সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পেট্রোল পাম্পের পর এবার বড় দোকান থেকে মিলবে নগদ ২০০০ টাকা৷ শনিবার থেকেই মেট্রো শহরগুলির নির্দিষ্ট কয়েকটি বড় দোকানে এই নিয়ম চালু হচ্ছে৷ সেখান থেকে প্রতিদিন মিলবে ২০০০ টাকা করে৷ বড় দোকান, শপিং মল বা শোরুম- যেখানে কোনও ব্যাঙ্কের পিওএস মেশিন রয়েছে, সেখানে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে মিলবে এই নগদ টাকা৷ এমনটাই জানানো হয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে৷ গতকাল থেকে দেশের প্রায় ২৫০০ হাজার পেট্রোল পাম্পেও একই নিয়মে মিলছে ২০০০ টাকা৷ ব্যাঙ্ক বা এটিএমের সামনে গ্রাহকদের লম্বা লাইনে দাঁড়ানোর হাত থেকে মুক্তি দিতেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই নয়া সিদ্ধান্ত৷
অন্যদিকে, নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের জেরে গত এক সপ্তাহের মধ্যে দু’বার সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল কেন্দ্র৷ একই সঙ্গে কলকাতা হাই কোর্টও শীর্ষ আদালতের সুরেই কেন্দ্রকে তিরস্কার করেছে৷ নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবিতে দায়ের হওয়া একটি মামলায় শুক্রবার শীর্ষ আদালত জানায়, নোট বাতিলের জেরে এক সংকটজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ এই পরিস্থিতি বহাল থাকলে যে কোনও সময় দেশে দাঙ্গা লেগে যেতে পারে৷ একই সঙ্গে নরেন্দ্র মোদি সরকারের কাছে শীর্ষ আদালত জানতে চায়, ১০০ টাকার নোট তো বাতিল করা হয়নি৷ তা হলে সেই টাকা গেল কোথায়? ২৫ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে৷ একই সঙ্গে হাই কোর্টে নোট বাতিল সংক্রান্ত যে মামলাগুলি চলছে সেগুলির উপর কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করতে অস্বীকার করে শীর্ষ আদালত৷ অন্যদিকে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি গিরিশ গুপ্ত কেন্দ্রের কাছে জানতে চান, মানুষের হয়রানি কমাতে কেন্দ্র কী ব্যবস্থা নিয়েছে?
নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে যে সব মানুষকেই অসুবিধার মুখে পড়তে হচ্ছে সে কথা স্বীকার করে নেন সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর৷ শুক্রবার শুনানি শুরু হলে প্রধান বিচারপতি বলেন, “৫০০, ১০০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা হচ্ছে৷ এ থেকেই বোঝা যায় দেশে কী ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে৷ সরকার ৫০০, ১০০০ টাকার নোট বাতিল করেছে ঠিক আছে৷ কিন্তু ১০০ টাকার নোট কোথায় গেল? কেন এটিএমগুলিকে আগে থেকে সংস্কার করা হয়নি?” উত্তরে সরকার জানায়, এটিএমগুলিতে নতুন প্রযুক্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷ বর্তমানে এটিএমে একটিই ড্রয়ার কার্যকর রয়েছে৷ সেখানে শুধুমাত্র ১০০ টাকার নোট রয়েছে৷ এখনও সব জায়গায় ৫০০ টাকার নোট পৌঁছয়নি৷ আবার বহু এটিএমে নতুন নকশার ৫০০ টাকার জন্য ড্রয়ার তৈরি হয়ে ওঠেনি৷ সে কারণেই মানুষকে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে৷ প্রধান বিচারপতির বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে সরকার আরও জানায়, কর ফাঁকি এবং জাল টাকা রুখতে এবং কালো টাকা বাজেয়াপ্ত করতেই নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ পাশাপাশি গত কয়েকদিনে সাধারণ মানুষের সমস্যা লাঘব করতে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও সরকার জানায়৷
অন্যদিকে, কলকাতা হাই কোর্টে দায়ের হওয়া দু’টি জনস্বার্থের মামলায় এদিন এক সঙ্গে শুনানি হয়৷ এই শুনানিতে কেন্দ্রের উদ্দেশে একাধিক প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি গিরিশ গুপ্ত৷ তিনি কেন্দ্রের কাছে জানতে চান, মানুষের হয়রানি কমাতে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে? অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল কৌশিক চন্দ জানান, এটিএমগুলি থেকে এক লপ্তে ২০০০ টাকা তোলা যাচ্ছে৷ ২ হাজার টাকা তোলা যাচ্ছে ব্যাঙ্ক থেকে৷ প্রধান বিচারপতি বলেন, “আগে এটিএমগুলি থেকে ২৫০০ টাকা ও ব্যাঙ্কগুলি থেকে ৪৫০০ টাকা তোলা যাচ্ছিল৷ এখন টাকা তোলার পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ার মানে টাকার পর্যাপ্ত জোগান নেই৷ নোট বাতিল ঘোষণার পর থেকে কেন্দ্র বারবারই সিদ্ধান্ত বদল করে চলেছে৷ এর থেকে এটাই স্পষ্ট হয় যে, উপযুক্ত পরিকল্পনা ছাড়াই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ আগে থেকে কোনও হোমওয়ার্ক না করেই ঘোষণা করা হয়েছে৷” তবে সুপ্রিম কোর্টের মতোই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনও স্থগিতাদেশ জারি করেনি হাই কোর্ট৷ তবে গিরিশ গুপ্ত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “চেক না নেওয়ায় হাসপাতালগুলিতে মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন৷ হয়রানি রুখতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.