সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কংগ্রেস সভাপতির পদ ছেড়েছেন। কিন্তু রাজধানীর ময়দান ছাড়েননি। ফলে বিজেপি বিরোধিতায় সকলকে একজোট করতে ফের আসরে সোনিয়া গান্ধী। প্রায় ১৭টি বিরোধী দলকে এককাট্টা করে বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসেন সোনিয়া। এবং সেখানে সমস্ত বিভেদ মুছে জাতীয় স্বার্থে একজোট হওয়ারই ডাক দেন তিনি।
[ অমানবিক ট্যাক্সিচালক! মৃতপ্রায় যুবককে গাড়িতে তুলেও রাস্তায় ফেলে চম্পট ]
বিজেপি বিরোধিতার হাওয়া যে জোরদার হচ্ছে দেশে, তার প্রমাণ বারংবার মিলছে। গুজরাট নির্বাচনের ফলাফল যেন দিশা দেখিয়েছে বিরোধীদের। বোঝা গিয়েছে, সাধারণ মানুষ বিজেপির প্রতি কতটা বীতশ্রদ্ধ। রাজস্থান উপনির্বাচনের নিজেদের হাতে থাকা তিন কেন্দ্রেও ধরাশায়ী হয়েছে বিজেপি। উন্নয়ন থেকে ধর্ম কোন হাওয়াতেই আর নির্বাচনী বৈতরণী সহজে পের হতে পারছে না গেরুয়া শিবির। চলতি বাজেট নিয়েও দেশের অধিকাংশ মানুষ খুশি নন। একদিকে তো মধ্যবিত্তের জন্য তেমন কোনও সুখবর নেই। অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের খুশি করতেও আহামরি কিছু করেনি কেন্দ্র। কৃষকদরদি হিসেবে নিজেদের তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তাও দাবানলে এক বালতি জল দেওয়ার শামিল। ফলে দেশের কোনও শ্রেণিই যে খুশি হয়েছে তা নয়। পদ্মাবত নিয়ে প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তাও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের মনে গভীর রেখাপাত করেছে। এই সব মিলিয়েই বিজেপি বিরোধী হাওয়া জোরদার হয়েছে। তা কাজে লাগাতেই উদ্যোগী সোনিয়া।
[ হিন্দু না মুসলিম? ধর্মের গেরোয় দেড় দিন আটকে বৃদ্ধার সৎকার ]
বৃহস্পতিবারের বৈঠকে প্রায় ১৭টি দল অংশ নেয়। সেখানে সোনিয়া জানান, আঞ্চলিক ক্ষেত্রে দলগুলির রাজনৈতিক মতাদর্শে কিছু ফারাক থাকতে পারে। কিন্তু জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে প্রত্যেককে একজোট হতে হবে। সংসদের ভিতর ও বাইরে এই বিরোধিতার একটা নির্দিষ্ট রূপরেখা থাকা বাঞ্ছনীয়। তাই আঞ্চলিক স্বার্থ ভুলে আপাতত জাতীয় স্বার্থে একজোট হওয়ার কথাই বললেন তিনি। বস্তুত এই একজোট হওয়া বা ফেডারেল ফ্রন্টের কথা বহুদিন আগে থেকেই বলে আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নোট বাতিলের পরেই যখন তিনি দিল্লিতে পৌঁছান, তখন আন্দোলনে সকল বিরোধী দলকেই পাশে চেয়েছিলেন। যদিও তাঁর প্রয়াস পুরোপুরি সফল হয়নি। কিন্তু পরিস্থিতি বদলেছে। ইতিমধ্যে এনডিএ ছেড়েছে শিব সেনা। টিডিপি-র হাবভাবে বুঝিয়েছে তারাও ছাড়বে ছাড়বের দলে। বাজেট পেশের পর রীতিমতো তেলেবেগুনে জ্বলে আছে নাইডু সরকার। মমতা সরকার তো কেন্দ্র বিরোধিতায় বরাবরই এগিয়ে। এই বিরোধী শক্তি একজোট হলে যে গেরুয়া শিবিরের ভিত্তি নড়ে যাবে তা সহজেই অনুমেয়। তা করতেই এবার উঠেপড়ে লেগেছেন সোনিয়া। যদিও বৈঠকের মধ্যেই দাবি ওঠে মমতাকে সামনে রেখেই এই বিরোধী জোট গড়ে তোলা হোক। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়ানও। ফলত ফেডারেল ফ্রন্টের রূপরেখা আবারও উজ্জ্বল হচ্ছে। তবে তা কতদূর বাস্তবে পরিণত হবে, আর নেতৃত্বে কে থাকবেন, সে উত্তর অবশ্য সময়ের গর্ভেই তোলা। তবে আগামী লোকসভা ভোটের বেশ কিছুটা আগে থেকেই সোনিয়ার দৌত্য বুঝিয়ে দিল তিনি কংগ্রেসের রাশ ছাড়লেও বিজেপি বিরোধিতায় একইরকম সিরিয়াস। গুজরাট, রাজস্থান, বাংলার ফলে তিনি ধরতে পেরেছেন মানুষের পালস। তাই হাওয়া গরম গরম থাকতে থাকতে সবাইকে এক ছাতার তলায় আনতে চান।
[ লম্বায় ৮ ফুট ২ ইঞ্চি, অতিকায় ‘কাবুলিওয়ালা’কে দেখতে মেলা ভিড় সিউড়িতে ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.