সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত শুক্রবার ২০০৮ সালের আহমেদাবাদ (Ahmedabad blast) বিস্ফোরণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া ৪৯ জনের মধ্যে ৩৮ জনকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে গুজরাটের (Gujarat) বিশেষ আদালত। একসঙ্গে এতজনের ফাঁসির নির্দেশ এদেশে এই প্রথম। কেন এতজনকে যাবজ্জীবন নয়, প্রাণদণ্ড দেওয়া হচ্ছে আদালত সেই বিষয়টিও পরিষ্কার করে দিয়েছে। আদালতের মতে, দোষীরা ‘মানুষখেকো চিতাবাঘে’র মতোই বিপজ্জনক। তাই এই সিদ্ধান্ত।
রায়ের কপি থেকেই এই কথা জানা গিয়েছে। ঠিক কী জানিয়েছে বিশেষ আদালত? আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, ওই ৩৮ জনেরই ফাঁসির সাজা প্রাপ্য। কেননা তাদের ফের সমাজে ফেরার সুযোগ দেওয়ার অর্থই হল জনতার মাঝখানে ‘মানুষখেকো চিতাবাঘ’ ছেড়ে দেওয়া। বৃদ্ধ, শিশু, তরুণ যে কোনও বয়স, ধর্ম কিংবা জাতের ফারাক না করে যারা নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ঘটায় তাদের এমনই সাজা হওয়া উচিত বলেই মনে করছে আদালত।
বিচারপতি আরও জানিয়েছেন, ”এই ধরনের জঙ্গি কার্যকলাপ যারা চালায়, দেশ ও তার নাগরিকদের শান্তি ও সুরক্ষার জন্য তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়াই একমাত্র পথ।”
কেন বাকি ১১ অভিযুক্তকে ফাঁসি নয়, যাবজ্জীবন দেওয়ার হল তার ব্য়াখ্যাও দিয়েছে আদালত। বলা হয়েছে, এরা মূল চক্রীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। কিন্তু আহমেদাবাদ বিস্ফোরণে তাদের ভূমিকা ফাঁসি দেওয়ার মতো নয়। তবে সেই সঙ্গে আদালত জানিয়েছে, ওই অভিযুক্তদের শেষ জীবন পর্যন্তই যেন কারাবন্দি রেখে দেওয়া হয়।
২০০৮ সালের ২৬ জুলাই ধারাবাহিক বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল আহমেদাবাদ। সেদিন সব মিলিয়ে ৭০ মিনিটের মধ্যে ২১টি জায়গায় বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল। তাতে মৃত্যু হয় ৫৬ জনের। আহত হন ২০০-রও বেশি মানুষ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, এই বিস্ফোরণের যড়যন্ত্র করেছিল ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন নামের এক জঙ্গী গোষ্ঠী। মনে করা হয়, ২০০২ সালে গোধরা অগ্নিকাণ্ডের পরে গুজরাটে যে দাঙ্গা হয়, তারই বদলা নিতে এই নাশকতামূলক চক্রান্ত করেছিল ইসলামপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠীটি। মামলায় অভিযুক্ত ৭৭ জনের মধ্যে ২৮ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। দোষী সাব্যস্ত করা হয় ৪৯ জনকে। তাদের মধ্যে ৩৮ জনকে শোনানো হয়েছে ফাঁসির সাজা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.