সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মনোনীত সাংসদ। কিন্তু রাজ্যসভার অলিন্দে তাঁকে বিশেষ দেখা যায় না। ময়দানে-যতটাই সড়গড়, রাজনীতির ক্রিজে ততটাই জড়তা। শচীন তেণ্ডুলকরের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তা খারিজ করেই ভারতরত্ন সাংসদ পৌঁছেছিলেন রাজ্যসভায়। বৃহস্পতিবার কথা বলারও কথা ছিল তাঁর। কিন্তু বিরোধীদের হই-হট্টগোলে তা আর হয়ে উঠল না।
[ 2G কেলেঙ্কারি নিয়ে মুখ খুললেন মনমোহন, রায়কে স্বাগত কংগ্রেসের ]
এদিন কথা বলার জন্য শচীন যখন উঠে দাঁড়ান, কক্ষে তখন তুমল হইচই। কংগ্রেস সাসংদের আক্রমণের নিশানায় তখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গুজরাট নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ ছিল যে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং পাকিস্তানের সঙ্গে গোপনে বৈঠকে করেছেন। যা ষড়যন্ত্রেরই শামিল। আদতে যা ছিল সৌজন্য সাক্ষাৎ। এ নিয়ে ভোটের আসরে তুমুল হট্টগোল হয়। সে আঁচ গিয়ে লাগে সংসদেও। এ অবশ্য প্রত্যাশিতই ছিল। কংগ্রেস এ নিয়ে সংসদ তুলকালাম করবে তা যেন জানতেনই বাকিরা। কিন্তু এই হট্টগোলের মধ্যে দাঁড়িয়ে রীতিমতো থতমত খেয়ে গেলেন শচীন। এ আসরে তিনি নতুন। প্রথমবার বক্তব্য রাখার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তা আর হয়ে উঠল না। বিরোধীরা তখন এই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীকে রাজ্যসভায় হাজির হওযার দাবি জানাচ্ছে। স্পিকার তথা উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু বহুবার তাঁদের থামানোর চেষ্টা করেন। বলেন, যে এই বিরোধিতা নথিভুক্ত হচ্ছে না। শচীন দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁকে বলতে দেওয়া হোক। তিনি এও জানান যে, শচীন একজন ভারতরত্ন। ক্রিকেট মাঠে এমন কৃতিত্বের অধিকারী যা গোটা বিশ্বে কারও নেই। তাঁকে ন্যূনতম সম্মানটুকু দেওয়া হোক। প্রথমবার বলতে উঠেছেন। তাঁকে অন্তত তাঁর মতটুকু প্রকাশের সুযোগ দেওয়া হোক। কিন্তু রাজনীতির ময়দান বড় বিচিত্র। বিরোধিতার বাউন্সারের জেরে শেষমেশ পরাস্ত হতে হয় তাঁকে। একসময় বিরক্ত নায়ডু লাইভ টেলিকাস্ট থামিয়ে দেন। অধিবেশন মুলতবিও করে দেন। ফলে প্রথমবার বক্তৃতা রাখতে উঠেও রাখা হল না শচীনের।
[ টিভিতে কন্ডোমের বিজ্ঞাপন নয় কেন, কেন্দ্রের কাছে জবাব তলব হাই কোর্টের ]
সংসদে খুব কমই দেখা যায় শচীনকে। এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন সমাজবাদী পার্টির নেতা নরেশ আগরওয়াল। তাঁর দাবি ছিল, সেলেবরা যদি অন্য দুনিয়াতেই ব্যস্ত থাকেন। তারা যদি রাজনীতিতে আগ্রহীই না হন, তাহলে তাঁদের মনোনীত করাই বা হয়েছে কেন? একই অভিযোগ ছিল রেখার বিরুদ্ধেও। গত আগস্টে এই সমালোচনা শুরু হওয়ার দু’দিন পরেই সংসদে হাজিরা দিয়েছিলেন শচীন। তারপর এলেন এই বর্ষশেষে। কিন্তু অভিজ্ঞতা সুখের হল না। এ নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সমাজবাদী পার্টির সাংসদ তথা অভিনেত্রী জয়া বচ্চনও।
He (#SachinTendulkar) has earned name for India at the world stage, it is a matter of shame that he was not allowed to speak even when everyone knew it was on today’s agenda. Are only politicians allowed to speak?: Jaya Bachchan, Rajya Sabha MP pic.twitter.com/NMRMHhdl5E
— ANI (@ANI) December 21, 2017
তবে সংসদে হাজিরা না দিলেও সাসংদ শচীন কিন্তু সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে চলেছেন। এমপি ল্যাডের টাকা খরচ করছেন জনকল্যাণে। সাংসদ আদর্শ গ্রাম যোজনার আওতায় একটি গ্রাম দত্তকও নিয়েছেন তিনি। এর আগে তিনি এপর একটি গ্রামও দত্তক নিয়েছিলেন। বরাবরই নীরবে কাজ করতে ভালবাসেন। ক্রিকেটের ময়দানেও তাঁকে কেউ খুব একটা রাগতে দেখেননি। বহিঃপ্রকাশ কম। কিন্তু ভিতরে ভিতরে তেতে উঠতেন। আর জবাব দিতেন ব্যাটে। সাংসদ হিসেবেও নানা সমালোচনার মুখে তাঁকে পড়তে হয়। আজ হয়তো কথা বলতে পারলেন না। কিন্তু তাঁর কাজই যেন সবকিছুর জবাব। অনেক না বলা কথাও প্রকাশ হচ্ছে তাঁর কাজেই।
[ বাবা রামদেবের পতঞ্জলির কারণে দূষিত হচ্ছে গঙ্গা, জানাল ক্যাগ রিপোর্ট ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.