সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরাকে বারাণসীর বিশ্বনাথ মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি দিলে সনাতন হিন্দুধর্মের মূল্যবোধে ধাক্কা লাগবে। তাই তাঁকে মন্দিরে প্রবেশে অনুমতি দেওয়া যাবে না। এমনই দাবি জানিয়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও বারাণসীর জেলাশাসককে চিঠি লিখল আইনজীবীদের একটি দল। তাঁদের এই বিরোধিতায় নেতৃত্ব দিয়েছেন কমলেশচন্দ্র ত্রিপাঠী নামে এক আইনজীবী। তাঁদের দাবি, বিবাহসূত্রে প্রিয়াঙ্কা খ্রিস্টান। তাই বিশ্বনাথ মন্দিরে তাঁর প্রবেশাধিকার নেই।
গুজরাটের পর ভোট প্রচারের জন্য উত্তরপ্রদেশকেই বেছে নেন কংগ্রেসের নব্য সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা। সোমবার গঙ্গাপুজোর পর নদীপথে প্রচার শুরু করেন রাজীব তনয়া। তাঁকে দেখতে উত্তরপ্রদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে সাড়া পড়ে যায়। গঙ্গার তীরে একাধিক জায়গায় উপচে পড়ে সাধারণ মানুষের ভিড়। সকলেরই হাতে তেরঙ্গা। মুখে জয়ধ্বনি। কংগ্রেসের প্রচার তরণী লক্ষ্য করে ফুল ছুঁড়তে দেখা যায় অনেককে। যোগী-রাজ্যে প্রিয়াঙ্কার এই বিপুল জনসমর্থন কংগ্রেস নেতারাও আশা করেননি বলে দলীয় সূত্রে জানানো হয়।
[নির্বাচনী আধিকারিকের পর আওয়ামি লিগ নেতা, রাঙামাটিতে ফের খুন ৩]
এরপরই প্রিয়াঙ্কার ‘অশ্বমেধের ঘোড়া’ থামাতে উদ্যোগী হয় বিজেপি। বিজেপিপন্থী আইনজীবীদের তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানানো হয়, বিধর্মী প্রবেশে ধাক্কা লাগবে সনাতন হিন্দুধর্মের মূল্যবোধে। যা হতে দেওয়া যায় না। এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত না নিলেও প্রিয়াঙ্কার বিশ্বনাথদর্শনের পথে প্রশ্নচিহ্ন ঝুলে রইল।
[লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে কংগ্রেসের দ্বারস্থ ‘দস্যু সর্দার’]
জন্মসূত্রে পার্সি ফিরোজ গান্ধীর দৌহিত্রী প্রিয়াঙ্কা। যদিও ঠাকুরমা ইন্দিরা গান্ধী কাশ্মীরি পণ্ডিত পরিবারের সন্তান। মা সোনিয়া গান্ধী ইতালীয় খ্রিস্টান। স্বামী রবার্ট বঢ়রাও খ্রিস্টান। যদিও প্রিয়াঙ্কা নিজে বৌদ্ধ ধর্মাচারণ করেন। সব মিলিয়ে সর্বধর্মের সমন্বয় হয়েছে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের জীবনে। আর এখানেই আপত্তি উত্তরপ্রদেশের গোঁড়া হিন্দুদের। তাই ভোটযুদ্ধে সফল হওয়ার জন্য তাঁর বিশ্বনাথ মন্দিরে প্রার্থনা জানানোর পথ বন্ধ করতে আইনি পদক্ষেপ করেছেন তাঁরা। এখন শুধু সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের অপেক্ষা। সব মিলিয়ে প্রিয়াঙ্কার উত্তরপ্রদেশ সফর এখন রাজনীতির গণ্ডি ছাড়িয়ে ধর্মীয় বিধিনিষেধের গণ্ডিতে পা রেখেছে।
[উত্তরপ্রদেশের সাফল্য নিয়ে যোগীর দাবি মিথ্যে, মন্তব্য প্রিয়াঙ্কার]
এই টানাপোড়েনের মাঝেই আজ উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরে অবস্থিত বিন্ধ্যবাসিনী দেবীর মন্দিরে গিয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কা। তিনি যখন মন্দিরে ঢুকছেন তখন মন্দিরের বাইরে থাকা কিছু মানুষ হঠাৎ হর হর মোদি, ঘর ঘর মোদি বলে স্লোগান তুলতে আরম্ভ করেন। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী মুর্দাবাদ বলে স্লোগানও দিতে থাকেন কেউ কেউ। এর ফলে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়তে হয় প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে। বাইরে থাকা ওই ভিড়ে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলাদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.