সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রয়াত সাহারা গ্রুপের কর্ণধার সুব্রত রায়। দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। মুম্বইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানেই মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বুধবার লখনউয়ের সাহারা শহরে নিয়ে যাওয়া হবে দেহ। সেখানেই জানানো হবে শেষ শ্রদ্ধা।
১৯৪৮ সালের ১০ জুন, বিহারের আরারিয়া গ্রামে জন্ম। উত্তর প্রদেশের গোরক্ষপুরের গভর্নমেন্ট টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। তার পর ব্যবসায় হাতেখড়ি। তাঁর হাত ধরে ১৯৭৮ সালে সাহারা ইন্ডিয়া পরিবারের পথচলা শুরু। ক্রমশ শাখা প্রশাখায় বাড়তে থাকে ব্যবসা। ১৯৯২ সালে হিন্দি ভাষার সংবাদপত্র ‘রাষ্ট্রীয় সাহারা’ দিয়ে মিডিয়া ব্যবসায় প্রবেশ। এর পর ‘সাহারা টিভি’র আত্মপ্রকাশ। সময়টা ২০০০ সাল। ২০০৩ সালে নাম বদলে হয় ‘সাহারা ওয়ান’। তাঁর ব্যবসায়িক সাফল্য নজরকাড়া।
দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ব্যবসায়ী পা রাখেন বিদেশেও। সেখানেও ‘সাম্রাজ্য’ স্থাপন। লন্ডনের গ্রসভেনর হাউজ হোটেল এবং নিউ ইয়র্কের প্লাজা হোটেল অধিগ্রহণ করেন। কর্মী সংখ্যার নিরিখে ভারতীয় রেলের পর সাহারা ইন্ডিয়া। কর্মীসংখ্যা ১২ লক্ষ। ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম কর্মসংস্থানের মাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করে টাইম ম্যাগাজিন। ব্যবসায়িক সাফল্যের মাঝেও আইনি জটিলতায় পড়তে হয় সুব্রত রায়কে। চিটফান্ড সংস্থা তৈরি করে বিপুল টাকা তছরুপের অভিযোগ ওঠে। জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। SEBI-র সঙ্গে জয়েন্ট রিফান্ড অ্যাকাউন্ট তৈরির নির্দেশ দেয় আদালত। সেই নিয়ে SEBI-র সঙ্গে দীর্ঘ আইনি লড়াই। তিহাড় জেলে ঠাঁই হয় ব্যবসায়ীর। পরে যদিও প্যারোলে মুক্তি পান। এত কিছুর পরেও নতুন উদ্যোগ নিতে পিছপা হননি। শেষ জীবনে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির ব্যবসা দেখতেন তিনি।
সেই বিখ্যাত সাহারা ইন্ডিয়া পরিবারই হারাল ‘সাহারা’। সাহারা ইন্ডিয়া পরিবার বিবৃতি জারি করে। বলা হয়, “অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে সাহারা ইন্ডিয়া পরিবার সুব্রত রায়ের প্রয়াণের খবর জানাচ্ছে। একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ, অনেকের কাছে ছিলেন অনুপ্রেরণা। আজ রাত ১০টা ৩০ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। দীর্ঘদিন হাইপারটেনশন, ডায়াবিটিস এবং মেটাস্টেটিক ক্যানসারে ভুগছিলেন। এদিন হৃদরোগে মৃত্যু হয়। সুব্রত রায়কে হারানোর যন্ত্রণায় শোকস্তব্ধ সাহারা ইন্ডিয়া পরিবার।” বুধবার শেষকৃত্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.