সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ইস্যুতে বছরের শেষদিনেও সরগরম জাতীয় রাজনীতি। আইন না জেনেই বিক্ষোভকারীরা আন্দোলন করছেন, হাতে পাথর তুলে নিচ্ছেন, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করছেন। এমনই অভিযোগে সরব গেরুয়া শিবির। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিজেপির মন্ত্রীরাও বিক্ষোভ প্রশমিত করতে ছাত্র-যুবসমাজকে সংযত থাকার বার্তা দিচ্ছেন। এই আইনের পিছনে কোনও অসৎ উদ্দেশ্য নেই তা জনগণকে বোঝাতে আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব ‘সদগুরু’র শরণাপন্ন হয়েছেন মোদি। সদগুরুর একটি ভিডিও তিনি দেখার জন্য অনুরোধ করেছেন দেশবাসীকে। আর তাতেই বাধল গোল। নয়া আইন পড়েই দেখেননি সদগুরু। অথচ এই আইনের উপকারিতা সম্পর্কে জ্ঞান দিচ্ছেন সবাইকে।
সোমবার সদগুরু জাগ্গি বাসুদেবের একটি ভিডিও টুইট করেন প্রধানমন্ত্রী। আর তাতে লেখেন, ‘সদগুরু জলের মতো সিএএ ব্যাখ্যা করেছেন, শুনে দেখুন।’ দেশের মানুষকে আইন বোঝাতে আধ্যাত্মিক গুরুর শরণাপন্ন হয়েছেন মোদি, ঠিক যেভাবে নোটবন্দির সময় তিনি অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মাঠে নামিয়েছিলেন গুণাগুণ ব্যাখ্যা করার জন্য। এবারও বিরোধীরা এর সমালোচনা করেছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যার কথা শুনতে বলছেন, তিনি তো নিজেই আইন পড়ে দেখেননি। ২০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে ভিডিওয় সদগুরু নাগরিকত্ব আইনের উপকারিতা ব্যাখ্যা করেছেন। তবে শুরুতেই তিনি বলছেন, ‘আমি পুরো আইন পড়িনি। সংবাদপত্রে যা লেখালেখি হয়েছে সেগুলো পড়েছি।’ তারপর তিনি বলছেন, ‘এই আইন সব দেশেই রয়েছে। এই আইনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।’
একইসঙ্গে দেশের ছাত্রসমাজকেও কটাক্ষ করেছেন সদগুরু। বলেছেন, ‘সবাই বলছে, পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পড়েছে। কিন্তু পড়ুয়ারা পাথর খনির শ্রমিকের মতো আচরণ করছে। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়ছে।’ এর পালটা হিসাবে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেছেন, ‘পড়ুয়ারা শিক্ষিত। তাঁরা পড়ে দেখেছেন, কোনটা ঠিক আর কোনটা না। এবার মিথ্যা প্রচারের অভিযান শুরু হবে।’ আইনের প্রতিবাদে গোটা দেশজুড়ে বিক্ষোভের আগুন জ্বলেছে। বিক্ষোভাকারীদের উপর গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছে পুলিশ। শুধু উত্তরপ্রদেশেই ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। কিন্তু সদগুরুর দাবি, পুলিশ সংযম দেখিয়েছে। নাহলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ত। পুলিশের লাঠিচার্জের সমর্থন করে তাঁর মন্তব্য, ‘ভিড়ের মধ্যে একজন পাথর ছুঁড়েছে, অন্যজন ছোঁড়েনি। কিন্তু পুলিশের হাতে দুজনই মার খাবে।’ উল্লেখ্যে, অমিত শাহও যুবসমাজকে এই ভিডিও দেখার পরামর্শ দিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.