সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাগরিকপঞ্জিতে যাদের নাম নেই তাদের নাম নথিভুক্ত করার জন্য সকলকে নতুন করে আইনি নথি জমা করার প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই বিষয়ে এদিন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে শীর্ষ আদালত। প্রতীক হাজেলার কাছে শীর্ষ আদালতের প্রশ্ন, যাদের নাম বাদ গিয়েছে, তাদের কেন নতুন করে নথি জমা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে? তাতে তাদের উল্লিখিত পূর্ববর্তী বংশলতিকায় বদল হতে পারে। প্রতীক হাজেলাকে ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
[প্রেমের টানে ইউক্রেন থেকে আরামবাগ ছুটে এসেও স্বপ্নভঙ্গ বিদেশিনীর]
অসমের নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) চূড়ান্ত খসড়া তালিকা থেকে ৪০ লক্ষ বসবাসকারীর নাম বাদ গিয়েছিল। প্রক্রিয়ার নানা বিষয়ে ইতিমধ্যেই আপত্তি ও সমালোচনা শুরু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, বহু বৈধ ভারতীয় নাগরিকের নাম তালিকা থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। তাই কোনও প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকের নাম যাতে বাদ না পড়ে, তা সুনিশ্চিত করতে এই বাদ যাওয়া নাগরিকদের অন্তত দশ শতাংশের নথি পুনরায় পরীক্ষা করে দেখার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি, চূড়ান্ত খসড়ার ক্ষেত্রে আপত্তি জানানো ও নতুন নথি জমা নেওয়ার দিন স্থগিত করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। ৩০ আগস্ট থেকে নথি জমা নেওয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল। যা শেষ হত ২৮ সেপ্টেম্বর।
মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতের তরফে এই বিষয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অসমের এনআরসি-র রাজ্য কোঅর্ডিনেটর প্রতীকা হাজেলাকে। সুপ্রিম কোর্টের যুক্তি, নথি জমা ও আপত্তি জানানোর যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, সে ব্যাপারে আদালতের কিছু সংশয় রয়েছে। তাই জমা দেওয়ার সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে চূড়ান্ত খসড়ায় নাম বাদ যাওয়া নাগরিকের অন্তত দশ শতাংশ নথি কোনও নিরপেক্ষ দলকে দিয়ে ফের সমীক্ষা করানো হবে। সেই সমীক্ষা হবে জেলাভিত্তিক। নাগরিকপঞ্জিতে যাতে কোনও ত্রুটি না থাকে তা নিশ্চিত করতেই এই নমুনা পরীক্ষার নির্দেশ আদালতের। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ও বিচারপতি আর এফ নরিম্যানের বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ৩০ জুলাই অসমের নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশিত হয়েছিল। যেখানে আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল ৩.২৯ কোটি। তবে তার মধে্য থেকে নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল ৪০ লক্ষ আবেদনকারীর। সেই নিয়ে নানা মহলে বিরোধিতা শুরু হয়। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অসমে পাঠান তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলকে। সেখানে গেলে রাজ্য পুলিশের তরফে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। কংগ্রেস-সহ অন্য বিরোধী দলগুলিও বিরোধিতা করেছিল। তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বারবার জানিয়েছিলেন যে, এটি চূড়ান্ত তালিকা নয়। তাই চিন্তার কারণ নেই। যাঁদের নাম বাদ গিয়েছে, তাঁদের ফের আইনি নথি জমা করানোর নির্দেশ দেয় কেন্দ্র।
গত ১৬ আগস্ট শীর্ষ আদালত মন্তব্য করে যে, নিয়ম অনুযায়ী নথি জমা ও আপত্তি জানানোর জন্য অন্তত ৩০ দিন সময় দেওয়া উচিত। এ বিষয়ে কোন পদ্ধতি নেওয়া উচিত, তা নিয়ে আসু, আমসু, জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দ-সহ নানা পক্ষের মত চায় শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি, নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ যাওয়া নামের জেলাভিত্তিক তথ্য মুখবন্ধ খামে জমা দিতে প্রতীক হাজেলাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
[পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন ঘিরে উত্তপ্ত বনগাঁ, কোপানো হল তৃণমূল কর্মীকে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.