সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “দলের সেবা আমার কাছে পুজো করার মতো।” বিজেপির সর্বভারতীয় কার্যকরী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এই মন্তব্য করলেন জে পি নাড্ডা। সোমবার দলের সংসদীয় কমিটির বৈঠকে কার্যকরী সভাপতি হিসেবে তাঁকে বেছে নেওয়া হয়।
এই সিদ্ধান্তের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও সভাপতি অমিত শাহকে ধন্যবাদ জানিয়ে একাধিক টুইট করেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। লেখেন, “প্রধানমন্ত্রীর কর্মদক্ষতা ও সহযোগিতার মনোভাব সবসময় আমাকে অনুপ্রাণিত করে। তাঁর নেতৃত্বেই দেশের মানুষের বিপুল সমর্থন পেয়েছে সরকার। আর অমিত শাহের নেতৃত্বে সাফল্যের এক নতুন উদাহরণ তৈরি করেছে দল। তাঁর মতোই দলকে সেবা করতে চাই। একজন কর্মী হিসেবে দলকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করব। কারণ, দলের সেবা করা আমার কাছে পুজো করার মতো।”
সোমবার বিজেপির মুখ্য কার্যালয়ে ছিল সংসদীয় কমিটির বৈঠক। সেই বৈঠকেই জে পি নাড্ডাকে বিজেপির কার্যকরী সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করেছেন সকলে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, প্রাক্তন সভাপতি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-সহ বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরাও। বৈঠকের পর প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং দলের সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, “অমিত শাহ সভাপতি হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে এসেছেন। সকলেই চান যে, তিনি সভাপতি হিসেবে মেয়াদকাল পূর্ণ করুন। কিন্তু তিনি নিজে মনে করছেন, মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলে সভাপতির কাজটি মন দিয়ে করতে পারবেন না। আর সভাপতির পদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই পদ এমন কাউকে দেওয়া উচিত যিনি পুরো সময় দিতে পারবেন। তাই সকলের সম্মতিতেই জে পি নাড্ডাকে কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
কেন এই ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত? চলতি বছর মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা ও ঝাড়খণ্ডের মতো বিজেপিশাসিত রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। আগামী বছরে দিল্লি ও বিহারে ভোট। এখনও পর্যন্ত ভোট রাজনীতিতে অমিত শাহর সাফল্য ঈর্ষণীয়। বারবার দলকে নির্বাচনী বৈতরণী পার করেছেন সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে। তার উপর মহারাষ্ট্র ও বিহারে জোটসঙ্গীদের সামলে আসন সমঝোতা করার মতো গুরুদায়িত্ব। যা তিনি ছাড়া সামলানো অসম্ভব বলে দলের অনেকে মনে করছেন। কিন্তু, বিজেপি বরাবর ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি অনুসরণ করে এসেছে। অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে লালকৃষ্ণ আদবানি সভাপতি পদ ছাড়েন। নরেন্দ্র মোদি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর রাজনাথ সিংকেও সভাপতি পদ ছাড়তে হয়েছিল।
তাই এবার বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে জল্পনা তৈরি হয়, শাহকেও সভাপতির পদ থেকে সরতে হবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা, অমিত শাহ দু’টি দায়িত্ব একসঙ্গেই পালন করুন। তাই ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি মেনে দলের সভাপতি পদ থেকে সরলেন না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। স্বপদেই থেকে গেলেন। তবে তাঁর কাজ হালকা করার জন্য কার্যকরী সভাপতি পদে বসানো হল মোদি-শাহর অনুগামী নাড্ডাকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.