সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গ ও চিনের মধ্যে ‘স্যান্ডউইচ’ হতে চায়না সিকিম, এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিং। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, গত ৩০ বছরে দার্জিলিংয়ে অশান্তির জন্য হিমালয়ের কোলে অবস্থিত এই ছোট্ট রাজ্যের কোষাগারের প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সিকিমের দু’টি হাইওয়েই উত্তরবঙ্গের মধ্যে দিয়ে যায়। দার্জিলিংয়ে অবরোধের জন্য পর্যটকরা সিকিম পর্যন্ত পৌঁছতে পারছেন না, ফলে রাজধানী গ্যাংটকের পর্যটন শিল্প মার খাচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন চামলিং।
সিকিমের নামচিতে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে বুধবার মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যেই বলেন, “সিকিমের মানুষ স্বপ্নেও ভাবেননি যে, ভারতের সঙ্গে যুক্ত হলে বাংলা ও চিনের দ্বৈরথের মধ্যে পড়তে হবে।” ১৯৭৫-এ ভারতের ২২তম রাজ্য হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে হিমালয়ের কোলে অবস্থিত সিকিম। ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের মাধ্যমে দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের সঙ্গে যুক্ত ওই রাজ্য। গত ১৫ জুন থেকে দার্জিলিংয়ে অনির্দিষ্টকালের বনধের কারণে সিকিমের স্বাভাবিক জনজীবন ও পর্যটন শিল্প বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেন চামলিং।
তিনি বলছেনন, “নাথুলা সীমান্তে কোনও সমস্যা হতে পারে…সেখানে অশান্তি হতে পারে। কিন্তু শিলিগুড়ির অশান্তিতেও আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, তাঁরা খাদ্যশস্য ও পেট্রলের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও সিকিম পর্যন্ত পৌঁছতে দেবে না। আমাদের রাজ্যের মানুষকে শিলিগুড়িতে হেনস্তা হতে হয়েছে। আমাদের মালপত্র আনতে দেওয়া হচ্ছে না।” মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক সিকিমের ‘লাইফলাইন’। কিন্তু গোর্খাল্যান্ড চেয়ে বিক্ষোভ দেখানোয় গত তিন দশকে সিকিমের প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। দার্জিলিংয়ের অশান্তির জন্য সিকিমের উন্নয়নের গতি রুদ্ধ হচ্ছে বলেও প্রকাশ্য জনসভায় মন্তব্য করেছেন সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী।
সম্প্রতি সিকিম সীমান্তে ভারতীয় সেনার সঙ্গে চিনা সেনার দ্বন্দ্বের ফলে টানটান পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্য গভীর ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। চিনের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা মিটে যাবে, এমন কোনও ইঙ্গিত মিলছে না এখনই। আবার দার্জিলিংয়েও গোর্খাদের অনির্দিষ্টকালের বনধে সিকিমে খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে ইতিমধ্যেই। পাহাড়ি এলাকায় গাড়ি ছাড়া বেশিদূর যাতায়াত প্রায় অসম্ভব। পেট্রল মিলছে না কোথাও। বাধ্য হয়ে রাজ্য সরকারকেই রেশনের সামগ্রীর মধ্যে বিভিন্ন পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য বিলি করতে হচ্ছে। জোড়া অশান্তির মধ্যে পর্যটকরাও এখন আর দার্জিলিং বা সিকিমমুখো হচ্ছেন না। ফলে ক্ষতির পরিমাণ বেড়েই চলেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.