Advertisement
Advertisement

Breaking News

যোধপুর জেলে জামাই আদরে আফরাজুল কাণ্ডের খলনায়ক শম্ভুলাল

রাজস্থান সরকারকে রিপোর্ট তলব সুপ্রিম কোর্টের।

Shambhu lal's luxurious in Jail
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:December 21, 2018 11:17 am
  • Updated:December 21, 2018 11:17 am  

শুভঙ্কর বসু: দু’হাতে উদ্যত কুড়ুল। তাড়া করে একের পর এক কোপ। হাতজোড় করে প্রাণভিক্ষা চেয়েও মেলেনি। রক্তাক্ত দেহে তেল ঢেলে জ্যান্ত জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল মানুষটাকে শেষপর্যন্ত।

গত ডিসেম্বরে রাজস্থানের মাটিতে মালদহের কালিয়াচকের আফরাজুল খানকে হত্যার সেই রোমহর্ষক ভিডিও দেখে শিউরে উঠেছিল গোটা দেশ। ‘লাভ জেহাদের’ দোহাই দিয়ে আফরাজুলকে জ্যান্ত জ্বালিয়ে মেরেছিল রাজস্থানের রাজসামন্দের যুবক শম্ভুলাল রেগার। আর খুনের সেই ‘লাইভ ভিডিও’ ক্যামেরাবন্দি করেছিল চোদ্দো বছর বয়সি শম্ভুলালের ভাইপো। ‘লাভ জেহাদ’ নিয়ে সতর্কবার্তাও শোনা গিয়েছিল ভিডিওর শেষে। ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিওর সূত্র ধরেই নড়েচড়ে বসে রাজস্থান প্রশাসন। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফেও ঘটনার তীব্র নিন্দা করে শম্ভুলালের কঠোর শাস্তির দাবি তোলা হয়। অবশেষে বিশেষ টিম গঠন করে তল্লাশি চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় শম্ভুলালকে। তারপর থেকেই শম্ভুলালের দিন কাটছে যোধপুর জেলে।

Advertisement

[‘হনুমান মুসলমান ছিলেন’, বিতর্কে বিজেপি নেতা]

জেলে বন্দি ঠিকই! কিন্তু শম্ভুলালের দিন কাটছে রীতিমতো জামাই আদরে। তারপরের ছবিটা কিন্তু আমূল বদলে গিয়েছে! কারণটা, সেই ‘ভাইরাল ভিডিও’। যার সৌজন্যে শম্ভু এখন হিরো! ‘খ্যাতি’ এতটাই বেড়েছে যে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে শম্ভুলালকে আগ্রা কেন্দ্রের প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েও ফেলেছে ‘উত্তরপ্রদেশ নবনির্মাণ সেনা’ নামে একটি রাজনৈতিক দল। সব ঠিক থাকলে জেলবন্দি অবস্থাতেই লড়বে শম্ভুলাল। গ্রেপ্তারির পর শম্ভুর ঠিকানা হয় যোধপুর জেল। অভিযোগ, এই যোধপুর বসেই যাবতীয় কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে শম্ভুলাল। জেলেই মিলছে সমস্ত সুবিধা। টিভি, মোবাইল, খাট, বিছানা সবই হাতের কাছে তার। শম্ভুলালের প্রভাব এতটাই যে জেলে বসেই আরও একটি ভিডিও ভাইরাল করেছে সে। যে ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে কানে হেডফোন দিয়ে সাম্প্রদায়িক ভাষণ দিচ্ছে শম্ভুলাল। অনুশোচনার লেশমাত্র তো নেই-ই, বরং আফরাজুলকে খুন করার জন্য ভিডিওতে বেশ গর্বিত দেখিয়েছে। ভিডিওটিতে লাভ জেহাদিদের ফের সাবধান করতে শোনা গিয়েছে শম্ভুলালকে। এবং আগেরটার মতো মুহূর্তেই ভাইরাল হয়েছে এই ভিডিওটিও।

[‘টাইগার আভি জিন্দা হ্যায়’, হেরেও আশ্বাস শিবরাজের]

এহেন পরিস্থিতিতে যোধপুর জেল থেকে শম্ভুলালকে দিল্লির তিহার জেল বা দেশের অন্য কোনও জেলে স্থানান্তরের আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন আফরাজুল খানের স্ত্রী গুলবাহার বিবি। পাশাপাশি মামলায় সিবিআই তদন্তের আবেদনও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর আবেদনে প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এক সপ্তাহের মধ্যে শম্ভুলালকে নোটিস পাঠিয়ে মামলার পক্ষ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। এছাড়াও জেলে বসে কীভাবে শম্ভুলাল ভিডিও তুলে তা ভাইরাল করে দিল, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। রাজস্থান সরকারের কাছে এনিয়ে একটি রিপোর্ট তলব করেছে বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্ট জানতে চেয়েছে, এমন এক হাই প্রোফাইল বন্দি জেলে বসে কীভাবে ওই ভিডিও করার সুযোগ পেল? প্রশাসনের নজর এড়িয়ে কীভাবেই বা তা সম্ভব হল? আদালতের এই রায়ের পর মৃত আফরাজুলের স্ত্রী গুলবাহার বিবি বলেন, “একটা বিচার পেলাম। আমরা ওর ফাঁসি চাই।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement