Advertisement
Advertisement

ফের কারাটকে মাত, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল ইয়েচুরিই

বাংলা থেকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে সুজন চক্রবর্তী, রবীন দেব-সহ চার নতুন মুখ।

Sitaram Yechury re-elected as CPM general secretary
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:April 22, 2018 3:14 pm
  • Updated:November 1, 2018 2:42 pm  

বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, হায়দরাবাদ: কারাটপন্থীদের বেলাইন করে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ইস্যুতে আগেই জয় এসেছিল। কিন্তু আসল লড়াইটা তখনও বাকি ছিল। পার্টিতে নিজের পদ অটুট রাখা ও দল ভারী করাই ছিল সীতারাম ইয়েচুরির লক্ষ্য। রবিবার সেই লড়াইতেও শেষ হাসি হাসলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক। পদ তো ধরে রাখলেনই, তার সঙ্গে পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটিতেও বেঙ্গল লবিকে আরও মজবুত করতে সক্ষম হলেন ৬৫ বছরের দুঁদে রাজনীতিবিদ। কারাট লবির সব বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে পার্টিতে নিজের ক্ষমতা কায়েম রাখলেন সীতারাম। ফের দলের সাধারণ সম্পাদ নির্বাচিত হলেন তিনি। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় কমিটিতে ১০০ শতাংশ অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত ছিল সুজন চক্রবর্তীর। রবিবার ২২তম পার্টি কংগ্রেসের শেষে সুজন চক্রবর্তীর পাশাপাশি রবিন দেব, অমিয় পাত্র এবং আভাস রায়চৌধুরি সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পেলেন। বাদ গেলেন গৌতম দেব, মদন ঘোষ ও দীপক দাশগুপ্ত। পলিটব্যুরোতেও দল ভারী করলেন সীতারাম। নবনির্বাচিত ১৭ সদস্যর পলিটব্যুরোয় বাংলা থেকে ঢুকলেন তপন সেন ও নীলোৎপল বসু।

[জোড়া লড়াই শুরু ইয়েচুরির, বসে নেই কারাট-পক্ষও]

সংখ্যালঘু হয়ে পার্টি চালানো কত কঠিন, গত তিনবছরে হাড়েহাড়ে টের পেয়েছেন সীতারাম। এ রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতায় আলিমুদ্দিনের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ইয়েচুরি। রাহুল গান্ধীর সঙ্গে তিনিই গোপনে কথাবার্তা চালান। গোটাটাই কেন্দ্রীয় কমিটি বা পলিটব্যুরোর অনুমোদন ব্যতিরেকে। রাজনৈতিক মহলের গুজব, সেই ‘দোষে’-ই কারাট ও কেরল লবি প্রবল আপত্তি জানিয়ে তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যসভায় যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেয় সীতারামের। প্রকাশ কারাটদের সেই বাধাদানে এই রাজ্য থেকে রাজ্যসভায় কোনও সদস্য পাঠাতে পারেননি। পার্টির দুই শীর্ষ কমিটিতে সংখ্যালঘু হওয়ার কারণেই ইয়েচুরির এহেন যাত্রাভঙ্গ। এবার তাই পালে হাওয়া বুঝে দুই কমিটিতেই ঘনিষ্ঠদের অন্তর্ভুক্তি চাইছিলেন সাধারণ সম্পাদক। এই লড়াইতেও তাঁর ভরসা ছিল বঙ্গ ব্রিগেড। সুজন, রবীনদের অন্তর্ভুক্তিতে জয় হয়েছে সীতারামের। বাংলার বিদগ্ধ রাজনৈতিক মহলের টিপ্পনি, অবশেষে ব্যাটে বলে হল রবীন দেবের। নবনির্বাচিত ৯৫ জন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যর মধ্যে ১৫টি নতুন মুখ। সুজন, রবীন, অমিয় পাত্র ও আভাসরা তাঁদের মধ্যে অন্যতম। ১৭ সদস্যের পলিটব্যুরোতে বাংলা থেকে নির্বাচিত হলেন তপন সেন ও নীলোৎপল বসু। বাসুদেব আচারিয়া সিপিএমের কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল কমিশনের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন এবং পদাধিকারবলে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।

Advertisement
[নিজের পদ ধরে রাখা আর দল ভারী করাই এখন সীতারামের লক্ষ্য]

ইয়েচুরির বিজয়রথ থামাতে উলটোদিকে থেমে ছিল না কারাট শিবিরও। ইয়েচুরিকে সরানোই তাঁদের এক ও একমাত্র লক্ষ্য ছিল। কেরল শিবিরের হয়ে সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে ছিলেন বৃন্দা কারাট, মানিক সরকার ও বিভি রাঘবুলু। যার মধ্যে কঠিনতম প্রতিপক্ষ ছিলেন মানিক সরকার। প্রকাশের সাহায্য নিয়ে ইতিমধ্যেই পার্টি কংগ্রেসের সভাপতির আসনে বসেছেন মানিক। পার্টি কংগ্রেসের বক্তাদের নিয়ন্ত্রণ করছেন তিনি। অভিযোগ উঠেছে পক্ষপাতিত্বের। শনিবার পার্টি লাইন নিয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে আসরে নামেন প্রকাশ জায়া বৃন্দা কারাট। তিনি জানান, পার্টি লাইনে আদৌ কোনও পরিবর্তন হয়নি। অর্থাৎ সিপিএম আজও কংগ্রেস সম্পর্কে পুরন অবস্থানেই রয়েছে। ভবিষ্যতে জোটের সম্ভাবনা উিড়য়ে দেন তিনি। বৃন্দার বিভ্রান্তি ছড়ানোর খবর সীতারাম ইয়েচুরি ও সূর্যকান্ত মিশ্রর কানে পৌঁছতেই আসরে নামান হয় আরেক পলিটব্যবুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিমকে। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “পার্টি লাইনে যে পরিবর্তন হয়েছে তা স্টিয়ারিং কমিটির তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে স্পষ্ট।” শনিবার পলিটব্যুরোর দুই সদস্যের পরস্পর বিরোধী বক্তব্যেই থেকে স্পষ্ট হয় আগামিদিনে কারাট বনাম ইয়েচুরির লড়াই জারি থাকবে। তার রেশ চলল পার্টি কংগ্রেসের শেষ দিনেও। কারাট ঘনিষ্ঠ অন্ধ্রের প্রতিনিধি জি মমতা সরাসরি সেলিমকে পার্টি থেকে বহিষ্কারের দাবি তোলেন।

[জল্পনার অবসান, কারাটকে থামিয়ে কংগ্রেসের হাতেই ভরসা রাখল ইয়েচুরি শিবির]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement