সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দলিত বিক্ষোভে উত্তাল দেশ। সোমবার দলিতদের ডাকা ভারত বনধের জেরে নিহত হন দশজন। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে নয়টি রাজ্য। বাতিল করা হয় প্রায় ১০০টি ট্রেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয় সেনাবাহিনীকে। এই আন্দোলনে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি বিক্ষোভকারীদের নৈতিক সমর্থন দিয়েছে। এমনই পরিস্থিতিতে তফসিলি জাতি, উপজাতি-সহ পিছিয়ে পড়া শ্রেণিকে বার্তা দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। তাঁদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ও উন্নয়নে দায়বদ্ধ কেন্দ্র। ভুয়ো ও মিথ্যে প্রচারের ফাঁদে না পড়ার জন্য মানুষের কাছে আবেদন করেন তিনি। একইসঙ্গে, রাজনৈতিক দলগুলির উদ্দেশেও তাঁর আহ্বান, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখতে।
The Govt. of India is committed to ensuring welfare of SC/STs and other weaker sections and also guaranteeing them full protection of law. The Govt. has already filed a review petition in the Supreme Court to maintain the SC/ST Prevention of Atrocities Act in its presents form.
— Rajnath Singh (@rajnathsingh) April 2, 2018
টুইট করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ‘এসসি/এসটি প্রিভেনশন অফ এটরওসিটি অ্যাকট’ যাতে বর্তমানে রূপেই থাকে তার জন্য ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছে কেন্দ্র। এদিন ঘটা প্রাণহানির ও সংঘর্ষের ঘটনায় তিনি ব্যথিত। রাজনাথ জানান, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে কেন্দ্র। ২০ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য ছিল, তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতিদের উপর অত্যাচার বন্ধের আইনটি সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে অপব্যবহার হচ্ছে। সেক্ষেত্রে আইন প্রয়োগে বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করে শীর্ষ আদালত। শুরু থেকেই বিষয়টিতে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়। দলিতদের উপর নির্যাতনের ঘটনা বাড়ার আশঙ্কায় সরব হয় বিরোধী দলগুলি। এমনকী, লোক জনশক্তি পার্টির নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানের নেতৃত্বে কেন্দ্রে শাসক দলগুলির সাংসদরা রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানোর দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবার করেন। অন্যদিকে, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে এই রায়ের প্রভাব পড়বে বলেও ধারণা করা হয় বিজেপিরই একাংশ থেকে।
[ক্ষমা চাইলেন কেজরি, মঞ্জুর করে মামলা প্রত্যাহারের ইঙ্গিত জেটলির]
চাপে পড়ে সরকার সোমবার সুপ্রিম কোর্টে ‘রিভিউ পিটিশন’ দাখিল করেছে। আর ঠিক এদিনই ওই রায়ের প্রতিবাদে রাষ্ট্রীয় সেবাদল, ন্যাশনাল দলিত মুভমেন্ট ফর জাস্টিস, সিটু, ভারিপ বহুজন মহাসংঘের মতো কয়েকটি সংগঠনের ডাকা ভারত বনধের জেরে প্রায় অর্ধেক দেশ রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। বিক্ষোভ-অবরোধের জেরে সারা দেশে কয়েকশো ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। বস্তুত, এমন দলিত অসন্তোষের চিত্র ভারতে বিরল। সাম্প্রতিককালে দেশের বিভিন্ন অংশে দলিত নিগ্রহের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিনের ঘটনায় সেই ‘নিরাপত্তাহীনতা’ ইন্ধন জুগিয়েছে বলেই রাজনৈতিক মহল মনে করছে। বনধ প্রকৃত পক্ষে ‘দলিত বিদ্রোহের’ রূপ নিল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শান্তি রক্ষার আবেদন জানিয়ে বলেছেন, “আমার কিছু দলিত ভাই-বোনের মৃত্যুতে বিস্মিত ও ব্যথিত। আমরা তাঁদের আন্দোলনের কারণগুলি সমর্থন করি।” কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী মোদি সরকারের বিরুদ্ধে নিজেদের অধিকার রক্ষায় পথে নামা ‘ভাই-বোনেদের’স্যালুট জানিয়ে বলেছেন, দলিতদের ভারতীয় সমাজের একেবারে নিচু তলায় ফেলে রেখেছে বিজেপি ও আরএসএস। অবশ্য, এনডিএ সরকার দলিতদের উন্নতি চায় না, বিরোধীদের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন রাজনাথ।
[ছেলে বড় কালো! ফরসা করতে মায়ের পাথর ঘষায় ক্ষতবিক্ষত শিশু]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.