সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কুনোয় পরপর চিতা-মৃত্যুর ঘটনায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তবে সোমবার দেশের শীর্ষ আদালতের বয়ানে সেই অস্বস্তি কিছুটা হলেও ঢাকল। সুপ্রিম কোর্ট এদিন সাফ জানিয়ে দিয়েছে, চিতা-মৃত্যুর ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি বা উদ্দেশ্য–কোনওটিকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করানো অনুচিত। ভারত সরকার চিতাদের দেশের অরণ্যের পুনর্বাসনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে এবং সেই প্রক্রিয়ায় জটিলতা আসবেই। এখনই তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রশ্নের মুখে ফেলা যায় না।
প্রসঙ্গত, গতবছর সেপ্টেম্বর মাস থেকে মধ্যপ্রদেশের শিওপুরের কুনো জাতীয় উদ্যানে চিতা (Cheetah) আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। নামিবিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে মোট ২০টি চিতা আনা হয়েছে এখনও পর্যন্ত। কিন্তু তিনটি শাবক-সহ মোট ন’টি চিতার মৃত্যুও হয়েছে। এই ঘটনায় কেন্দ্র সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল। তারই শুনানিতে সোমবার আদালতের মন্তব্যে কেন্দ্রের বিড়ম্বনা অল্প হলেও কাটল।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে, গত মাসেই বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের নেতৃত্বাধীন শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ চিতামৃত্যুর এই গোটা ঘটনায় কার্যত কেন্দ্রকেই দায়ী করেছিল। বিষয়টিকে আত্ম-অহংকারের দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার না করে পশুদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ খোঁজার দিকে যত্নশীল হওয়ার পরামর্শও দিয়েছিল। সোমবার শীর্ষ আদালতকে কেন্দ্র সরকারের তরফে বলা হয়, ‘‘এই চিতা প্রকল্পের নেপথ্যে প্রচুর প্রস্তুতি এবং পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতি বছর ১২-১৪টি করে চিতা দেশে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। সমস্যা বহু রকম দেখা দিচ্ছে ঠিকই, তবে তার কোনওটাই উদ্বেগজনক নয়।’’
উল্লেখ্য, কুনো জাতীয় উদ্যানে চিতামৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে উঠে এসেছিল চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিশেষজ্ঞদের একাংশ দাবি করেন, আফ্রিকা থেকে আসা চিতাগুলির মৃত্যুর কারণ হতে পারে তাদের গলায় থাকা রেডিও কলার। যা নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক। তারপরই বনদপ্তরের পক্ষ থেকে দশটি চিতার রেডিও কলার খুলে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। অবশেষে দেখা যায় ওই আশঙ্কাই ঠিক ছিল। রেডিও কলার খুলতেই চোখে পড়ে দু’টি চিতার শরীরে গুরুতর সংক্রমণ রয়েছে। এরপর গত বুধবার সেখানে নবম চিতা ধাত্রীর মৃত্যু হলে, দক্ষিণ আফ্রিকার চিতা বিশেষজ্ঞরা দু’টি চিঠি পাঠিয়ে এই বিষয়ে তাঁদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টকে। সেই চিঠিতে পরিষ্কার আঙুল তোলা হয়েছিল কুনো জাতীয় উদ্যানের বর্তমান ম্যানেজমেন্টের দিকে। প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, নিযুক্ত পশু চিকিৎসকদের যোগ্যতা নিয়েও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.