Advertisement
Advertisement

জঙ্গি হামলায় রোহিঙ্গা-যোগ দেখছেন জম্মুর স্পিকার, বাড়ছে মৃতের সংখ্যা

কেন এখনও নিকেশ করা গেল না জঙ্গিদের, উঠছে প্রশ্ন।

Rohingyas behind army camp terror attack, Says Kashmir speaker
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:February 10, 2018 4:54 pm
  • Updated:February 10, 2018 4:54 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভার স্পিকার কাভিন্দর গুপ্তা ইঙ্গিত দিলেন, শনিবার জম্মুর সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার পিছনে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশের জঙ্গিদের একাংশের প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের সানজওয়ান এলাকায় এদিন সকালে সেনাঘাঁটিতে হামলা চালায় ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত জইশ জঙ্গিরা। স্পিকার বলেন, ‘আমি একটি লাইভ ভিডিওয় দেখলাম, ওই এলাকায় রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিদের বাড়ির ছাদ থেকে সেনাঘাঁটিটি দেখা যাচ্ছিল। ওই তল্লাটে এক কুখ্যাত ড্রাগ মাফিয়া রয়েছে। টাকার বিনিময়ে তারাই জঙ্গিদের থাকার জায়গা দিতে পারে।’ খোদ স্পিকারের মুখে এই কথা শুনে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসনও।

[ভারতীয় রেলে ৬২ হাজারেরও বেশি পদে নিয়োগ, ন্যূনতম বেতন ১৮ হাজার টাকা]

একদিকে যখন হামলাকারী জঙ্গিদের খোঁজে চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ, তখন অন্যদিকে আক্রান্ত সেনা কোর্য়াটার পরিদর্শনে যান স্পিকার। ঘটনাস্থলে গিয়ে বলেন, ‘যেভাবে এ দেশে বেআইনিভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে আমাদেরই সার্বিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।’ কেন্দ্রের কাছে তিনি আবেদন জানিয়েছে, এ দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের দ্রুতই বিতাড়িত করতে। এই বিষয়ে অবশ্য কেন্দ্রও উদ্যোগী হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর বিধান পরিষদের সদস্য বিজেপি নেতা বিক্রম রণধাওয়া বলেন, ‘আমি দিনের পর দিন এই ইস্যুতে সরব হয়েছি। সকলের চোখের আড়ালে জম্মুতে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গারা ঘাঁটি গাড়ছে। তাঁদের সংখ্যা বাড়ছে। এখনই না থামানো হলে কয়েকদিন পর তারা জঙ্গি সংগঠনের মতো আচরণ করবে।’

Advertisement

আজ ভোর ৪টে ৫৫ মিনিট নাগাদ চার থেকে পাঁচজন সন্দেহভাজনকে সেনা ক্যাম্পের সেন্ট্রি বাঙ্কারে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে তাড়া করে সেনা। সঙ্গে সঙ্গে গুলিবর্ষণ শুরু করে জঙ্গিরা। জঙ্গিদের লক্ষ্য ছিল সেনাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের খতম করা। সেই সঙ্গে তাঁদের পণবন্দিও করতে চাইছিল জঙ্গিরা। হামলার প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠে পালটা জবাব দিতে থাকে ভারতীয় সেনাও। সেনার পালটা অভিযানে পিছু হটে জঙ্গিরা। পালানোর পথে তারা আচমকাই সেনাকর্মীদের আবাসনে লুকিয়ে পড়ে। আবাসনটি ঘিরে ফেলে সেনা। পুলিশ ও সেনা মনে করছে, এখান থেকে যে বেঁচে ফেরা যাবে না, সে কথা বিলক্ষণ জানে জঙ্গিরা। তাদের গায়ে বিস্ফোরক বোঝাই জ্যাকেট রয়েছে বলে অনুমান পুলিশের। জঙ্গিরা নিজেদের উড়িয়ে গোটা কমপ্লেক্সটাকেই ধ্বংস করতে চায়, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে জঙ্গি-নিধন অভিযান। তবে আচমকা জঙ্গি হামলায় এদিন ২ সেনা জওয়ান শহিদ ও সেনাকর্মীদের কন্যা-সহ মোট ৬ জন আহত হয়েছেন। আপাতত কমপ্লেক্সের ভিতরে প্রতিটি বাড়িতে ঢুকে চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে সেনা। আবাসনের ৫০০ মিটারের মধ্যেই অবস্থিত একটি স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আহত এক কর্নেল ও তাঁর মেয়েকে ভারতীয় বায়ুসেনার প্যারা কমান্ডোরা ‘এয়ারলিফট’ করে জম্মু থেকে উধমপুরে নিয়ে গিয়েছেন।

[উরির কায়দায় জম্মুর সেনাঘাঁটিতে হামলা ৪ জইশ জঙ্গির, শহিদ ২ জওয়ান]

এদিনদের জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। টুইটারে তিনি লিখেছেন, মৃতদের আত্মার শান্তি কামনা করে তাঁদের পরিবারের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা রইল। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাও এই হামলাকে ধিক্কার জানিয়েছেন। তিনি এও আশা করেন, সেনার পালটা অভিযানে যেন কোনও নিরীহ মানুষের ক্ষতি না হয়। তবে একটা অভিযোগ তুলছে সব পক্ষই। ২০১৩-য় সংসদে হামলায় মূল অভিযুক্ত আফজল গুরুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী ৯ ফেব্রুয়ারি। এই দিনটিতে উপত্যকায় হামলা চালাতে পারে জঙ্গিরা, এমন আশঙ্কা কিন্তু কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা বেশ কিছুদিন আগেই করেন। তা সত্ত্বেও কেন রাজ্যে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হল না, এই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং জঙ্গিদমন অভিযানে নেতৃত্বপ্রদানকারী অফিসারদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন টেলিফোনে। যদিও অপারেশন এখনও চলছে বলে তিনি এই সংবেদনশীল বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement