সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিট-ইউজির প্রশ্নফাঁস কাণ্ডে অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির। বিরোধীদের চাপের মুখে অর্ধ শতক আগের ‘এমারজেন্সি’কে পালটা হাতিয়ার বানাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। এমনকী লোকসভার স্পিকার এবং রাষ্ট্রপতিও জরুরি অবস্থার সমালোচনায় সরব। এই অবস্থায় বিরোধী শিবিরের হয়ে মাঠে নামলেন ভারতীয় রাজনীতির পুরনো ঘোড়া লালু প্রসাদ যাদব (Lalu Prasad Yadav)। বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দাবি করলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী অনেককে জেলে ভরেছিলেন বটে, তবে কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেননি। ‘এমারজেন্সি’ নিয়ে সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi) সরব হওয়ার পরেই মুখ খুললেন ইন্দিরা আমলে তরুণ বিরোধী নেতা লালু।
এমার্জেন্সি প্রসঙ্গ তুলে বিজেপি যেভাবে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে, তার সমালোচনা করেন সোনিয়া। তাঁর মতে সংবিধানের উপরে আক্রমণ থেকে মনোযোগ সরানোর জন্যই প্রধানমন্ত্রী এই ইস্যুটি টেনে আনছেন। এমনকী স্পিকারও যেভাবে এই প্রসঙ্গ তুলেছেন তাকে ‘আশ্চর্যজনক’ বলে ব্যাখ্যা করে সোনিয়ার মন্তব্য, ”ওঁর অবস্থান কোনও রাজনৈতিক পক্ষে না গিয়ে কঠোর নিরপেক্ষতা বজায় রাখা।” সেই সঙ্গেই কংগ্রেস (Congress) নেত্রী মনে করিয়ে দিয়েছেন, ১৯৭৭ সালের মার্চ মাসে হাত শিবিরকে হারতে হয়েছিল। দেশের জনগণ জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে স্পষ্ট রায় দিয়েছিলেন। কিন্তু তিন বছরেরও কম সময়ে সেই পরাজিত দলটিই ফিরে এসেছিল। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকারের পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সংসদের দুই কক্ষের যৌথ অধিবেশনে ইন্দিরা আমলের জরুরি অবস্থার সমালোচনা করেন।
এদিকে আর জে ডি প্রধান লালুও গেরুয়া শিবিরের ‘এমারজেন্সি’ ভজনার কৌশলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে সাংবাদিক নীলম ভর্মার ‘The Sangh Silence in 1975’ নামের একটি প্রতিবেদন শেয়ার করেন। বিজেপিকে আক্রমণ করে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদিও ১৯৭৫ সালটি দেশের গণতন্ত্রের উপর একটি কালো দাগ। কিন্তু আমরা যেন ভুলে না যাই যে ২০২৪ সালে বিরোধীদের সম্মান করা হয় না। লালু বলেন, “তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী কর্তৃক জারি করা জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলনে জয়প্রকাশ নারায়ণ যে স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করেছিলেন তার আহ্বায়ক ছিলাম আমি। ১৫ মাস জেলে ছিলাম।”
লালু কটাক্ষ করেন, আজকে বিজেপির যে মন্ত্রীরা এমারজেন্সি নিয়ে এত কথা বলছেন, সেই সময় তাঁদের অধিকাংশের নামও শুনিনি। বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দাবি করেন, সেকালে নরেন্দ্র মোদি, জেপি নাড্ডা-সহ এনডিএ মন্ত্রিসভার অধিকাংশই ছিলেন অপরিচিত ব্যক্তি। এর পরেই লালু মন্তব্য করেন, “ইন্দিরা গান্ধী আমাদের অনেককে জেলে ভরেন, কিন্তু তিনি কখনও আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেননি। কিংবা তাঁর মন্ত্রীরা আমাদের ‘দেশবিরোধী’ বলে দেগে দেননি।” যাঁরা সংবিধান রচয়িতা আম্বেদকরের স্মৃতিকে কলুষিত করতে চায়, তাঁদের ইন্ধন দেননি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.