শুভঙ্কর বসু: আগামী ১ তারিখ, দ্বিতীয় দফায় ভোট নন্দীগ্রামে। তার আগে স্বস্তিতে রাজ্যের অন্যতম আকর্ষণীয়, স্পর্শকাতর এই কেন্দ্রে রাজ্যের শাসকদলের প্রার্থী স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। নন্দীগ্রাম মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত, মমতার নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের আইনি জট কাটল। নন্দীগ্রামে তাঁর প্রবেশাধিকার মিলল দেশের শীর্ষ আদালতের (Supreme Court)রায়ে। নন্দীগ্রাম মামলায় অভিযুক্ত থাকায় এতদিন হাই কোর্টের নির্দেশে নন্দীগ্রামে প্রবেশ নিষেধ ছিল তাঁর। অথচ শিয়রে ভোট। এই মুহূর্তে তৃণমূল স্তরে নেমে কাজ না করে উপায় কী? তাই সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশাধিকার চেয়ে আবেদন করেন শেখ সুফিয়ান। শুক্রবার সেই মামলায় তাঁকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আগামী ২ সপ্তাহ শেখ সুফিয়ান, আবু তাহেরকে গ্রেপ্তার করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা।
২০১১ সালে, তৎকালীন বাম সরকারের আমলে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময়ে শেখ সুফিয়ান, আবু তাহের-সহ এলাকার কয়েকজনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়। সরকারপক্ষের তরফে এই মামলা দায়ের করা হয়েছিল। আদালতের নির্দেশে নন্দীগ্রামে তাঁর প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল।পরবর্তীতে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরও তাঁদের বিরুদ্ধে সেই মামলা প্রত্যাহার করা হয়নি। যদিও তার মধ্যে শেখ সুফিয়ানরা সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত হন।
একুশের ভোটে তিনিই নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট। আর তারপরই তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলাটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল সরকার। সেইমতো হাই কোর্টে আবেদন করা হয় সরকারের তরফে। কিন্তু শেখ সুফিয়ানকে ফৌজদারি মামলা থেকে অব্যাহতি না দেওয়ার আবেদনেও পালটা জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাই কোর্টে। মামলাকারীদের আবেদনে সায় দিয়ে বিচারপতিও জানিয়ে দেন, ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করতে চাওয়াটা একই রকম অপরাধের। ফলে আইনি গেরোয় আটকে যান শেখ সুফিয়ান।
কিন্তু এবার সামনেই ভোট। নন্দীগ্রামে প্রবেশ করতে না পারলে নির্বাচনী এজেন্ট হিসেবে কাজ করতে পারবেন না। তাই সুপ্রিম কোর্টে এ বিষয়ে আপিল করেন শেখ সুফিয়ান। শুক্রবার মামলাটির শুনানি ছিল বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কৃষ্ণ মুরারির বেঞ্চে। এই মামলায় রাজ্য সরকারের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী তথা রাজ্যসভার সাংসদ অভিষেক মনু সিংভি। সুপ্রিম কোর্টে তিনি জানান, এই সমস্ত ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং নন্দীগ্রামের নির্বাচনকে প্রভাবিত করার একটি রাজনৈতিক চক্রান্ত। এরপর বিচারপতিরা হাই কোর্টের রায় খারিজ করে জানান, আপাতত ২ সপ্তাহ তাঁকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। প্রসঙ্গত, ২ সপ্তাহের মধ্যেই নন্দীগ্রামে ভোট হয়ে যাবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.