সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোপ পড়েছিল গালিবের উপর। পাঠ্যপুস্তকে অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছিল তাঁর কবিতা। এবার কোপ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরেও। দেশের জাতীয় সংগীত রচয়িতার ভাবনার কোনও দরকার নেই পাঠ্যপুস্তকে, এমনটাই মত রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের।
[ ‘সরকার-বিরোধী নই’, মুচলেকা দিলে তবেই মিলবে হস্টেলে থাকার ছাড়পত্র ]
সংঘ অনুমোদিত ‘শিক্ষা সংস্কৃতি উত্থান ন্যাস’ এই প্রস্তাব রেখেছে ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং বা এনসিইআরটি-র কাছে। এর আগেই পাঠ্যপুস্তক থেকে ইংরেজি, উর্দু শব্দ বাদ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন আরএসএসের তাত্ত্বিক নেতা দীননাথ বাত্রা। তাঁর দাবি ছিল, হিন্দি পাঠ্যপুস্তকে উর্দু ও ইংরেজি শব্দের বাড়বাড়ন্ত বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পড়ুয়ারা হিন্দি পড়ায় উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে এর জেরে। আর তাই গালিবের কবিতা অপ্রয়োজনীয় বলে বাদ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। এবার কোপ রবীন্দ্রনাথে। পাঁচ পাতার যে প্রস্তাবনা জমা দেওয়া হয়েছে, সেখানে রবীন্দ্রভাবনাকেও গুরুত্বহীন দাবি করা হয়েছে।
[ সেনার আত্মত্যাগ স্মরণ করাতে JNU ক্যাম্পাসে কামান বসানোর দাবি উপাচার্যর ]
ন্যাসের দাবি, বিভিন্ন শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে এমন কিছু কথা আছে যা অপ্রয়োজনীয়। কেননা সংগঠনের মনে হয়েছে, তা ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক, একপেশে ও ভিত্তিহীন। এই তালিকায় আছে ২০০২-এর গুজরাট দাঙ্গার কথাও। ন্যাসের সেক্রেটারি অতুল কোঠারির মতে, বাচ্চাদের দাঙ্গার কথা শিখিয়ে কী লাভ? বরং রানা প্রতাপ, শিবাজি মহারাজের মতো মহান মানুষদের জীবনের কথা শেখানো উচিত। গুজরাট দাঙ্গায় প্রায় ২০০০ মুসলিম ধর্মাবলম্বীর মৃত্যু হয়েছিল, এহেন তথ্যে ঘোর আপত্তি ন্যাসের। এবং তা বাদ দেওয়ারই সুপারিশ করা হয়েছে। রাম মন্দির নির্মাণের সঙ্গে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির যোগ আছে এরকম কোনও কথা থাকাও আপত্তিজনক। কিছু হিন্দুরা বিশ্বাস করেন যে রাম জন্মভূমিতেই বাবরি মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল, এরকম বিবৃতিতেও ঘোর আপত্তি। সেইসঙ্গে বাদ দিতে হবে রবীন্দ্রনাথের ভাবনাও। কেননা ন্যাসের দাবি, জাতীয়তাবাদ ও মানবতাবাদের মধ্যে ফাটল দেখা দিচ্ছে রবীন্দ্রভাবনার ফলে। ইতিহাস, পলিটিক্যাল সায়েন্সের এরকম বহু তথ্য ন্যাসের চোখে একপেশে, তাই বাতিল করার দাবি উঠেছে।
[ ‘গো-মাংস’ বহনের অপরাধ, ট্রাক জ্বালাল উন্মত্ত জনতা ]
প্রায় পাঁচ পাতার ওই সুপারিশ এনসিইআরটি-র কাছে জমা দিয়েছে সংগঠনটি। সেইমতোই বই সংশোধন করা হবে বলেই বিশ্বাস ন্যাসের। এদিকে এহেন সুপারিশ ঘিরে শোরগোল পড়েছে গোটা দেশে। নিজেদের ইচ্ছে ও মতাদর্শ অনুযায়ী ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে চালিত করতে চাইছে সংঘ, এই অভিযোগে সরব অনেকেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.