Advertisement
Advertisement

Breaking News

গদিতে বসতে এবার কংগ্রেসের দ্বারস্থ শশীকলা

শশী ও পন্নিরের রুদ্ধশ্বাস লড়াই অব্যাহত৷

Sasikala camp approaches Congress
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:February 10, 2017 4:16 am
  • Updated:February 10, 2017 4:54 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “গুড থিংস উইল হ্যাপেন৷”

বিকেলে রাজভবন থেকে বেরিয়ে বাইরে অপেক্ষারত সাংবাদিকদের যখন এ কথা বলছেন, তখন বেশ প্রত্যয়ী লাগছিল ও পন্নিরসেলভমকে৷ বিকেল পাঁচটায় তাঁকে সাক্ষাতের জন্য সময় দিয়েছিলেন রাজ্যপাল চন্দ্রশেখর বিদ্যাসাগর রাও৷ তামিলনাডুর এই রাজনৈতিক অস্থিরতায় যাঁর ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে৷ মেরেকেটে মিনিট পনেরোর বৈঠক৷ সেখান থেকে বেরিয়ে এটুকুই বললেন কার্যনির্বাহী মুখ্যমন্ত্রী, “রাজ্যের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপালকে অবহিত করেছি৷ যা হবে, তা তামিলনাড়ুর মঙ্গলের জন্যই হবে৷ ধর্মের জয় হবে৷”

Advertisement

এটাই প্রথম নয়, বরাবরই পন্নিরসেলভম দাবি করে এসেছেন, দলের বেশিরভাগ বিধায়কই তাঁর সমর্থনে এগিয়ে আসবেন৷ আর এই ঘটনার পর চিনাম্মা যে বেশ চিন্তিত, তা আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না৷ এআইএডিএমকে’র মোট ১৩৪ জন বিধায়কের মধ্যে যদি ১০০ বিধায়ক পন্নিরের সঙ্গে যোগ দেন, তবে চিনাম্মার প্রতিপত্তি যে তলানিতে গিয়ে ঠেকবে তা আগেভাগেই অনুমান করা যায়৷ আর তাই গদি বাঁচাতে কংগ্রেসের দ্বারস্থ হতে পারেন চিনাম্মা৷ এমনটাই ধারণা রাজনৈতিক মহলের৷

পাশাপাশি গত বৃহস্পতিবার সাড়ে সাতটায় সাক্ষাতের জন্য শশীকলা নটরাজনকে সময় দিয়ে রেখেছেন রাজ্যপাল৷ তামিলনাড়ু মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার ‘চিনাম্মা’ দাবি করে বসেছেন, সরকার গড়ার জন্য তাঁর হাতে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়ক রয়েছে৷

এদিন সন্ধ্যায় শশীকলা মেরিনা বিচে প্রয়াত নেত্রী জয়ললিতার স্মৃতিস্মারকে শ্রদ্ধা জানিয়ে রাজভবনে যান৷ তাঁর সঙ্গে ছিলেন ১০ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী৷ রাজ্যপালের কাছে তিনি সরকার গঠনের দাবি জানান৷ শশীকলা ১৩০ জন বিধায়কের একটি তালিকা রাজ্যপালের হাতে তুলে দেন৷ সূত্রের খবর, এর আগে পন্নিরসেলভম রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে দাবি করেন, তাঁকে জোর করে পদত্যাগে বাধ্য করেছিলেন শশীকলা৷ দলের বেশিরভাগ বিধায়ক সঙ্গে আছেন বলে দাবি শশীকলার৷ যদিও পন্নিরসেলভমের পাল্টা দাবি, সেই বিধায়কদের অনেকেই তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ রেখে চলেছেন৷ রাজভবনের বৈঠকে তিনি বলেছেন, শুধু বিধায়ক সংখ্যাই নয়, রাজ্যের জনগণও তাঁকে সমর্থন করছেন, এটিও রাজ্যপালের বিবেচনা করা উচিত৷ রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকে তাঁর সঙ্গেও ছিলেন এডিএমকের ১০ নেতা৷ তাঁদের মধ্যে পাঁচজনের সঙ্গে আলাদা আলাদা ভাবে কথা বলেছেন রাজ্যপাল৷ বস্তুত, দলের ১৩৪ জন বিধায়কের মধ্যে ১৩১ জনকেই একটি হোটেলে ‘বন্দি’ করে রেখেছেন শশীকলা৷ তাঁরা যাতে পন্নিরসেলভমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারেন, তাঁদের মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়া হয়েছে৷

