সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: “সাময়িক স্বস্তি বটে। কিন্তু এটা আমাদের লক্ষ্য নয়। আন্দোলন চলবে। আলোচনা করব সরকারের সঙ্গে।” বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতের রায়ে শুধুমাত্র চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের ক্ষতে সাময়িক প্রলেপ পড়েছে বলেই দাবি আন্দোলনকারীদের একাংশের। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে পড়ানোর অনুমতি মিলেছে। মিলবে বেতনও। কিন্তু এই রায়ে পুরোপুরি সুরাহা মেলেনি। চাকরিস্থলে ফিরে গেলেও নিজেদের হকের চাকরি ফিরে পেতে লড়াই চালিয়ে যাবেন তাঁরা। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে এমনটাই জানালেন শিল্পা বসু ও শরিফা খাতুনরা।
সুপ্রিম রায়ে চাকরিহারা হয়েছেন শিল্পা বসু ও তাঁর স্বামী দেবরাজ পাল। বাড়িতে দম্পতির ছ’বছরের সন্তান। সংসার চলবে কী করে? তা নিয়ে চিন্তায় তাঁরা। একাধিক প্রশ্ন রয়েছে তাঁদের মনে। কৃষ্ণনগরের একটি স্কুলের পদার্থবিদ্যার শিক্ষিকা শিল্পা বসু দিল্লির যন্তর মন্তরে ধরনায় অংশ নিয়েছিলেন। বাড়িতে ছোট সন্তানকে দেখভালের জন্য রয়ে গিয়েছেন তাঁর স্বামী, নবদ্বীপের ভালুকা স্কুলের চাকরিহারা শিক্ষক দেবরাজ পাল।
দিল্লি থেকে শিল্পা জানাচ্ছেন, আজকের রায়ে তাঁদের গলার কাঁটা কিছুটা নামলেও, স্থায়ী সমাধান না মেলা পর্যন্ত আন্দোলন চালাবেন তাঁরা। নেওয়া হবে প্রয়োজনীয় আইনি পরামর্শও। শিল্পার কথায়, “এই রায়ে সাময়িক স্বস্তি মিলল। কিন্তু আমরা তো এটা চাই না। নিজের চাকরি ফিরে পেয়ে সসম্মানের সঙ্গে স্কুলে ফিরতে পারি সেটাই দাবি। ৬ মাসের বেতনে কী হবে? আন্দোলন আমাদের করে যেতে হবে।” নতুন নিয়োগ নিয়ে তিনি বলেন, “নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া হলে তা খুব মুশকিল। কীসের ভিত্তিতে হবে তা স্পষ্ট নয়! আমার স্বামীরও চাকরি গিয়েছে। এই রায় খুব একটা আশা দেখছি না।”
চাকরিহারা আরও এক শিক্ষিকা শরিফা খাতুনের গলাতেও আগামীর চিন্তা। আদালতের রায়ে তাঁর পরিবারের চারজনের চাকরি গিয়েছে। শরিফার কথায়, “এটা আমাদের লক্ষ্য নয়। সাময়িক স্বস্তি বলতে পারেন। আজকে আদালত যেমন ভাবে যোগ্যদের স্কুলে যেতে বলল, সেটাই পুরোপুরি মেনে নেওয়া হোক। সেই জন্য আমাদের আন্দোলন চলবে। আইনি পদ্ধতিতে সব কিছু করা হবে।” শিল্পার মতো শরিফাও নতুন নিয়োগের বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না। তিনি বলেন, “এই বিষয়ে আমরা সরকারের সঙ্গে কথা বলব। যে ওএমআরগুলিকে মানত্য দিয়ে আজ যোগ্য, অযোগ্যদের স্কুলে যাওয়া বা না যাওয়া ঠিক হল, সেটাকে মানত্যা দেওয়া হোক।”
সুপ্রিম রায়ে এসএসসির ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিলে ২৫ হাজার ৭৫২ জনের চাকরি গিয়েছে। চাকরিহারা ‘যোগ্য’দের কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি ও নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য অতিরিক্ত সময় চেয়ে শীর্ষ আদালতে যায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। সেই শুনানিতে আদালত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিয়োগের সময় দিয়েছেন বিচারপতি। ততদিন চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষকরা চাকরি করতে পারবেন, সঙ্গে মিলবে বেতনও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.