভারতীয় রাজনীতি। ‘ইন্টার-ফেথ ম্যারেজ’ বা ভিন ধর্মে বিয়ে এবং ধর্মান্তকরণের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে দক্ষিণপন্থীরা। বেশ কিছু রাজ্যে লাগু হয়েছে ধর্মান্তকরণ বিরোধী আইন। এহেন পরিস্থিতিতে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে দিল্লি হাই কোর্ট স্পষ্ট জানিয়েছে, ভিন ধর্মে বিয়ে আটকাতে পারে না রাষ্ট্র।
বুধবার একটি মামলায় দিল্লি হাই কোর্ট স্পষ্ট জানায়, ভিনধর্মীদের মধ্যে বিয়ে বা অন্য ধর্মে বিয়ে আটকানোর কোনও অধিকার নেই রাষ্ট্রের। এদিন হাই কোর্টের বিচারপতি যশবন্ত ভার্মার এজলাসে ভিন্ন ধর্মের দুই বিদেশি নাগরিকের বিয়ে সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি ছিল। মামলাকারী যুগলের মধ্যে যিনি মহিলা তিনি হিন্দু এবং কানাডার নাগরিক। তাঁর সঙ্গী পুরুষটি মার্কিন এবং খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী। ভারতীয় আইন মেনে এদেশে বিয়ে রেজিস্ট্রি করানোর আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। যেহেতু দু’জনেই নিজের নিজের ধর্ম পালনে আগ্রহী তাই ‘স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্ট, ১৯৫৪’-এর অধীনে এই আবেদন জানানো হয়েছে।
মামলাকারী যুগলের আইনজীবী ঋষভ কাপুর আদালতে জানান, তাঁর দু’জন মক্কেল বিদেশি এবং দু’জনের ধর্মই আলাদা। তাঁদের কেউই নিজের ধর্মমত থেকে সরবেন না। তাই স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্ট, ১৯৫৪ ছাড়া ভারতে তাঁদের বিয়ের রেজিস্ট্রি সম্ভব নয়। আইনজীবী কাপুর আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, দেশের বর্তমান অন্যান্য আইন এই বিয়ের পক্ষে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তারপরই বিচারপতি যশবন্ত ভার্মা স্পষ্ট জানান, ভিন ধর্মে বিয়ে আটকাতে পারে না রাষ্ট্র। আগামী ১৫ ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ সময় ধরেই ‘লাভ জেহাদে’র বিরুদ্ধে সরব দেশের শাসকদল বিজেপি ও অন্যান্য দক্ষিণপন্থী সংগঠনগুলি। দক্ষিণ ভারতে খ্রিস্টান মিশনারিদের বিরুদ্ধেও প্রলোভন দেখিয়ে ধর্মান্তকরণের অভিযোগ রয়েছে। ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে ধর্মান্তরণ বিরোধী আইন লাগু হয়েছে। সেই পথে হেঁটেছে গুজরাট সরকারও। ফলে ভিন ধর্মে বিয়ে রুখতে রাষ্ট্রের মদত রয়েছে বলেও অভিযোগ। এহেন পরিস্থিতিতে দিল্লি হাই কোর্টের রায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.