নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: তিনি শিশু নিগ্রহ (Child Harrasment) এবং বাল্য বিবাহ (Child Marriage) রোধে সচেতনতা প্রচারের মুখ। বছর চারেক ধরে এই বিষয়ে রাজ্যে প্রচার চালিয়েছেন। পরবর্তী লক্ষ্য ছিল ৪০ দিন পায়ে হেঁটে দিল্লি (Delhi) পৌঁছানো। গোটা ভারতকে এই বিষয়ে সচেতন করা। পরিকল্পনা মতো মঙ্গলবার রাজধানীতে পৌঁছান ‘গোলাপসুন্দরী’। যাঁর প্রকৃত পরিচয় খানাকুল মাঝপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। এদিন সংসদে ভবনে তৃণমূলের দপ্তরে যান দেবাশিস। সংসদ ভবন ঘুরে দেখেন।
নারীমুক্তি আন্দোলনের পথিকৃত রাজা রামমোহন রায়ের বসতবাটি খানাকুলের রঘুনাথপুর থেকে ‘মিশন ৪০’ যাত্রা করেছিলেন দেবাশিস। শিশু নিগ্রহ এবং বাল্য বিবাহ রোধের সচেতনতা প্রচারে হেঁটেছেন ১৫০০ কিলোমিটার। বাল্য বিবাহ বিরোধী সচেতনতা প্রচারে নারী সেজে পথে নেমেছেন। পরনে শাড়ি, মাথায় পরচুলা। গায়ের রঙ ফর্সা তাই নিজের নাম রাখেন ‘গোলাপসুন্দরী’। তবে দেড় হাজার কিমি পথে সারাক্ষণ ওই সাজ রাখা কঠিন ছিল। ফলে লম্বা রাস্তায় সাজ ছেড়েও পথ হাঁটেন। তবে লোকালয় এলেই পরেছেন ‘গোলাপসুন্দরী’ বেশ।
দেবাশিসবাবু যখন যাত্রা শুরু করেন তখন তীব্র শীত। বিশেষত উত্তর ভারতে। যদিও কর্তব্যে অবিচল ছিলেন তিনি। তিনি জানান, বাল্যবিবাহ ও শিশু নিগ্রহ হল দেশের ব্যাধি। ফলে তা নিয়ে সচেতনতা প্রচার যুদ্ধের সমান। দেবাশিসের কথায়, “নিজেকে সৈনিক মনে হচ্ছে। বয়স বা ঠান্ডা কোনও বাধা নয়।” কথা ও কাজে পার্থক্য হল না মাঝপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাস্টারমশাইয়ের। সময় মতো ঝাড়খণ্ড, বিহার এবং উত্তরপ্রদেশ হয়ে দিল্লি পৌঁছালেন তিনি।
এদিন নয়াদিল্লির সংসদ ভবনেও যান দেবাশিস। সেখানে তৃণমূলের দপ্তরে যান। উপস্থিত সাংসদরা তাঁকে অভিনন্দন জানান। সচেতনতা প্রচার চালানোর পাশাপাশি সংসদ ভবন ঘুরে দেখেন। তার আগে রাজধানীর মানুষের কাছেও শিশু নিগ্রহ এবং বাল্য বিবাহ রোধে বার্তা দেন। আগামীকাল ট্রেনপথে ঘরে ফেরার কথা খানাকুল মাঝপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবাশিস মুখোপাধ্যায়ের।ফুরোবে তাঁর স্কুল থেকে নেওয়া ৪৫ দিনের ছুটি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.