হেমন্ত মৈথিল, লখনউ: মহাকুম্ভে একটি মাছিও গলতে না দেওয়ার পণ করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তাঁর নির্দেশেই প্রয়াগরাজে মেলা সংলগ্ন এলাকায় সর্বক্ষণ কড়া নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ। পুণ্যার্থী থেকে বিদেশি কিংবা স্থানীয়দেরও ফাঁক গলে চলে যাওয়ার উপায় নেই। এই পরিস্থিতিতে সন্দেহভাজন চার বিদেশিকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মহাকুম্ভ পুলিশ। যাচাই করে দেখা হয়েছে তাঁদের নথিপত্রও।
জানা গিয়েছে, এক রুশ ও জার্মান নাগরিক এবং বেলারুশের দুজন পুলিশের আতসকাঁচের তলায় আসেন। নজর রাখার পর তাঁদের থানায় নিয়ে গিয়ে জেরা করা হয়। চারজনের ভিসা, পাসপোর্ট ও অন্যান্য নথিপত্র খতিয়ে দেখেন পুলিশ আধিকারিকরা। সমস্ত কিছু পরীক্ষা করে তারপর তাঁদের ছাড়া হয়। তবে আন্দ্রে নামে মস্কোর ওই নাগরিককে রাশিয়ায় ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ তাঁর ভিসা ও পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকিদেরকে ভারতে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এনিয়ে উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তা রাজেশ দ্বিবেদী বলেন, গোটা মেলা এলাকা সর্বক্ষণ নজরদারির মধ্যে রয়েছে। সন্দেহজনক কার্যকলাপে জড়িত কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না। ভক্তদের নিরাপত্তার জন্য সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। মহাকুম্ভে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। একাধিক স্তরে দেশ-বিদেশ নাগরিকদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। সুরক্ষায় কোনও ফাঁক রাখা হচ্ছে না।
আশঙ্কা রয়েছে সাধুর ছদ্মবেশেও জঙ্গিরা হানা দিতে পারে মেলায়। কিন্তু সেই ছক ভেস্তে দিতে প্রস্তুত উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। জল-স্থল-আকাশপথে চলবে কড়া নজরদারি। এছাড়া মোতায়েন করা হবে ড্রোন বিধ্বংসী সিস্টেম। সম্ভাবনা হয়েছে সাইবার হানারও। তাই মুখ্যমন্ত্রী যোগীর নির্দেশে সাইবার নিরাপত্তার জন্য বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। প্রশাসনের কাছে খবর রয়েছে, মহাকুম্ভ নিয়ে কিছু ভুয়ো ওয়েবসাইট বা অ্যাপ তৈরি করে প্রতারণার ছক কষা চলছে। এনিয়ে যোগী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এটা দুঃসাহসিক পদক্ষেপ। এমন অভিযোগ উঠলে পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। মেলা চত্বরে ২৫টি জায়গায় রেশন বিতরণ হবে। তার জন্য ৫টি গুদাম ও ১২৫টি অস্থায়ী রেশন দোকান তৈরি করা হয়েছে। ৬টি পুণ্যস্নান উৎসবে তীর্থযাত্রীদের উপর ফুলের বর্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সকলকে সময়ের মধ্যে সমস্ত কাজ শেষ করা এবং মেলা শুরু সময় অনুযায়ী কাজ করার কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী।
পাশাপাশি ২০২৫ সালের মহাকুম্ভকে ঐশ্বরিক ও মহত্তম করার অঙ্গীকার করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। ঝড়ের গতিতে চলছে কাজ। সাধুসন্ত, নাগা সন্ন্যাসী, যোগী এবং সাধারণ পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার দিকে যেমন জোর দেওয়া হয়েছে, তাঁদের খাওয়া দাওয়া, থাকার বন্দোবস্ত থেকে বিনোদন- নজর সবদিকেই। পাশাপাশি পুণ্যার্থীদের জন্য নিরাপত্তার নজিরবিহীন ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ‘মহাকুম্ভ ২০২৫’ ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে এক নিদর্শন স্থাপন করবে বলেই মনে করা হচ্ছে। যা একই সঙ্গে মহান ও ঐশ্বরিক হয়ে উঠবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.