সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেশ কিছুদিন আগেই তিনি নাম লিখিয়েছেন বিক্ষুব্ধদের খাতায়। কংগ্রেসের বিদ্রোহী G-23 গ্রুপের অন্যতম হোতা তিনিই। যত দিন যাচ্ছে ততই বাড়ছে গুলাম নবি আজাদের কংগ্রেস (Congress) ছাড়ার জল্পনা। কাশ্মীরের রাজনীতিতে গুঞ্জন, নবি সাহেব কংগ্রেস ছেড়ে নতুন দল গড়তে পারেন। এবার আজাদ নিজেই সেই জল্পনা যেন খানিকটা উসকে দিলেন। বলে দিলেন, এখনই নতুন দল গড়ার কোনও ইচ্ছা তাঁর নেই। কিন্তু রাজনীতি সম্ভাবনার খেলা। সেখানে সবকিছুই হতে পারে।
একটা সময় গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ বৃত্তেই ছিলেন গুলাম নবি। কিন্তু কিছুদিন আগে থেকে দলের বিভিন্ন কার্যপ্রণালীর বিরোধিতা শুরু করেন তিনি। তাঁর মুখে শোনা যায় শীর্ষ নেতৃত্বের (পড়ুন গান্ধী পরিবারের) সমালোচনা। তাঁর এবং কপিল সিব্বলের নেতৃত্বেই কংগ্রেসের অন্দরে শুরু হয় বিদ্রোহ। রাজ্যসভার সাংসদ পদে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে গুলাম নবিকে (Ghulam Nabi Azad) আর কোনও রাজ্য থেকে নির্বাচিত করেনি কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। সেটা নিয়েও তাঁর মধ্যে অভিমান রয়েছে। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শনিবার ফের দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সমালোচনা করতে শোনা গিয়েছে কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। তিনি বলছেন,”ইন্দিরা গান্ধী (Indira Gandhi), রাজীব গান্ধীদের আমলে দলে সমালোচনার একটা জায়গা ছিল। আজকের শীর্ষ নেতৃত্ব একেবারেই সমালোচনা সহ্য করতে পারে না। কেউই নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্চ করছে না।কিন্তু ইন্দিরাজি, রাজীবজির আমলে হয়তো আমি একটু বেশিই সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলাম। আমি প্রশ্ন করতে পারতাম। কেউ তাতে আপত্তির কিছু দেখত না। কিন্তু আজকের নেতৃত্ব এগুলো নিয়ে আপত্তি করে।”
ইদানিং দেখা যাচ্ছে কাশ্মীরের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে জনসভা করছেন গুলাম নবি। যেখানে তাঁর ঘনিষ্ঠদের দেখা গেলেও, কাশ্মীর প্রদেশ কংগ্রেসের নেতাদের সেভাবে দেখা যাচ্ছে না। একেবারেই দেখা যাচ্ছে না প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গুলাম আহমেদ মীরকে। দিন কয়েক আগে রাজ্যসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতার ঘনিষ্ঠ অন্তত জনা ২০ নেতা কংগ্রেস ত্যাগ করেছেন। তাতেই আজাদের দলত্যাগের সম্ভাবনা আরও বেড়েছে। উপত্যকায় গুঞ্জন, এই অনুগামীদের নিয়ে নতুন দল তৈরি করতে পারেন তিনি।
প্রকাশ্যে যদিও সেই সম্ভাবনার কথা অস্বীকার করছেন আজাদ। আবার জল্পনাও জিইয়ে রাখছেন। কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলছেন,”রাজনীতিতে আগামী দিনে কী হবে কেউ বলতে পারে না। ঠিক যেমন কবে মৃত্যু হবে কেউ বলতে পারে না। এটা সম্ভাবনার খেলা। তবে, নতুন দল গড়ার ইচ্ছা আমার নেই।” তাহলে, উপত্যকার বিভিন্ন প্রান্তে হঠাত এত জনসভা কেন করছেন তিনি? আজাদের বক্তব্য, “আমরা মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করছি। ৩৭০ ধারা বাতিল হওয়ার পর এই যোগাযোগ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ভাল লাগছে, সব রাজনৈতিক দলই এটা করছে।” কিন্তু তাঁর সভায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গুলাম আহমেদ মীরকে কেন দেখা যাচ্ছে না? আজাদের বক্তব্য,”উনি হয়তো আমার গতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছেন না। আমি কচ্ছপের গতিতে কাজ করতে পারি না। অনেকে কম কাজ করেন। আমার বেশি কাজ করা অভ্যাস।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.