দেবশ্রী সিনহা: রাহুলের নেতৃত্বের প্রতি ঐক্য কংগ্রেসে৷ সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধী ঠিক কবে সভাপতি হবেন তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এবার সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর উপর নির্ভর করছে৷ সোমবার কংগ্রেসের কর্মসমিতির বৈঠকের পর সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, রাহুলকে দলের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ার ব্যাপারে কংগ্রেস কর্মসমিতির সদস্যরা প্রথমবার ঐকমত্যে পৌঁছেছেন৷ এদিন অসুস্থতার কারণে কর্মসমিতির বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী৷ এই প্রথম তাঁকে ছাড়া কর্মসমিতির বৈঠক৷ সেই বৈঠকে অবশ্য নেতৃত্ব দিয়েছেন সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধী৷ এই প্রথম৷ রাহুলের জন্য দল যে এককাট্টা হয়েছে তা সভানেত্রীকে শীঘ্রই জানিয়ে দেওয়া হবে বলে দাবি করেছেন এআইসিসির প্রথম সারির নেতা এ কে অ্যান্টনি৷ অবশ্য পাশাপাশি তিনি বলেন, “সভানেত্রী হিসাবে সোনিয়া গান্ধীর মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷’’
সভানেত্রী হিসাবে সোনিয়ার মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তবে কি দলের শীর্ষ পদের জন্য রাহুলকে আরও এক বছর অপেক্ষা করতে হবে? অন্যদিকে, দলের প্রত্যেকের রাহুলের নামের পাশে সর্মথনের আক্ষরিক অর্থই-বা কী? কংগ্রেস সূত্র জানাচ্ছে, “৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দলের নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা সম্ভব নয়৷ সেক্ষেত্রে, সোনিয়ার এক বছর মেয়াদ বৃদ্ধির প্রক্রিয়াই সহজ৷ তবে সভানেত্রী ও দল যেদিন চাইবেন, সেদিনই রাহুলকে সভাপতি পদ দেওয়া ও নির্বাচনের প্রক্রিয়া পূর্ণ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন৷” কংগ্রেস সূত্রের মতে, “রাহুলকে সভাপতি পদ দেওয়া নিয়ে কংগ্রেসের একাংশের মত, উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের পরেই তার জন্য সঠিক সময়৷ কারণ, দল যদি সেখানে ভাল ফল করতে না পারে তাহলে প্রথমেই রাহুলকে ব্যর্থতার অস্বস্তিতে পড়তে হবে৷” তবে, অন্য অংশের মতে, রাহুলের নামে সর্বসম্মতির পর এবার সবকিছুই নির্ভর করছে সোনিয়া গান্ধীর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের উপর৷ রাজনৈতিক মহলের মতে, এদিনের বৈঠকে সোনিয়ার অনুপস্থিতিতে তাঁর ও রাহুলের নামে ভবিষ্যতে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া নিয়ে যাবতীয় টানাপোড়েন ও জল্পনার অবসান ঘটে৷ রাহুলই যে আগামিদিনে কংগ্রেসকে নেতৃত্ব দেবেন, তার ইঙ্গিত এদিনের বৈঠকের গোড়াতেই পেয়ে যান কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতারা৷
উল্লেখ্য, ২৪ আকবর রোডে সভানেত্রীর অনুপস্থিতিতে রাহুল স্বয়ং এদিনের কর্মসমিতির বৈঠকে নেতৃত্ব দেন৷ বৈঠকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, এ কে অ্যান্টিনি, পি চিদম্বরম, অম্বিকা সোনি, গুলাম নবি আজাদ, মল্লিকার্জুন খাড়গের মতো প্রথম সারির কংগ্রেসের নেতারা উপস্থিত ছিলেন৷ রাহুল বৈঠকের শুরুতেই কেন্দ্রের মোদি সরকারকে আক্রমণ করে বলেন, “এই সরকারের শুধু ক্ষমতার লোভ আছে৷ বর্তমান সরকারের আমলে গণতন্ত্র এক কালো অধ্যায়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে৷’’ পাশাপাশি এক পদ এক পেনশন, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে সরকারের বক্তব্য, সংবাদমাধ্যম নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত, দলিত ও আদিবাসীদের উপর আক্রমণ ইত্যাদি সাম্প্রতিক বিষয়ে আলোচনা হয়৷ আলোচনা হয় আগামী পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কংগ্রেসের রণকৌশল নিয়েও৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.