সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বছরের প্রথম দিনই জম্মু-কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) বৈষ্ণোদেবী মন্দিরে (Vaishno Devi) ভিড়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। এই দুর্ঘটনা নিয়ে এবার কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে। এক প্রত্যক্ষদর্শীর মতে, চূড়ান্ত অব্যবস্থার ফলাফল এই দুর্ঘটনা। ই-টিকিট কিংবা কোভিড সার্টিফিকেট – কোনও কিছু পরীক্ষা না করেই মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল। যার জেরে প্রচুর ভিড় হয় এবং হুড়োহুড়ির জন্য পদপিষ্ট (Stampede)হন ১২ জন। ২০২২ সালের প্রথম দিন পুণ্যের টানে মন্দিরে পুজো দিতে গিয়ে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনার সাক্ষী অনেকেই। শিউড়ে ওঠার মতো অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন তাঁরা অনেকেই।
জম্মুর কাটরা থেকে হেঁটে পাহাড়ি পথে প্রায় ১৫ কিলোমিটার গেলে বৈষ্ণোদেবীর দর্শন পাওয়া যায়। অনেকেই ওই পথ ঘোড়ার পিঠে চড়ে যান। পাহাড়ি পথের প্রায় পুরোটাই মসৃণ রাস্তা রয়েছে। খাদের দিকে রেলিং এবং জাল দিয়ে ঘেরা রাস্তা যথেষ্ট নিরাপদ। তবে মন্দিরের ভিতরের পথ সংকীর্ণ। সেখানে প্রায় সারা বছরই ভিড় থাকে। কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, মন্দিরের ভেতরে বৈষ্ণোদেবীর মূর্তি যেখানে রয়েছে, শুক্রবার মাঝরাতে সেই সংকীর্ণ পথেই ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। সেখানেই পদপিষ্ট হওয়ার ওই ঘটনাটি ঘটে। দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে টুইট করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Deeply pained to hear about the stampede in Mata Vaishno Devi Bhawan.
I pray for the speedy recovery of those injured and offer my condolences to the bereaved families.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) January 1, 2022
হরিয়ানার এক দর্শনার্থীর কথায়, মন্দির চত্বর থেকে বেরনোর কোনও পথ ছিল না। কারণ, সবাই সেখানে ভিড় জমিয়েছিল। একে অপরকে ঠেলাঠেলি করে এগোনোর চেষ্টা করে। কেউ কেউ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাতে হুড়োহুড়ি আরও বেড়ে যায়। এরপরই পদপিষ্টের ঘটনা। তিনি আরও বলেন, ”মন্দির থেকে নামার রাস্তাটা ঢালু। সেই ঢালু পথে একে অপরকে ধাক্কা দেওয়ায় সবাই হুড়মুড়িয়ে পড়ে যান। আমি নিজেদের বাঁচাতে উপরের দিকে দৌড়তে থাকি। মন্দিরের উপর দিকে ওঠার চেষ্টা করি।” কেউই আবার বলছেন, ”ই-টিকিট বা কোভিড সার্টিফিকেট পরীক্ষা করা হয়নি মন্দিরে প্রবেশ করার সময়। এমনকী কোনও মেডিক্যাল হেল্প ডেস্কও ছিল না। অ্যাম্বুল্যান্স বা হুইলচেয়ারও ছিল না।”
অমৃতসরের সন্দীপ কুমার হন্যে হয়ে খুঁজছেন তাঁর স্ত্রী ও ৯ বছরের ছেলেকে। তাঁরা একসঙ্গেই গিয়েছিলেন বৈষ্ণোদেবীতে। কিন্তু হুড়োহুড়ির চোটে সকলে নানা দিকে ছিটকে যান। চোখের জলে ভেসে সন্দীপ কুমার বলছেন, ”আমি ১৪ কিলোমিটার হেঁটেছি ওদের খুঁজতে। কিন্তু পাইনি এখনও। খুব চিন্তায় আছি। সন্দীপের মতো আরও অনেকেই এভাবে প্রিয়জনদের মরিয়া হয়ে খুঁজছেন। যদিও কাশ্মীর পুলিশের আশ্বাস, সব পুণ্যার্থীকে খুঁজে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে বদ্ধপরিকর। তবে বছরের প্রথম দিন এমন এক পুণ্যস্থানে এতজনের মৃত্যুতে স্বভাবতই খানিকটা কেটেছে উৎসবের সুর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.