Advertisement
Advertisement

Breaking News

দাক্ষিণাত্যের চাবিকাঠি ধর্মদণ্ড ‘সেঙ্গল’! নতুন সংসদ ভবনে তামিল অস্মিতার বার্তা মোদির

অতীতে বহুবার দিল্লির আগ্রাসন রুখে দিয়েছে বিন্ধ্য পর্বতমালা।

'Sengol' symbolised justice, righteousness and good governance: PM Modi | Sangbad Pratidin
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:May 28, 2023 2:17 pm
  • Updated:May 28, 2023 2:46 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দাক্ষিণাত্যে বারবার ধাক্কা খেয়েছে প্রবল প্রতাপী মুঘল সাম্রাজ্য। অতীতে বহুবার দিল্লির আগ্রাসন রুখে দিয়েছে বিন্ধ্য পর্বতমালা। সদ্য সমাপ্ত কর্ণাটক নির্বাচনে বিজেপির বিপর্যয় চাঙ্গা করেছে বিরোধীদের। এই প্রেক্ষাপটে আজ সংসদ ভবনে পবিত্র ধর্মদণ্ড সেঙ্গল স্থাপন করেন প্রধামন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুধু তাই নয়, এদিন নমোর মুখে ফের শোনা যায় চোল সাম্রাজ্যের প্রশস্তিও।

আজ রবিবার নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি (Narendra Modi)। গণতন্ত্রের নতুন শক্তিপীঠে দাঁড়িয়ে মোদি বলেন, “আজ সংসদ ভবনে পবিত্র সেঙ্গল স্থাপন করা হয়েছে। চোল সাম্রাজ্যে এই সেঙ্গল ন্যায়, সুশাসন এবং সতাতার প্রতীক ছিল।” নাম না করে ‘নেহেরুভিয়ান লেগেসি’কে কটাক্ষ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সৌভাগ্য যে আজ পবিত্র সেঙ্গলের গরিমা ফিরিয়ে আনতে পেরেছি। সংসদে যখন অধিবেশন চলবে, এই সেঙ্গলই আমাদের প্রেরণা জোগাবে।”

Advertisement

উল্লেখ্য, ইতিহাস বলছে, স্বাধীনতা এবং ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতীক হিসেবে লর্ড মাউন্টব্যাটনের হাত থেকে এই ‘ধর্মদণ্ড’ পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরুর হাতে তুলে দেন সাদিয়াপা স্বামী। তিনি ছিলেন তামিলনাড়ুর তিরুভাদুথুরাই মঠের প্রধান পুরোহিতের সহকারী। বলা হয়, ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে ভারতের শেষ ভাইসরয় লর্ড মাউন্টব্যাটেন পণ্ডিত নেহেরুকে প্রশ্ন করেন, ভারত যে স্বাধীনতা পাচ্ছে তার প্রতীক কী হবে? উত্তর খুঁজতে তখন দেশের শেষ গভর্নর জেনারেল চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারীর দ্বারস্থ হন নেহেরু। নেহরুকে এই রাজদণ্ডের কথা প্রথম বলেন। তামিলনাডুর রাজপরিবারের রীতি অনুযায়ী, নতুন রাজার অভিষেকের সময় হাতে রাজদণ্ড তুলে দেওয়া হয় তাঁর হাতে। যার সূত্রপাত হয়েছিল সেই চোল রাজাদের শাসনকাল থেকে। সেই প্রথা অনুযায়ী রাজাগোপালাচারী নেহেরুকে এই ধরনের দণ্ড ব্রিটিশদের হাত থেকে তুলে নেওয়ার পরামর্শ দেন। পণ্ডিত নেহেরুর সেই পরামর্শ বেশ পছন্দ হয়, এবং সেই রাজদণ্ড বানানোর দায়িত্বও পড়ে তাঁর কাঁধেই। ‘রাজাজি’ তামিলনাড়ুর মঠ ‘তিরুভাদুথুরাই আথিনাম’-এর গুরুকে সেটা তৈরির দেন। অবশেষে ১৫ হাজার টাকা খরচ করে তৈরি হয় সেঙ্গল।

[আরও পড়ুন: শীঘ্রই বাড়বে লোকসভার সদস্যসংখ্যা! সংসদের উদ্বোধনের মঞ্চেই ইঙ্গিত দিলেন প্রধানমন্ত্রী]

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দাক্ষিণাত্যে একমাত্র গড় খুইয়ে মরিয়া বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী মোদির একের পর এক প্রাক-নির্বাচনী সভাও কর্ণাটকের ভোটারদের টলাতে পারেনি। ফলে কংগ্রেসের তরী অত্যন্ত সহজেই তীরে ভিড়েছিল। তাই এবার ধর্মদণ্ড ‘সেঙ্গল’কেই দক্ষিণাত্যের চাবিকাঠি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ‘হানাদার মুঘলদের বিরুদ্ধে তোপ দেগে ‘প্রাচীন ভারতীয় সাম্রাজ্যের’ প্রশস্তি শোনা গিয়েছে নমোর মুখে। এবারও নতুন সংসদ ভবনে চোল সাম্রাজ্যের গৌরবগাথা মনে করিয়ে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে তামিল অস্মিতাকেই হাতিয়ার করতে চাইছেন মোদি।

[আরও পড়ুন: ‘আত্মনির্ভর ভারতের সূর্যোদয়ের সাক্ষী’, বিরোধী সুর উড়িয়ে নতুন ভবনে স্বমেজাজে মোদি]

সম্প্রতি, কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ দাবি করেন, মোদির নজরে ‘তামিল ইলাম’। তামিলনাড়ুতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণে সেঙ্গলকে হাতিয়ার করছেন তিনি। তিনি আরও দাবি করেন, এমন কোনও প্রমাণ নেই যা থেকে মনে হতে পারে স্বাধীনতা এবং ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতীক হিসাবে লর্ড মাউন্টব্যাটনের হাত থেকে এই ‘ধর্মদণ্ড’ নেহেরু হাতে নিয়েছিলেন। তবে এমনই একটি দণ্ড যে নেহেরুকে দেওয়া হয়েছিল তা অবশ্য তিনি মেনে নিয়েছেন।

তারপরই কংগ্রেসকে একহাত নেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে তিনি তোপ দাগেন, “ভারতীয় সংস্কৃতিকে কেন এতটা ঘৃণা করে কংগ্রেস? স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে পণ্ডিত নেহেরুকে শৈব মঠের ওই পবিত্র দণ্ডটি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটিকে নেহেরুর ছড়ি মনে করে জাদুঘরে রেখে দেওয়া হয়।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement