সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৭৩ তম স্বাধীনতা দিবসে এই প্রথম দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হল ওড়িশার বালিমেলা শহরের স্বভিমান এলাকায়। ওড়িশার কুখ্যাত মাওবাদী নেতা আরকে’র আস্তানা বলে পরিচিত ওই জায়গায় প্রচণ্ড সক্রিয় মাওবাদীরা। গত ছ’দশক ধরে মালকানগিরির ওই এলাকার ১৫০ টির বেশি গ্রামে দেশের স্বাধীনতা দিবসে উড়ত না তেরঙ্গা পতাকা। ওড়িশার মাওবাদী আন্দোলনের আতুঁড়ঘর বলে পরিচিত ওই এলাকায় ঢুকতেও ভয় পেতেন পুলিশকর্মী থেকে নিরাপত্তারক্ষীরা। কিন্তু, সেই জায়গাতেই গত ১৫ তারিখ জাতীয় পতাকা উত্তোলন করলেন ওড়িশা পুলিশের ডিআইজি পদমর্যাদার আধিকারিক ৪৫ বছরের হিমাংশু কুমার লাল।
ওড়িশার ‘সিংহম’ নামে পরিচিত হিমাংশু কুমার কয়েকমাস আগেই মাওবাদী অধ্যুষিত মালকানগিরি-সহ ওড়িশার দক্ষিণ-পশ্চিম রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। তারপর থেকে এই আইপিএস আধিকারিক ওড়িশার ওই অঞ্চলে মাওবাদীদের নিষ্ক্রিয় করার কাজে যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি ওই এলাকার সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নেও সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন। এর ফলে স্থানীয় জনগণের মধ্যে কয়েকদিনের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি। তাঁদের মনে আশার আলো জাগিয়েছেন। যার ফলে স্বাধীনতার ৭২ বছর পর এই প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা সম্ভব হল ওড়িশার ওই অঞ্চলে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘এর আগে কোনওদিন মাওবাদীদের ভয়ে এই এলাকায় স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করতে পারিনি আমরা। তাই এবছর জাতীয় পতাকা উত্তোলনের ঘটনায় আমরা খুব অবাক ও খুশি হয়েছি। এই ঘটনার পরেই আমাদের মধ্যে বিশ্বাস জন্মেছে যে আগামীতে পরিস্থিতি আরও ভাল হবে। এই এলাকার উন্নয়নের জন্য যথেষ্ট পরিশ্রম করছেন হিমাংশুবাবু। তাঁর সক্রিয়তার জন্যই এই এলাকায় মাওবাদীদের রোজগারের প্রধান অবলম্বন গাঁজা চাষ বন্ধ হয়েছে। এর ফলে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মাওবাদীদের কাজকর্ম। আগামিদিনে গোটা এলাকা থেকে মাওবাদী আতঙ্ক তিনি দূর করতে পারবেন বলেই বিশ্বাস করি আমরা।’
এপ্রসঙ্গে ওড়িশার ‘সিংহম’ হিমাংশু কুমার বলেন, ‘প্রতিটি দিনই আমার কাছে নতুন একটা দিন। আর প্রতিটি নতুন পোস্টিং মানুষকে আরও ভাল জীবন দেওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করে আমাকে। একটা নতুন চ্যালেঞ্জের জন্ম দেয়। আমার জন্য যদি একজন মানুষের মুখে হাসি ফুটে ওঠে কিংবা তাঁর স্বপ্নপূরণ হয়। তাহলে আরও বেশি অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত হয়ে পড়ি আমি।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.