সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেরলের বন্যা দুর্গতরা চার্চে গিয়ে রবিবারের প্রার্থনা করতে চেয়েছিলেন। টানা দু’দিন কাজ করে চার্চটিকে ব্যবহারযোগ্য করে তুললেন শিখ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা। স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্যোগে সহায় সম্বলহীন মানুষগুলির মুখে হাসি ফুটল। বন্যাবিধ্বস্ত কেরলে ত্রাণের কাজে এসে সম্প্রীতির নয়া নজির গড়ল শিখ সেচ্ছাসেবী সংস্থা খালসা এড। ঘটনাটি কেরলের আলেপ্পি এলাকার নিরাত্তুপুরমের সেন্ট জনস মারাথোমা চার্চের।
উল্লেখ্য, ভয়াবহ বন্যায় শহর ডুবেছে। খ্রিস্টান প্রধান আলেপ্পিতে মারাথোমা চার্চও জলের তলায় চলে গিয়েছিল। দিন তিনেক হল রাজ্যের সমস্ত জায়গা থেকে জল নামতে শুরু করেছে। ত্রাণশিবির থেকে বাড়িতে ফিরতেই মন খারাপের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু। সাধের ফুলের বাগান, সাজানো বাড়ি, সখের ঘরকন্যা সবই প্রায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে। রবিবার প্রভু যীশুর কাছে সাপ্তাহিক প্রার্থনার দিন। গত কয়েক সপ্তাহের প্রাকৃতিক দুর্যোগ চার্চে গিয়ে প্রার্থনার সুযোগ পাওয়া যায়নি। নিরাত্তুপুরমের ধর্মপ্রাণ বাসিন্দারা ভেবেছিলেন রবিবার প্রার্থনায় যাবেন। কিন্তু বাড়ি থেকে জল নামলেও চার্চ তখনও বন্যার জলে থৈথৈ করছে। ইচ্ছে থাকলেও প্রার্থনার উপায় নেই। এদিকে ত্রাণশিবিরের বাসিন্দাদের মুখে গরম খাবার তুলে দিতে পাঞ্জাব থেকে ২২ জন সদস্য নিয়ে কেরলে এসেছেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সালসা এড। সংস্থার কর্মীরা প্রতিদিন ১৩ হাজার বাসিন্দার মুখে উপাদেয় খিচুড়ি তুলে দিচ্ছেন। শুক্রবার তাঁরা খাবার দিতে এলেই নিজেদের দুর্গতির কথা জানান বাসিন্দারা। সেইসঙ্গে রবিবারের প্রার্থনার জন্য চার্চ পরিষ্কারের অনুরোধও করেছিলেন। এই অনুরোধে বিন্দুমাত্র ক্ষুণ্ণ হননি সালসা এডের কর্মীরা। শুক্রবার থেকেই তাঁরা সেন্ট জনস মারাথোমা চার্চটিকে সাফসুতরো করার কাজে লেগে পড়েন। ১৪ জন স্বেচ্ছাসেবীর ২৪ ঘণ্টার প্রচেষ্টায় সম্পূর্ণ হল কাজ। রবিবার সকালে ঝকঝকে তকতকে চার্চ দেখে আপ্লুত বাসিন্দারা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীদের কৃতজ্ঞতায় ভরিয়ে দিয়েছেন।
বাসিন্দাদের হাসিমুখ দেখে ক্লান্তি ভুলে গিয়েছেন সালসা এডের স্বেচ্ছাসেবকরা। সংস্থার ডিরেক্টর অমরপ্রীত সিং বলেন, স্থানীয় বাসিন্দার চার্চে প্রার্থনায় যেতে পারছিলেন না। আমাদের কর্মীরা খবর পেয়েই গোটা চার্চটিকে পরিচ্ছন্ন করে দিয়েছেন, যাতে বাসিন্দাদের প্রার্থনায় কোনও ব্যাঘাত না ঘটে। বিপর্যয়ের দিনে সম্প্রীতির এহেন নজিরে ধন্য ধন্য পড়েছে আলেপ্পিতে। কর্মীদের কৃতিত্বে খুশি সালসা এড কর্তৃপক্ষও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.