সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এয়ারস্ট্রাইকের ফলে খতম হওয়া জঙ্গিদের মৃতদেহ দেখতে চাইল পুলওয়ামাতে শহিদ হওয়া দুই জওয়ানের পরিবার। ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বালাকোটে জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গিগোষ্ঠীর ট্রেনিং ক্যাম্পে এয়ারস্ট্রাইক করে ভারতীয় বায়ুসেনা। এরপর থেকেই খতম জঙ্গিদের সংখ্যা নিয়ে টানাপোড়েন চলছে বিরোধী ও সরকারপক্ষের মধ্যে। এরই মধ্যে এবার খতম হওয়া জঙ্গিদের মৃতদেহগুলো তাদের দেখানো হোক বলে দাবি জানাল উত্তরপ্রদেশের দুই শহিদের পরিবার।
ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখ জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামার অবন্তিপোরায় সিআরপিএফ কনভয়ের হামলা চালায় জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গিরা। এর জেরে শহিদ হন উত্তরপ্রদেশের শামলি জেলার প্রদীপ কুমার ও মৈনপুরী জেলার রাম ভাকিল। এর বদলা নিতে গত পঞ্চাশ বছরে এই প্রথম পাকিস্তানের মাটিতে গিয়ে জইশ-ই-মহম্মদের ট্রেনিং ক্যাম্পে এয়ারস্ট্রাইক চালায় ভারতীয় বায়ুসেনা। এরপরই কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এয়ারস্ট্রাইক সফল হয়েছে বলে দাবি করার পাশাপাশি প্রচুর জঙ্গি খতম হয়েছে বলেও জানানো হয়। সরকারিভাবে এখনও পর্যন্ত খতম জঙ্গিদের সংখ্যা কত তা জানানো না হলেও মোদি সরকারের মন্ত্রীরা বিভিন্ন মন্তব্য করতে থাকেন। মৃত জঙ্গির সংখ্যা ২৫০ বলেও একটি জনসভায় মন্তব্য করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।
কিন্তু, বিদেশি সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরকে হাতিয়ার করে মৃত জঙ্গিদের সংখ্যা সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হোক বলে দাবি জানাতে থাকে বিরোধীরা। এর প্রেক্ষিতে বিরোধীরা সেনাবাহিনীর মনোবল ভাঙতে চাইছে বলে অভিযোগ জানান বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে জটিলতা তৈরি হচ্ছে দেখে বায়ুসেনার পক্ষ থেকে জানানো হয় যে লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করা তাদের কাজ, দেহ গোনা নয়। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে শাসক ও বিরোধীদের মধ্যে তরজা যখন তুঙ্গে তখন এয়ার স্ট্রাইকের নিশ্চিত প্রমাণ চাইল দুই শহিদের পরিবার।
মৈনপুরীর বাসিন্দা রাম ভাকিলের বোন রাম রক্ষা বলেন, “পুলওয়ামার ঘটনা পর আমাদের জওয়ানদের কারওর হাত, কারওর ক্ষতবিক্ষত দেহ ছড়িয়ে পড়ে থাকতে দেখেছিলাম। এবার ওই হামলার দায় যারা স্বীকার করেছিল তাদের কারওর দেহাংশ দেখতে চাই। আমি নিশ্চিত যে স্ট্রাইক হয়েছে। কিন্তু, সেটা কোথায় করা হয়েছে? এর কোনও প্রমাণ আছে? যদি না উপযুক্ত কোন প্রমাণ থাকে তাহলে আমরা কীভাবে বিষয়টি মেনে নেব? পাকিস্তান যেখানে বলছে কোন ক্ষতি হয়নি তখন কোনও প্রমাণ ছাড়া আমরা বিষয়টি সত্যি বলে কীভাবে মেনে নেব? জঙ্গিদের দেহ বা এই সংক্রান্ত কোন প্রমাণ পেলেই একমাত্র আমরা শান্তি পাব। তৃপ্তি পাব এই ভেবে যে আমার ভাইয়ের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়া হয়েছে।”
[নৌসেনা ঘাঁটির উপর সন্দেহভাজন ড্রোন, ছড়াল চাঞ্চল্য]
রাম ভাকিলের বোনের মতো একই দাবি জানিয়েছেন শামলীর বাসিন্দা প্রদীপ কুমারের মা আশি বছরের সুলেলতা। তিনি বলেন, “আমরা সন্তুষ্ট নই। আমাদের অনেক ছেলে মারা গিয়েছে। কিন্তু, ওদের কোনও মৃতদেহ আমরা দেখিনি। এমনকী ওদের উপর হামলার সঠিক খবরও নেই। সত্যিটা আমরা টিভিতে দেখতে চাই। আমাদের ঘরে বসে শুনতে চাই। মৃত জঙ্গিদের দেহ দেখতে চাই আমরা।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.