নব্যেন্দু হাজরা: একই জায়গায় কাজ করতে করতে মেদ জমেছে অনেকের। দুর্নীতি করার প্রবণতাও বাড়ছে বলে অভিযোগ ওঠে মাঝেমধ্যেই। তাই আচমকাই বদলির নির্দেশ। একই ডিভিশনে ১০ বছর চাকরি হয়ে গেলে এবার বদলি হতে হবে আরপিএফকে। কোনও অনুরোধ উপরোধেই কাজ হবে না। পরিবার নিয়ে সোজা যেতে হবে অন্যত্র। রেলপুলিশের নয়া ডিজি-র বদলির নির্দেশিকা ঘিরে তাই এখন ত্রাহি ত্রাহি রব আরপিএফের অন্দরে।
দেশের প্রতি ডিভিশনের রেলপুলিশের উঁচু থেকে সাধারণ, সব কর্মীই পড়বেন এই বদলির আওতায়। অর্থাৎ পূর্ব রেলের আরপিএফকে চলে যেতে হতে পারে উত্তর-পূর্ব রেলে। আবার মেট্রোর আরপিএফ-কে বদলির জেরে যেতে হতে পারে পশ্চিম রেলে। ফলে বদলির নির্দেশিকায় একেবারে শিরে সংক্রান্তি অবস্থা রেলের উর্দিধারীদের। তাঁদের দাবি, এভাবে আচমকা বদলি করা হলে তো মুশকিল। চেনা পরিবেশ ছেড়ে গোটা সংসার নিয়ে অন্যত্র যাওয়া খুব সমস্যার। ফলে তাঁদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন তাঁরা। নতুন ডিজি এ অগ্নিহোত্রী দায়িত্ব নিয়েছেন মাসখানেক হয়েছে। তারমধ্যেই নয়া এই অর্ডার। তা ঘিরেই এখন জোর জল্পনা আরপিএফের কর্মী থেকে আধিকারিক সকলের মধ্যে। নির্দেশিকায় লেখা আছে, যাদের চাকরি টানা ১০ বছর একই ডিভিশনে হয়ে গিয়েছে, তাঁদের বদলি হতে হবে। আর যাঁরা একবার বদলি হয়ে ফের পুরনো ডিভিশনে ফেরত এসেছেন, তাঁদের ১৫ বছর মেয়াদকাল হয়ে গেলে বদলি হতে হবে। ছোট কয়েক লাইনের এই নির্দেশিকা। তা ঘিরেই এখন রেল পুলিশের একাংশ এখন ক্ষোভে ফুঁসছেন। তাঁদের দাবি, প্রত্যেকের পরিবার আছে। ছেলে-মেয়েরা স্কুল-কলেজে পড়ে। রাতারাতি বদলি হলে কী হবে? আগেও বদলির অর্ডার হত। কিন্তু তা নানাভাবে আটকানো হত। এবার তেমন না হলে খুব সমস্যা।
[আইসিএসই-আইএসসিতে শুরু হচ্ছে কম্পার্টমেন্টাল পদ্ধতি, সিদ্ধান্ত বোর্ডের]
যে কোনও সময়ই বদলি করা হতে পারে, এই শর্তেই চাকরিতে ঢোকেন রেল পুলিশরা। কিন্তু তারপরও নানা অজুহাত দেখিয়ে অনেকেই আটকে দেন অন্যত্র বদলির গেরো। তবে এবারের নির্দেশিকায় সেই সম্ভাবনা কম বলেই মনে করছেন তাঁরা। কারণ আগের ডিজি যে নির্দেশ দিয়েছিলেন তাতে লেখা ছিল, যাঁদের ১০ বছরের চাকরি হয়ে গিয়েছে, তাঁরা ১৫ বছর যখন পার করবেন, তখন বদলি হবেন। অর্থাৎ বদলির বছর কয়েক আগেই সেকথা তাঁরা জানতে পেরে যাচ্ছিলেন। সেই মতো তৈরি হচ্ছিলেন। কিংবা লোকজন ধরে বদলি আটকাতেন। কিন্তু নয়া ডিজি আগের নির্দেশিকার বদলে নয়া নির্দেশিকা দেন। রেল বোর্ড এই বদলির ক্ষমতা ডিজি-র হাতে দিয়ে রেখেছেন। ফলে যখন তখন তিনি নির্দেশিকা দিতে পারেন। এবারও তাই হয়েছে। আরপিএফে কর্মরতদের দাবি, বাইরে তাঁদের থাকার জন্য যে কুপ দেওয়া হয় তার মান অত্যন্ত খারাপ। থাকার অযোগ্য। ২০ জন পিছু একটি কুপ। তাছাড়া তাঁদের পরিবার যদি বাইরে থাকে, সেক্ষেত্রে কাজেও মন বসাতে পারবেন না অনেকে। ফলে লাভ কিছুই হবে না। রেলপুলিশের এক আধিকারিক অবশ্য জানান, বদলি হওয়া তো চাকরির নিয়মেই রয়েছে। এক জায়গায় দীর্ঘদিন চাকরি করা যে কেউই বদলি হতে চান না। এক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে। কিন্তু বোর্ড যদি মনে করে সেক্ষেত্রে বদলি তো হতেই হবে। বেশিরভাগ চাকরিতেই বদলি হয়। আরপিএফ তো আলাদা নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.