সংবাদ প্রাতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধর্ষণের মামলায় ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ নিষিদ্ধ করল সুপ্রিম কোর্ট। ‘রেপ সারভাইভার’ বা ধর্ষণের শিকার হওয়া মহিলাদের যোনিতে আঙুল ঢুকিয়ে এই পরীক্ষা করা হয়। সোমবার শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, এই টেস্ট সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক ও পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার পরিচয়। ভবিষ্যতে ধর্ষণের ঘটনায় ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ হলে মামলা দায়ের করারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এদিন ধর্ষণ ও খুনের একটি মামলার শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, “ধর্ষণ ও যৌন নিগ্রহের মামলায় এই আদালত বহুবার টু ফিঙ্গার টেস্টের বিরুদ্ধে অভিমত দিয়েছে। এই পরীক্ষার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। নির্যাতিতাদের পরীক্ষা করার এটা একটা ‘ইনভেসিভ মেথড’। অর্থাৎ জোর করে শরীরের ভিতরে আঙুল প্রবেশ করানো হয় পরীক্ষার সময়ে। এর ফলে নির্যাতিতা আরও বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাই ধর্ষণের মামলায় কোনওভাবেই এই টু ফিঙ্গার টেস্ট যেন করা না হয়।” তিনি আরও বলেন, “যৌন জীবনে সক্রিয় একজন মহিলা ধর্ষণের অভিযোগ করলে তাঁর কথা বিশ্বাস করা যায় না, এই চিন্তাভাবনা পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা ও লিঙ্গবৈষম্যেরই পরিচয়।”
উল্লেখ্য, ৯ নভেম্বর দেশের ৫০তম প্রধান বিচারপতি হতে চলেছেন ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। এর আগে বিচারপতি চন্দ্রচূড় ১৯৯৮ সালে ভারতের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এদিন ঐতিহাসিক রায় দিয়ে তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, “নির্যাতিতার যৌন জীবনের ইতিহাসের মামলার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। এটা দুঃখজনক যে আজও এমন পরীক্ষা করা হয়।” ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ নিয়ে বিচারপতি স্পষ্ট বলেন, আদালতের রায়ের পরও যারা এই ধরনের পরীক্ষা করবে তার বিরুদ্ধে অবমাননার দায়ে মামলা করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালেই টু ফিঙ্গার টেস্টকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট। তারপরও ধর্ষণের মামলায় এই পরীক্ষা চলছিল। ২০২১ সালে এক মহিলা বায়ুসেনা অফিসারের ধর্ষণের মামলায় ফের ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ প্রশ্নের মুখে পড়ে। সেবার ২৯ বছরের ওই অফিসার দাবি করেন, যা তাঁর কাছে যৌন নির্যাতনের সেই ভয়ংকর স্মৃতিকেই নতুন করে অনুভব করারই সামিল। উল্লেখ্য, এই পরীক্ষা ঘিরে অতীতেও বহু বিতর্ক হয়েছে। বলা হয়, এতে আক্রান্তের গোপনীয়তার অধিকার রক্ষিত থাকে না। তাছাড়া এটি অবৈজ্ঞানিকও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.