সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সিবিআই বনাম সিবিআই মামলায় রায়দান করল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার শীর্ষ আদালত জানাল, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার প্রধান অলোক ভার্মার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত করবে সিভিসি বা সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশন। দু’সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে সিভিসিকে।
CJI Gogoi in his order states,” inquiry in respect of the allegation made in the note of the Secretariat as regards the present CBI Dir Alok Verma shall be completed by the CVC within a period of 2 weeks from today.The inquiry will be conducted by the retired SC judge AK Patnaik” pic.twitter.com/hgzllKJIRz
— ANI (@ANI) October 26, 2018
এদিন শীর্ষ আদালত আরও জানায়, সিভিসি-র তদন্তে পর্যবেক্ষক হিসেবে থাকবেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ কে পটনায়েক। আগামী শুনানি নভেম্বরের ১২ তারিখ হবে বলে জানিয়েছে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত সিবিআই অধিকর্তা নাগেশ্বর রাওকে সমস্ত বদল হওয়া অফিসারদের তালিকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। শীর্ষ আদালতের এই রায়ে সিবিআই মামলায় আপাতত কিছুটা ব্যাকফুটে কেন্দ্র বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা হলেও, সুপ্রিম নির্দেশে কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আপাতত নিতে পারবেন না মোদি শিবিরের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত নাগেশ্বর রাও৷ এছাড়াও পর্যবেক্ষক হিসাবে শীর্ষ আদালতের প্রাক্তন বিচারপতির নিয়োগ কিছুটা হলেও চাপে রাখবে শাসক ঘনিষ্ঠ আমলাদের৷
উল্লেখ্য, সিবিআইয়ের ঘরের আগুন নিজের গৃহে টেনে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। দেশের সবচেয়ে বড় তদন্তকারী সংস্থাটির গৃহযুদ্ধে হস্তক্ষেপ করে সিবিআইয়ের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী৷ মঙ্গলবার মধ্যরাতে সরকার নির্দেশিকা জারি করে অলোক ভার্মা এবং রাকেশ আস্থানাকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র, বদলি করে দেওয়া হয় বেশ কিছু আধিকারিককেও। পরিবর্তে নাগেশ্বর রাওকে দায়িত্ব দেওয়া হয় অস্থায়ীভাবে কার্যভার সামলানোর জন্য। তবে দুঁদে আমলা অলোক ভার্মা পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সকাল হতেই দ্বারস্থ হন সুপ্রিম কোর্টের৷ অলোক ভার্মার আইনজীবীদের দাবি, সিবিআই ডিরেক্টরের অপসারণ অনৈতিক। এতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্তে ক্ষতি হবে। তাছাড়া ভার্মার কার্যকাল আর মাত্র ২ মাস। তাই এই অবস্থায় তাঁকে আইনি পথে অপসারণ করা সম্ভব নয়।
The new CBI director M Nageshwar Rao will not take any policy decisions till Supreme Court hears the matter again: CJI Ranjan Gogoi pic.twitter.com/dvBHS7X700
— ANI (@ANI) October 26, 2018
ভার্মার আইনজীবীর অভিযোগ, “দেশের সর্বোচ্চ স্বশাসিত সংস্থার স্বয়ংক্রিয়তায় হস্তক্ষেপ করছে কেন্দ্র। কিছু কিছু তদন্তের গতিপ্রকৃতি এমন দিকে এগোচ্ছিল যা সরকারের পক্ষে সুখকর ছিল না।” এরপর আরও বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, মাঝে মাঝে কেন্দ্রের রাজনৈতিকভাবে নির্বাচিত সরকার সরাসরি লিখিতভাবে কোনও নির্দেশ দেয় না। কিন্তু এমন পরিস্থিতি তৈরি করে যা মানতে বাধ্য হয় সিবিআই। এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করা খুব কঠিন কাজ।” বিরোধীরা বলছে এই অভিযোগপত্রই প্রমাণ করছে সরকারের নির্দেশমতো কাজ না করার ফলেই বরখাস্ত হতে হল অলোক ভার্মাকে। প্রথামাফিক সিবিআইয়ের শীর্ষ পদে নিযুক্তি হয় কলেজিয়াম সিস্টেমের মাধ্যমে৷ ফলে ভার্মাকে সরাতেও পারে কলেজিয়ামই৷ কিন্তু এক্ষেত্রে নজিরবিহীনভাবে কলেজিয়াম সিস্টেমকে বাইপাস করে নেওয়া কেন্দ্রের পদক্ষেপ উসকে দিয়েছে বিতর্ক৷ প্রসঙ্গত, ইউপিএ আমলে সিবিআইকে ‘খাঁচার তোতা’ বলে কটাক্ষ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট৷ এবার ফের তদন্তকারী সংস্থাটিতে অলিখিত সরকারি হস্তক্ষেপে প্রশ্নের মুখে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তদন্তের গতি৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.