বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) সঙ্গে দু’ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৈঠক ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের (Prashant Kishor)। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকালে দিল্লির একটি পাঁচতারা হোটেলে সেই বৈঠক সেরে এদিনই কলকাতা ফিরে গিয়েছেন অভিষেক।
সদ্য সোমবারই দিল্লিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED) দপ্তরে ৯ ঘণ্টা ধরে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব চলে অভিষেকের। তা শেষ হওয়ার পর বিজেপির বিরুদ্ধে কার্যত রণহুঙ্কার দেন তৃণমূলের এই তরুণ তুর্কি। দেশের যে সমস্ত জায়গায় বিজেপি রয়েছে, সেখানেই তৃণমূল কংগ্রেস যাবে এবং ২০২৪ সালে বিজেপিকে হারাবে বলেও ঘোষণা করেন তিনি। সেই ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা পার হতে না হতেই পিকের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ বৈঠক জল্পনা বৃদ্ধি করেছে রাজনৈতিক মহলে। বাংলার গণ্ডি পার করে ইতিমধ্যেই ত্রিপুরা ও অসমের মতো রাজ্যে তৃণমূল (TMC) জোর কদমে পা ফেলার কাজ সেরে ফেলেছে। ত্রিপুরা থেকে বিজেপি সরকারকে উৎখাত করাই যে তৃণমূলের লক্ষ্য, সেই বার্তাও অভিষেক ইতিমধ্যেই দিয়ে দিয়েছেন। পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির পাশাপাশি তৃণমূল কি এবার তাহলে উত্তর ভারত তথা গোবলয়ের রাজ্যগুলিতে নিজেদের পা ফেলতে চাইছে? পিকে-অভিষেক বৈঠকের পর থেকে সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।
পাশাপাশি, বিরোধী শিবিরকে জোটবদ্ধ করতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) যে প্রচেষ্টা শুরু করেছেন, সেখানে তৃণমূলকেই একেবারে সামনের সারিতে নিয়ে আসার লক্ষ্যে পিকের সঙ্গে এখন থেকে রণকৌশল রচনার কাজ অভিষেক শুরু করে দিলেন, এমন কথাও এদিনের বৈঠক ঘিরে শোনা গিয়েছে। কারণ, ইডির দপ্তর থেকে বেরিয়ে নানা কথার মধ্যেই কংগ্রেসকে নিয়েও উল্লেখযোগ্য মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে অভিষেককে। “কংগ্রেসের মতো আমরা ভয়ে ঘরে বসে থাকব না, বিজেপির বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালী হয়েই লড়ব” বলে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্যে বিরোধী জোটের ক্ষেত্রে সমীকরণ বদলের ইঙ্গিত রয়েছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
তাদের মতে, কংগ্রেস নয়, বিজেপি বিরোধী মুখ হিসাবে তৃণমূল কংগ্রেসই যাতে সবার সামনে থাকে সেই লক্ষ্যপূরণের উদ্দেশ্যেই অভিষেক এখন থেকে কাজ শুরু করে দিতে চাইছেন। কংগ্রেসের (Congress) সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখলেও রাহুল গান্ধীকে তৃণমূল কংগ্রেস যে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ, তা সংসদের বিগত বাদল অধিবেশনে বারবারই চোখে পড়েছে। অধিবেশন চালকালীন বিরোধী শিবিরের বৈঠকে রাহুল হাজির থাকলে তাতে তৃণমূলের কোনও প্রথম সারির নেতাকে বিশেষ চোখে পড়েনি। এবং তা যে সুপরিকল্পিতভাবেই, সেকথা বুঝতে কারও অসুবিধা হয়নি। কংগ্রেস তথা রাহুল নয়, বিরোধী শিবিরের মুখ যাতে মমতাই হন, সেই বিষয়টিই অভিষেকের সঙ্গে পিকের আলোচনার মুখ্য বিন্দু ছিল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.