সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনি প্রয়াত হয়েছেন বেশ কয়েক বছর। কিন্তু সেই সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের নাম সংসদে বেশ কয়েকবার ঘুরেফিরে উঠে এল শুক্রবার। তাঁর সিদ্ধান্তকে অস্ত্র করেই সওয়াল করলেন বিজেপি-এনডিএ সরকারের স্পিকার, সংসদীয় মন্ত্রী, শাসক শিবিরের লোকজন। প্রয়াত সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে ঢাল করে ঘুষের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন তোলার মতো মারাত্মক অভিযোগে কাঠগড়ায় ওঠা মহুয়া মৈত্রকে (Mahua Moitra) সংসদে আত্মপক্ষ সমর্থনে বলতে না দেওয়ার সিদ্ধান্তের সমর্থনে সওয়াল করল শাসক শিবির।
কৃষ্ণনগরের তৃণমূল এমপির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখে সংসদের এথিক্স কমিটি সুপারিশ করেছে তাঁর সাংসদ পদ খারিজ করার। সেই সুপারিশ সম্বলিত রিপোর্ট শুক্রবার পেশ হওয়ার পর সংসদে প্রবল বাদানুবাদ, উত্তাপ ছড়ায়। বিরোধী শিবিরের দলনেতা অধীর চৌধুরী সমেত তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়রা বারবার দাবি করেন, যে সাংসদের বিরুদ্ধে এহেন ব্যবহার সংসদীয় রীতিবহির্ভূত, যাঁর বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজকর্মের অভিযোগ উঠেছে, তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনে বলতে দেওয়া হোক, নয়তো ন্যয়বিচার হবে না। মহুয়া মৈত্রকে বলতে দিলে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়বে না, বলেও তোপ দাগেন কংগ্রেস সাংসদ মনীশ তিওয়ারি।
কিন্তু সংসদীয় বিষয়কমন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী, স্পিকার ওম বিড়লারা টেনে আনেন প্রয়াত স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কথা। তাঁরা যুক্তি দেন, সোমনাথবাবু স্পিকার থাকাকালে টাকার বিনিময়ে প্রশ্নকাণ্ডে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, কোনও এমপির বিরুদ্ধে সংসদের রীতিনিয়ম বহির্ভূত কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠলে তিনি এথিক্স কমিটিতে বলতে পারেন, সেখানে আত্মপক্ষ সমর্থনে সওয়াল করতে পারেন, কিন্তু সংসদে বলতে পারেন না।
২০০৫ সালের টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন তোলার কাণ্ডে সোমনাথবাবু রায় দিয়েছিলেন, অভিযুক্ত এমপিরা একবার এথিক্স কমিটির সামনে বলেছেন, কমিটি তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্য বলে জানিয়েছে। দ্বিতীয়বার তাঁদের সামনে সংসদে সওয়াল করার সুযোগ এবং প্রয়োজন নেই। সেবারও টাকার বিনিময়ে প্রশ্নকাণ্ডে অভিযুক্তদের সংসদে বলতে দেওয়ার দাবি উঠেছিল। কিন্তু সোমনাথবাবু তা খারিজ করেন। ঘটনাচক্রে সেবার অভিযুক্তদের এমপিদের মধ্যে বিজেপির ৬, কংগ্রেসের একজন ছিলেন।
শুক্রবার এতগুলো বছর বাদে একসময়ের সিপিএম সাংসদ, পরবর্তীকালে স্পিকার হওয়া সোমনাথবাবুর যুক্তির প্রতিধ্বনি করল শাসক বিজেপি। সুদীপ বলেন, আমার দলের মুখপাত্র হবেন মহুয়া মৈত্র স্বয়ং কেননা অভিযোগটা তাঁর বিরুদ্ধেই। তাঁর বিরুদ্ধে অবিশ্বাস্য অভিযোগ তোলা হয়েছে। সত্যি না মিথ্যে, সেটা তিনিই বলুন। কল্যাণ সওয়াল করেন, অভিযুক্তের বক্তব্য শোনা হলেই ন্যয়বিচার হতে পারে। পালটা বিজেপি শিবির থেকে দাবি উড়িয়ে বলা হয়, এথিক্স কমিটিতে অভিযুক্ত সাংসদকে বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি সেখানে গিয়ে তার বদলে অসংসদীয়, অভব্য আচরণ করে বেরিয়ে আসেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.