সুব্রত বিশ্বাস: ছুটিতে যাওয়ার আগে এখন একগুচ্ছ প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে আরপিএফ বিভাগের কর্মীদের। ইন্সপেক্টর, এসআই ও এএসআইদের কাছে এই উত্তরদান বাধ্যতামূলক করে নির্দেশ জারি করেছে উত্তর রেলের মোরাদাবাদ ডিভিশনের আরপিএফের সিনিয়র কমান্ড্যান্ট। ১৫ নভেম্বর জারি করা এই নির্দেশে ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে আরপিএফ মহলে। এক শ্রেণির আরপিএফ কর্তার মতে, ছুটি কর্মচারীর অধিকারের মধ্যে পড়ে। সেই ছুটি নিতে গিয়ে একসঙ্গে প্রায় কুড়িটি বিষয়ের উত্তর দাখিল করতে হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই রেলের আইনে। তবে কেন এই আইন জারি করছে আরপিএফ বিভাগ, প্রশ্ন উঠছে।
উত্তর রেলের মোরাদাবাদ ডিভিশনের আরপিএফ-এর তরফে জারি করা নির্দেশে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ছুটি নিতে গেলে ইন্সপেক্টর, এসআই ও এএসআই আধিকারিককে জানাতে হবে গত দু’মাসের কাজের ফিরিস্তি। যা ছুটির আবেদনের সঙ্গে দিতে হবে। এরপর উত্তরের উপর নির্ভর করবে, আবেদনকারী ছুটি মঞ্জুর হবে কি না।
কাজের খতিয়ান হিসেবে তাঁকে জানাতে হবে, গত দু’মাসে কত বেআইনি হকার ধরেছেন, কতগুলি মোবাইল চোর, ছিনতাইবাজ, চেনপুলিং ধরা হয়েছে, ওই সংক্রান্ত মামলা দায়ের হয়েছে কটা, কতগুলি টিকিট দালাল ধরেছে, ওই সংক্রান্ত মামলা করা হয়েছে ক’টি ক্ষেত্রে, সমাজবিরোধী ধৃতের সংখ্যা, রেল চুরিতে আটক করা হয়েছে ক’জনকে, সিসিটিভির ডিউটিতে থাকলে সিসিটিভি দেখে কতগুলি অপরাধ চিহ্নিত করা হয়েছে, মামলা করা হয়েছে ক’টি ক্ষেত্রে, অফিসে ডিউটি করলে ক’টি চিঠির উত্তর তৈরি করেছেন, রেল আইনে মামলা করা হয়েছে কি না? শেষ কবে ছুটি নিয়েছিলেন, ক’দিনের জন্য? সে সময় ওভারস্টে করেছিলেন কি না। ছুটির আবেদনে এই গুচ্ছের উত্তর চাওয়ার অর্থ ছুটি না মঞ্জুর করার এক ফন্দি বলে মনে করেছেন আরপিএফ কর্মীরা।
মোরাদাবাদ আরপিএফের এক কর্তার কথায়, আকছার ছুটি নেন এক শ্রেণির আধিকারিকরা। তাঁদের এই ছুটি নেওয়ার ঠেলায় অপরাধ বাড়ে। কাজ না করে ছুটি চাই — বিষয়টি রুখতে এই পন্থা নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। তবে এই ধরনের রেওয়াজ আদৌ কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা স্পষ্ট হবে কিছুদিনের মধ্যেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.