জানা গিয়েছে, রাজ্যপাল বিদ্যাসাগর রাও তাঁর আইনি পরামর্শদাতাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন৷ তারপরই তিনি তাঁর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন৷ রাজ্যপাল শেষ পর্যন্ত সরকার গঠনের জন্য কাকে ডাকবেন, তা এদিন মধ্যরাত পর্যন্ত স্পষ্ট হয়নি৷ আসলে, কেন্দ্রকে রিপোর্ট পাঠানোর আগে কিছুটা সময় নিতে চাইছেন রাজ্যপাল৷ তামিলনাডুর রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ও৷ তিনি অফিসারদের কাছে নিয়মিত খবর নিচ্ছেন৷ এদিকে, এদিন দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, “তামিলনাডুতে যা ঘটছে, তা একটি দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়৷ এর সঙ্গে সরকারের অস্থিরতার কোনও সম্পর্ক নেই৷”

(খোঁজ মিলছে না তেজ বাহাদুরের, আইনের দ্বারস্থ হচ্ছেন উদ্বিগ্ন স্ত্রী)

রবিবার এআইএডিএমকে বিধায়করা দলের সর্বোচ্চ নেত্রী শশীকলা নটরাজনকে পরিষদীয় নেতা নির্বাচন করেন৷ এরপরই ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়ে ইস্তফা দেন মুখ্যমন্ত্রী ও পন্নিরসেলভম৷ সেদিনই একটি টুইট করে শশীকলা দাবি করেন, জয়ললিতার মৃত্যুর পর তাঁকে দলের দায়িত্ব ও মুখ্যমন্ত্রী পদে বসার জন্য পন্নিরসেলভমই প্রথম তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলেন৷” ঘটনাচক্রে রবিবার দলের পরিষদীয় বৈঠকে নেতা হিসাবে শশীকলার নাম প্রস্তাব করেন তিনিই৷ সোমবার তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন রাজ্যপাল৷ তবে তাঁকে কার্যনির্বাহী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কাজ চালিয়ে যেতে বলা হয়৷

পরিস্থিতি নাটকীয় মোড় নেয় মঙ্গলবার রাতে৷ পন্নির আচমকা শশীকলার বিরু‌দ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন৷ দাবি করেন, দলের ৫০ জন বিধায়ক তাঁর সঙ্গে রয়েছেন৷ সুযোগ বুঝে ডিএমকে তাঁকে সমর্থন দেওয়ার কথা ঘোষণা করে দেয়৷ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে তামিলভূমের রাজনৈতিক পরিস্থিতি৷

(রেশন দোকানেও এবার বাধ্যতামূলক হচ্ছে আধার কার্ড)

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কার্যনির্বাহী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নিজের ক্ষমতা প্রয়োগে তৎপর হন পন্নিরসেলভম৷ চেন্নাইয়ের পুলিশ কমিশনারকে তিনি অপসারিত করেন৷ সেই সঙ্গে ঘোষণা করেন, জয়ললিতার বাসভবন পোয়েজ গার্ডেন হবে মিউজিয়াম৷ এর অর্থ হল, ওই প্রাসাদের বর্তমান বাসিন্দা শশীকলাকে উচ্ছেদ করা৷ মহারাষ্ট্র থেকে চেন্নাই ফেরার সময় প্রোটোকল মেনে রাজ্যপালকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরেও গিয়েছিলেন তদারকি মুখ্যমন্ত্রী৷

এদিকে, শশীকলা পরিষদীয় দলকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে তৎপর৷ সূত্রের খবর, ১৩৪ জন বিধায়কের মধ্যে ১৩১ জনকে একটি হোটেলে ‘বন্দি’ করে রাখা হয়েছে৷ তাঁরা যাতে পন্নিরসেলভমের সঙ্গে যোগাযোগ না করতে পারে, তার জন্য তাঁদের মোবাইল ফোনও কেড়ে নেওয়া হয়েছে৷ রাজ্যপাল শশীকলাকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ না জানানো পর্যন্ত তাঁদের নাকি এই ভাবেই আটকে থাকতে হবে৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement