সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউপিএ জমানায় তৈরি হওয়া তথ্যের অধিকার আইনে এবার পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নিল কেন্দ্র। সোমবার লোকসভায় পাশ হয়ে গেল তথ্যের অধিকার আইন বা RTI আইনের সংশোধনী বিল। যদিও বিরোধীদের দাবি, RTI আইনে সংশোধনী এনে আসলে তথ্যের অধিকার আইনকেই লঘু করে দিতে চাইছে সরকার। নতুন নিয়মের ফলে তথ্য জানার অধিকারে স্বচ্ছতা বজায় থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হচ্ছে এখনই। এই বিলকে ‘RTI ধ্বংসাত্মক বিল’ বলেও দাবি করছেন বিরোধী সাংসদদের একাংশ।
কিন্তু কী আছে এই সংশোধনী বিলে? প্রস্তাবিত সংশোধনী বিলে বলা হয়েছে, রাজ্য ও কেন্দ্রের তথ্য কমিশনারের বেতন এবার নিয়ন্ত্রণ করবে সরকার। বর্তমান তথ্য কমিশনারের মেয়াদকাল পাঁচ বছর। তিনি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বেতন পান। কিন্তু, বিলটি পাশ হয়ে গেলে তথ্য কমিশনারের মেয়াদকাল সরকার ইচ্ছামতো বদলে দিতে পারবে। এমনকী তাঁর বেতনও নির্দিষ্ট থাকবে না। তা নিয়ন্ত্রিত করতে পারবে সরকার। আসলে, RTI-সংক্রান্ত যাবতীয় অভিযোগ, এবং তথ্য জানানোর প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে তথ্য কমিশন। বিরোধীদের অভিযোগ, মেয়াদ এবং বেতন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পরোক্ষে তথ্য কমিশনারকেই নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে কেন্দ্র। তথ্য কমিশনারকে নিয়ন্ত্রণ করা মানেই পরোক্ষে তথ্য কমিশনকে নিয়ন্ত্রণ করা। তথ্য কমিশন একবার সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে গেলে সরকার বিরোধী কোনও তথ্যই প্রকাশ্যে আসবে না বলে আশঙ্কা বিরোধীদের। এর ফলে লঘু হয়ে যেতে পারে আরটিআই আইনটিই। যদিও সরকারের তরফে বলা হয়, তথ্য কমিশনারের কোনও ক্ষমতা কমানো হচ্ছে না, শুধুমাত্র কতগুলি বিশৃঙ্খলা ঠিক করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং বলেন, “আমরা হস্তক্ষেপ করছি না, এবং প্রতিষ্ঠানের স্বশাসনে প্রভাব পড়ার মতো কিছু করা হবে না”।
বিরোধী শিবির বিলটিকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর আবেদন জানিয়েছে। সেইসঙ্গে কিছু সংশোধনী প্রস্তাবও আনা হয়েছে। কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের অভিযোগ, এই বিল পাশ হওয়ার ফলে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় অস্ত্র নষ্ট হয়ে যাবে। RTI-সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে দিল্লির রাস্তায় নেমেছেন আরটিআই কর্মীরা। এদিকে, লোকসভায় পাশ হয়ে গেলেও রাজ্যসভায় এখনও RTI-সংশোধনী বিল পেশ হয়নি। বিল পেশ হলে তাতে বাধা আসতে পারে। রাজ্যসভায় এখনও সংখ্যালঘু সরকার পক্ষ। তবে, সম্প্রতি বেশ কিছু সাংসদকে নিজেদের দলে টেনে নিয়েছে গেরুয়া শিবির। সেক্ষেত্রে বিলটি রাজ্যসভাতেও পাশ হয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.